নেত্রকোনা ০৫:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেত্রকোনা সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির সমৃদ্ধ এক জনপদ

গারো পাহাড়, সাদামাটি, হাওড়, খাল-বিল, নদী-নালা সব মিলিয়ে রূপসী বাংলার অনিন্দ সুন্দর এক জনপদ নেত্রকোনা জেলা। বাউল, ভাটিয়ালী, পুথী, কেচ্ছা, জারি-সারি আর মহুয়াপালা; সব মিলিয়ে লোক-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ধারক এই সীমান্ত অঞ্চল। বাঙালি-আদিবাসী মাখামাখি করে এখানে একত্রে সবার বসবাস। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির বন্ধন আবহমান কাল থেকেই এক অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছে সবার কাছে। ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে সকল স¤প্রদায়ের মানুষজন এখানে বাস্তবিক পক্ষেই উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।

এক হাজার পচাঁশি বর্গমাইল আয়তন নিয়ে প্রায় বাইশ লক্ষ ত্রিশ হাজার জনসংখ্যা সমৃদ্ধ দশটি প্রশাসনিক উপজেলা নিয়ে দেশের উত্তর পশ্চিমাংশে সীমান্তে মেঘালয়ের পাদদেশের ভাতে-মাছে সমৃদ্ধ জেলা নেত্রকোনা। জনসংখ্যায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এই জেলায় প্রচুর সংখ্যক সনাতন ও খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী জনগণের বসবাস। বাঙালী জাতিগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে রয়েছে প্রচুর গারো, হাজং ও হদী স¤প্রদায়ের আদিবাসী।

এই অঞ্চলের মানুষ ঐতিহ্যগত ভাবেই ধর্মপরায়ণ। আদিকাল থেকেই এখানে ভাব-গম্ভির পরিবেশে ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন আর ঘটা করে আচার-অনুষ্ঠান আয়োজনের রেওয়াজ প্রচলিত। এই অঞ্চলে সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর সুফী, সাধক, পীর, পুরোহিত, যাযক সহ ধর্মগুরুদের প্রভাব সর্বজনবিদিত। ধর্মীয় অনুশাসন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে রয়েছে মসজিদ, মন্দির, গির্জা সহ প্রচুর ধর্মীয় উপাসনালয়। নামাজ-রোজা, পুজা আর প্রার্থনায় যার যার ধর্মের অনুসারীরা মগ্ন থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর স¤প্রদায়গত ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে সকলের সরব উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বিশেষভাবে লক্ষনীয়। জাতি-ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে সকল ধর্মের অনুসারিদের এখানে রয়েছে পরধর্মের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। জাতীয় ও আঞ্চলিক পরিমন্ডলের অনেক অনাকাংখিত পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন ধর্মীয় গোত্রের মানুষ একত্রে বসবাস করে সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির ক্ষেত্রে এই জনপদের সুখ্যাতি সর্বমহলে বরাবরই প্রশংসিত।

কংস, মগড়া, ধনু আর পাহাড়ী কন্যা সুমেশ্বরী নদী বিধৌত অপরূপ প্রাকৃতিক বৈচিত্রের এই লোকালয়ের মানুষের পরমত সহিঞ্চুতা, উদারতা আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ মানবিক গুণাবলীর অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য। হিংসা, হানাহানি আর জাতিগত বিরোধ এ অঞ্চলে নেই বললেই চলে। সামাজিক ভাতৃত্ববোধ সকলকেই এখানে নিবীড় সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে আবদ্ধ করে রেখেছে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার বহুল আলোচিত এই ধারনাটি যথার্থই সার্থকতা পায় এই জনপদে বিরাজমান সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির মধ্য দিয়ে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি নেত্রকোনা সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির সমৃদ্ধ এক জনপদ

আপডেট : ০৪:২০:৩০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০

গারো পাহাড়, সাদামাটি, হাওড়, খাল-বিল, নদী-নালা সব মিলিয়ে রূপসী বাংলার অনিন্দ সুন্দর এক জনপদ নেত্রকোনা জেলা। বাউল, ভাটিয়ালী, পুথী, কেচ্ছা, জারি-সারি আর মহুয়াপালা; সব মিলিয়ে লোক-সংস্কৃতির ঐতিহ্যের ধারক এই সীমান্ত অঞ্চল। বাঙালি-আদিবাসী মাখামাখি করে এখানে একত্রে সবার বসবাস। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির বন্ধন আবহমান কাল থেকেই এক অনন্য উচ্চতায় স্থান করে নিয়েছে সবার কাছে। ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে সকল স¤প্রদায়ের মানুষজন এখানে বাস্তবিক পক্ষেই উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে।

এক হাজার পচাঁশি বর্গমাইল আয়তন নিয়ে প্রায় বাইশ লক্ষ ত্রিশ হাজার জনসংখ্যা সমৃদ্ধ দশটি প্রশাসনিক উপজেলা নিয়ে দেশের উত্তর পশ্চিমাংশে সীমান্তে মেঘালয়ের পাদদেশের ভাতে-মাছে সমৃদ্ধ জেলা নেত্রকোনা। জনসংখ্যায় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও এই জেলায় প্রচুর সংখ্যক সনাতন ও খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বী জনগণের বসবাস। বাঙালী জাতিগোষ্ঠীর পাশাপাশি এখানে রয়েছে প্রচুর গারো, হাজং ও হদী স¤প্রদায়ের আদিবাসী।

এই অঞ্চলের মানুষ ঐতিহ্যগত ভাবেই ধর্মপরায়ণ। আদিকাল থেকেই এখানে ভাব-গম্ভির পরিবেশে ধর্মীয় রীতি-নীতি পালন আর ঘটা করে আচার-অনুষ্ঠান আয়োজনের রেওয়াজ প্রচলিত। এই অঞ্চলে সাধারন ধর্মপ্রাণ মানুষের ওপর সুফী, সাধক, পীর, পুরোহিত, যাযক সহ ধর্মগুরুদের প্রভাব সর্বজনবিদিত। ধর্মীয় অনুশাসন যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনে রয়েছে মসজিদ, মন্দির, গির্জা সহ প্রচুর ধর্মীয় উপাসনালয়। নামাজ-রোজা, পুজা আর প্রার্থনায় যার যার ধর্মের অনুসারীরা মগ্ন থাকার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর স¤প্রদায়গত ও সামাজিক অনুষ্ঠানাদিতে সকলের সরব উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বিশেষভাবে লক্ষনীয়। জাতি-ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে সকল ধর্মের অনুসারিদের এখানে রয়েছে পরধর্মের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ। জাতীয় ও আঞ্চলিক পরিমন্ডলের অনেক অনাকাংখিত পরিস্থিতিতেও বিভিন্ন ধর্মীয় গোত্রের মানুষ একত্রে বসবাস করে সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির ক্ষেত্রে এই জনপদের সুখ্যাতি সর্বমহলে বরাবরই প্রশংসিত।

কংস, মগড়া, ধনু আর পাহাড়ী কন্যা সুমেশ্বরী নদী বিধৌত অপরূপ প্রাকৃতিক বৈচিত্রের এই লোকালয়ের মানুষের পরমত সহিঞ্চুতা, উদারতা আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ মানবিক গুণাবলীর অন্যতম এক বৈশিষ্ট্য। হিংসা, হানাহানি আর জাতিগত বিরোধ এ অঞ্চলে নেই বললেই চলে। সামাজিক ভাতৃত্ববোধ সকলকেই এখানে নিবীড় সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে আবদ্ধ করে রেখেছে। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার বহুল আলোচিত এই ধারনাটি যথার্থই সার্থকতা পায় এই জনপদে বিরাজমান সা¤প্রদায়িক সম্পৃতির মধ্য দিয়ে।