নেত্রকোনা ০৪:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সৈয়দ মহসিন আলীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • আপডেট : ১০:৪৪:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ৩৩৯

নাঈম আলীঃ সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) শনিবার । ২০১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।

এ উপলক্ষে শনিবার সকালে সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) মাজার প্রাঙ্গণে মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন পরিবারে সদস্য, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে আলোচনা সভা, নিজ বাসভবনে কুরআন তেলাওয়াত, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও শিরনি বিতরণের আয়োজন করেছে মহসিন আলী ফাউন্ডেশন।

সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আশরাফ আলী। মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ মহসিন আলী বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তিনি একজন সঙ্গীতপ্রিয় ও সংস্কৃতিমনা মানুষ ছিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনও করতেন। এছাড়া, মৌলভীবাজারে মানবদরদী হিসেবেও তার সুনাম ছিল। অভাবগ্রস্ত ও দুস্থ মানুষদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতেন ও অসুস্থ মানুষদের নিজ খরচে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতেন।

মহসিন আলী ছাত্রজীবনেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার তিনি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরো সক্রিয় হয়ে পড়েন। রাজনীতির বাইরে সৈয়দ মহসীন আলী একজন সমাজিক সংগঠক ও সাংবাদিকও ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মহসীন আলী মৌলভীবাজার মহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৪ সাল থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পর পর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে। এর পর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তারপর ২০১৪ সালে আবারও এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর একই বছর ১২ই জানুয়ারি তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজসেবা মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজান তিনি। সমাজের প্রকৃত উন্নয়নে কাজ করেন। সেই অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে সৈয়দ মহসিন আলী ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির কাছ থেকে ‘আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক-২০১৪’ লাভ করেন এবং ‘হ্যালো কলকাতা’ নামে কলকাতাভিত্তিক একটি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান তাকে ‘নেহেরু সাম্য সম্মাননা-২০১৪’ পুরস্কারে ভূষিত করে।

এছাড়াও দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

সৈয়দ মহসিন আলীর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ

আপডেট : ১০:৪৪:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নাঈম আলীঃ সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলীর ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) শনিবার । ২০১৫ সালের এই দিনে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন ।

এ উপলক্ষে শনিবার সকালে সৈয়দ শাহ মোস্তফা (র.) মাজার প্রাঙ্গণে মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন পরিবারে সদস্য, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে আলোচনা সভা, নিজ বাসভবনে কুরআন তেলাওয়াত, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও শিরনি বিতরণের আয়োজন করেছে মহসিন আলী ফাউন্ডেশন।

সৈয়দ মহসিন আলী ১৯৪৮ সালের ১২ ডিসেম্বর এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ আশরাফ আলী। মায়ের নাম আছকিরুনন্নেছা খানম। ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দ মহসিন আলী বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তিনি একজন সঙ্গীতপ্রিয় ও সংস্কৃতিমনা মানুষ ছিলেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনও করতেন। এছাড়া, মৌলভীবাজারে মানবদরদী হিসেবেও তার সুনাম ছিল। অভাবগ্রস্ত ও দুস্থ মানুষদের আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতেন ও অসুস্থ মানুষদের নিজ খরচে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতেন।

মহসিন আলী ছাত্রজীবনেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৭১ সালে ২৩ বছর বয়সে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি। সম্মুখসমরে যুদ্ধ চলাকালে গুলিবিদ্ধও হয়েছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার তিনি মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আরো সক্রিয় হয়ে পড়েন। রাজনীতির বাইরে সৈয়দ মহসীন আলী একজন সমাজিক সংগঠক ও সাংবাদিকও ছিলেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মহসীন আলী মৌলভীবাজার মহকুমার রেডক্রিসেন্ট সোসাইটিতে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৪ সাল থেকে মৌলভীবাজার পৌরসভায় পর পর ৩ বার বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে তাকে শ্রেষ্ঠ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করে। এর পর সাধারণ মানুষের ভালোবাসায় ২০০৮ সালে মৌলভীবাজার ৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তারপর ২০১৪ সালে আবারও এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর একই বছর ১২ই জানুয়ারি তিনি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব লাভ করেন। সমাজসেবা মন্ত্রণালয়কে ঢেলে সাজান তিনি। সমাজের প্রকৃত উন্নয়নে কাজ করেন। সেই অবদান রাখার জন্য ২০১৫ সালে সৈয়দ মহসিন আলী ভারতের আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটির কাছ থেকে ‘আচার্য দীনেশ চন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক-২০১৪’ লাভ করেন এবং ‘হ্যালো কলকাতা’ নামে কলকাতাভিত্তিক একটি সমাজকল্যাণ প্রতিষ্ঠান তাকে ‘নেহেরু সাম্য সম্মাননা-২০১৪’ পুরস্কারে ভূষিত করে।

এছাড়াও দেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করে।