নেত্রকোনা ০৪:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছায়া রানীর সংসার চলে চা-পান বিক্রি করে

  • আপডেট : ১২:২১:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩
  • ১০৪

পূর্বকন্ঠ ডেস্ক: নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়, জনসেবা করার জন্যই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন ছায়া রানী রায় নামে এক মধ্যবয়সি নারী। পরপর দুবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েও এখনো তার জীবন-জীবিকা চলে দোকানে চা ও পান বানিয়ে এবং সবজি বিক্রি করে। সততার সঙ্গে জনসেবা করতে পেরে তৃপ্ত এই ইউপি সদস্য। এমন একজন জনপ্রতিনিধি পেয়ে খুশি এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। ,

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের উত্তর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ছায়া রানী রায়। পরিবারের আহার জোগাতে স্বামী অমল চন্দ্র রায়সহ ৩২ বছর ধরে চা ও পানের দোকান চালান সদর উপজেলার পুরাতন গাবুড়ার বাজারে। একই দোকানে বিক্রি করেন সবজিও। ,

ছায়া রানীর চায়ের দোকানে সারাদিন চা পান করতে আসেন এলাকার মানুষ। এ সময় অনেকের অনেক সমস্যাই তার কানে আসে। সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের উপকারে কাজ করে আসছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে এলাকার মানুষ চাওয়ায় ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে শেখপুরা ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে আবার একই এলাকার মহিলা সদস্য নির্বাচিত হন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েও পরিবর্তন হয়নি তার ভাগ্যের। তাইতো এখনো চায়ের কাপ আর সবজির দোকানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তার পরিবারের জীবিকা। ছায়া রানী বলেন, তার ৫ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে প্রতিবন্ধী। এরপর দুই ছেলের বিয়ে হয়েছে। দুই ছেলে লেখাপড়া করছে। সবাই একসঙ্গেই আছেন। তিনি বলেন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মাসিক ভাতা হিসাবে পান ৮ হাজার টাকা। এটা দিয়ে তার সংসার চলে না। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করে বাড়তি কোনো আয়ের চিন্তাও করেন না তিনি। যে দোকানটি চালাচ্ছে এটি তার নিজের জমিতে নয়। তাই প্রতি মাসে ভাড়া দিতে হয়। আগে পুরো সময়টা দোকানেই দিতে পারতেন। ইউপি সদস্য হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয় এবং বিভিন্ন মানুষের কাজেও যেতে হয়। এ জন্য এখন পুরো সময় দোকানে দিতে পারেন না। এরপরও জনপ্রতিনিধি হয়ে সততার সঙ্গে থাকতে পেরে নিজেকে তুষ্ট মনে করেন তিনি। ,

তার সততা, নিষ্ঠা ও জনগণের সেবা করার মানসিকতার প্রশংসা করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও। শেখপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, মানুষের যে কোনো সমস্যায় পাশে থাকেন বলেই একজন চায়ের দোকানদার হয়েও ইউপি সদস্য হিসাবে ছায়া রানী জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। মানুষের কল্যাণেই কাজ করে থাকেন তিনি। এমন একজন সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি পেয়ে খুশি এলাকার মানুষও। তথ্য সূত্র: যুগান্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

ছায়া রানীর সংসার চলে চা-পান বিক্রি করে

আপডেট : ১২:২১:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুলাই ২০২৩

পূর্বকন্ঠ ডেস্ক: নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়, জনসেবা করার জন্যই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন ছায়া রানী রায় নামে এক মধ্যবয়সি নারী। পরপর দুবার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েও এখনো তার জীবন-জীবিকা চলে দোকানে চা ও পান বানিয়ে এবং সবজি বিক্রি করে। সততার সঙ্গে জনসেবা করতে পেরে তৃপ্ত এই ইউপি সদস্য। এমন একজন জনপ্রতিনিধি পেয়ে খুশি এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। ,

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৪নং শেখপুরা ইউনিয়নের উত্তর গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ছায়া রানী রায়। পরিবারের আহার জোগাতে স্বামী অমল চন্দ্র রায়সহ ৩২ বছর ধরে চা ও পানের দোকান চালান সদর উপজেলার পুরাতন গাবুড়ার বাজারে। একই দোকানে বিক্রি করেন সবজিও। ,

ছায়া রানীর চায়ের দোকানে সারাদিন চা পান করতে আসেন এলাকার মানুষ। এ সময় অনেকের অনেক সমস্যাই তার কানে আসে। সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের উপকারে কাজ করে আসছেন তিনি। এরই প্রেক্ষিতে এলাকার মানুষ চাওয়ায় ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে শেখপুরা ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে আবার একই এলাকার মহিলা সদস্য নির্বাচিত হন। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েও পরিবর্তন হয়নি তার ভাগ্যের। তাইতো এখনো চায়ের কাপ আর সবজির দোকানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ তার পরিবারের জীবিকা। ছায়া রানী বলেন, তার ৫ ছেলের মধ্যে বড় ছেলে প্রতিবন্ধী। এরপর দুই ছেলের বিয়ে হয়েছে। দুই ছেলে লেখাপড়া করছে। সবাই একসঙ্গেই আছেন। তিনি বলেন, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মাসিক ভাতা হিসাবে পান ৮ হাজার টাকা। এটা দিয়ে তার সংসার চলে না। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করে বাড়তি কোনো আয়ের চিন্তাও করেন না তিনি। যে দোকানটি চালাচ্ছে এটি তার নিজের জমিতে নয়। তাই প্রতি মাসে ভাড়া দিতে হয়। আগে পুরো সময়টা দোকানেই দিতে পারতেন। ইউপি সদস্য হওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হয় এবং বিভিন্ন মানুষের কাজেও যেতে হয়। এ জন্য এখন পুরো সময় দোকানে দিতে পারেন না। এরপরও জনপ্রতিনিধি হয়ে সততার সঙ্গে থাকতে পেরে নিজেকে তুষ্ট মনে করেন তিনি। ,

তার সততা, নিষ্ঠা ও জনগণের সেবা করার মানসিকতার প্রশংসা করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও। শেখপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, মানুষের যে কোনো সমস্যায় পাশে থাকেন বলেই একজন চায়ের দোকানদার হয়েও ইউপি সদস্য হিসাবে ছায়া রানী জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। মানুষের কল্যাণেই কাজ করে থাকেন তিনি। এমন একজন সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি পেয়ে খুশি এলাকার মানুষও। তথ্য সূত্র: যুগান্তর