নেত্রকোনা ১০:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৭৫ ফুট দীর্ঘ কাঠের সেতু, দুইপারের দুর্ভোগ লাঘব

আমলাভাঙা খালের দুপাশে দুই গ্রাম। দক্ষিণপাশে দক্ষিণ কাজির হাওলা, আর উত্তরপাশে পশ্চিম নেতা গ্রাম। এই দুইপারের মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম ছিল একটি বাঁশের সাঁকো। নড়বড়ে সেই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হতো। সাঁকো পার হতে গিয়ে স্কুলপড়ুয়া শিশু কিংবা বয়োবৃদ্ধদের খালে পড়ে যাওয়ার দুর্ঘটনাও ঘটত প্রায়ই।,

অবশেষে সেই দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ওই দুই গ্রামের মানুষের পারাপারের জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে নির্মিত সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় থেকেই সেতু দিয়ে লোকজন চলাচল শুরু হয়।,

তাদের মধ্যে বই-খাতা নিয়ে সেতু পার হচ্ছিলেন পশ্চিম নেতা গ্রামের আব্দুল্লাহ। সে রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আব্দুল্লাহ বলেন, সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে আমি একবার পা পিছলে খালে পড়ে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে কলেজে যেতাম। এখন এই সেতু হওয়ায় মাত্র ১৫ মিনিটে কলেজে যেতে পারব। আমাদের কষ্ট দূর হয়েছে। আশা করি- এখানে একটি পাকা সেতু হবে। ‘তাহলে স্থায়ীভাবে আমাদের কষ্ট দূর হবে।,’

সরেজমিন দেখা গেছে, ১৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে ৪ ফুট প্রস্থের কাঠের এ সেতুটি আকর্ষণীয় করতে লাল-সাদা রঙে সাজানো হয়েছে। সেতুর মাঝপ্রান্তে একটি টং দোকান স্থাপন করা হয়েছে।,

দৃষ্টিনন্দন এ সেতু দেখতে আসা দর্শনার্থী আল আমিন বলেন, পথচারী কিংবা দর্শনার্থীরা এখানে চা-কফি, চিপস-চানাচুর ও বিস্কুট খেতে পারবেন। খালের মাঝখানের টং দোকানে বসে এক কাপ চা-কফি খাওয়া সত্যিই উপভোগের। ‘এই দোকানটির কারণে অনেক মানুষ এ সেতুটি দেখতে আসবেন।,

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহম্মেদের উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১৫ জন শ্রমিক ২৩ দিন ধরে সেতুটির নির্মাণকাজ করেন। এতে ব্যয় হয় মোট ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার সরকারি এবং ৮৭ হাজার টাকা উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিলের।,

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, দুইপারের অসংখ্য মানুষের যাতায়াত এখানে। সেটি বিবেচনায় এখানে কাঠের অবকাঠামোর সেতু করে দেওয়া হয়েছে। ‘কংক্রিটের সেতু যাতে করে দেওয়া যায়-আমরা সেই ব্যবস্থা করব।,

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, একটি খাল দুইটি গ্রামকে বিভক্ত করে রেখেছে দীর্ঘদিন। দুইপারে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীসহ দুইটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা দৃষ্টিনন্দন একটি কাঠের সেতুটি করে দিয়েছি। এর মাধ্যমে দুইপারের মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, সেতুটির মাধ্যমে পশ্চিম নেতা গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ‌‘বিনামূল্যে সেতুর মাঝখানের টং দোকানটি তাকে নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।,’

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

১৭৫ ফুট দীর্ঘ কাঠের সেতু, দুইপারের দুর্ভোগ লাঘব

আপডেট : ০১:৪৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪

আমলাভাঙা খালের দুপাশে দুই গ্রাম। দক্ষিণপাশে দক্ষিণ কাজির হাওলা, আর উত্তরপাশে পশ্চিম নেতা গ্রাম। এই দুইপারের মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম ছিল একটি বাঁশের সাঁকো। নড়বড়ে সেই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হতে হতো। সাঁকো পার হতে গিয়ে স্কুলপড়ুয়া শিশু কিংবা বয়োবৃদ্ধদের খালে পড়ে যাওয়ার দুর্ঘটনাও ঘটত প্রায়ই।,

অবশেষে সেই দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ওই দুই গ্রামের মানুষের পারাপারের জন্য একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে নির্মিত সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এ সময় থেকেই সেতু দিয়ে লোকজন চলাচল শুরু হয়।,

তাদের মধ্যে বই-খাতা নিয়ে সেতু পার হচ্ছিলেন পশ্চিম নেতা গ্রামের আব্দুল্লাহ। সে রাঙ্গাবালী সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আব্দুল্লাহ বলেন, সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে গিয়ে আমি একবার পা পিছলে খালে পড়ে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে তিন কিলোমিটার ঘুরে কলেজে যেতাম। এখন এই সেতু হওয়ায় মাত্র ১৫ মিনিটে কলেজে যেতে পারব। আমাদের কষ্ট দূর হয়েছে। আশা করি- এখানে একটি পাকা সেতু হবে। ‘তাহলে স্থায়ীভাবে আমাদের কষ্ট দূর হবে।,’

সরেজমিন দেখা গেছে, ১৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে ৪ ফুট প্রস্থের কাঠের এ সেতুটি আকর্ষণীয় করতে লাল-সাদা রঙে সাজানো হয়েছে। সেতুর মাঝপ্রান্তে একটি টং দোকান স্থাপন করা হয়েছে।,

দৃষ্টিনন্দন এ সেতু দেখতে আসা দর্শনার্থী আল আমিন বলেন, পথচারী কিংবা দর্শনার্থীরা এখানে চা-কফি, চিপস-চানাচুর ও বিস্কুট খেতে পারবেন। খালের মাঝখানের টং দোকানে বসে এক কাপ চা-কফি খাওয়া সত্যিই উপভোগের। ‘এই দোকানটির কারণে অনেক মানুষ এ সেতুটি দেখতে আসবেন।,

জানা গেছে, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহম্মেদের উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ১৫ জন শ্রমিক ২৩ দিন ধরে সেতুটির নির্মাণকাজ করেন। এতে ব্যয় হয় মোট ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২ লাখ ৮০ হাজার সরকারি এবং ৮৭ হাজার টাকা উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিলের।,

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, দুইপারের অসংখ্য মানুষের যাতায়াত এখানে। সেটি বিবেচনায় এখানে কাঠের অবকাঠামোর সেতু করে দেওয়া হয়েছে। ‘কংক্রিটের সেতু যাতে করে দেওয়া যায়-আমরা সেই ব্যবস্থা করব।,

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, একটি খাল দুইটি গ্রামকে বিভক্ত করে রেখেছে দীর্ঘদিন। দুইপারে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই শিক্ষার্থীসহ দুইটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের জন্য সেতুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা দৃষ্টিনন্দন একটি কাঠের সেতুটি করে দিয়েছি। এর মাধ্যমে দুইপারের মানুষের যোগাযোগ সহজ হবে।

তিনি আরও বলেন, সেতুটির মাধ্যমে পশ্চিম নেতা গ্রামের ইব্রাহিম হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। ‌‘বিনামূল্যে সেতুর মাঝখানের টং দোকানটি তাকে নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।,’