নেত্রকোনা ০২:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘রাশিয়া থেকে গম কেনায় কোনো দুর্নীতি হয়নি’

  • আপডেট : ০৭:০৬:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৫

ঢাকা: রাশিয়া থেকে গম কেনা নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, এই গম কেনায় কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। সবধরনের প্রটোকল মেনেই গম কেনা হয়েছে। এ নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন তারা ভুল ও অসত্য তথ্য দিয়েছেন।,

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে গম কেনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

খাদ্য সচিব বলেন, ‘রাশিয়া থেকে গম কিনেছি এ কথাটি সত্য। একটি দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম এটা নিয়ে একাধিক নিউজ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানেও বেশি দামে গম কেনার কথা বলা হয়েছে। আমি বলব, বেশি দাম দিয়ে রাশিয়া থেকে গম কেনা হয়নি।’

গম কেনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে খাদ্য সচিব বলেন, ‘গম আমাদের প্রয়োজন ছিল। এটা কেনার পর গমের ক্ষেত্রে অন্তত খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে স্বস্তিতে আছি। নিরাপদ খাদ্য মজুত রাখতে হয়। জুন মাসে আমাদের টার্গেট থাকে ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রাখার। এর মধ্যে অন্তত দুই লাখ মেট্রিক টন গম। কিন্তু এবার জুনে আমাদের গমের মজুত দেড় লাখ মেট্রিক টনে নেমে যায়। এই গমটা ওএমএস ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের ও বাহিনীর সদস্যদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।’

গম আমদানির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সচিব বলেন, ‘গম কমে যাওয়ার পর আমদানির উদ্যোগ নিতে গিয়ে দেখি পাশের দেশ ভারতে গম রফতানি বন্ধ। ভারত থেকে গম আমদানি করা গেলে দুই দিক থেকেই লাভ। কারণ দূরত্ব কম হওয়ায় পরিবহন সহজ এবং খরচ কম লাগে। আবার সময়ও কম লাগে। এবার যখন আমরা ভারত থেকে গম কিনতে পারলাম না তখন আমরা অন্য দেশে গম খুঁজতে থাকি। মন্ত্রণালয় থেকে গম কেনার জন্য অন্তত ৮ থেকে ১০টি দেশে আমরা চিঠি দিই। শুরুতে আমরা রেসপন্স পাইনি। পরে যারা করেছে সেখানে দেখলাম আর্জেন্টিনা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দূরত্ব বেশি হওয়ায় আমরা তাদের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাইনি। বেলারুশ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের পোর্ট না থাকায় সেখান থেকে গম কেনা সম্ভব হয়নি। কাজাখিস্তান রাজি হচ্ছিল না। রাশিয়া প্রথম দিকে একটু অমনোযোগী ছিল। পরে তারা গুরুত্ব দেয়। গত জুনেআমরা মিটিং করি। কিন্তু ততক্ষণে আমাদের মজুত আরও কমে যায়। রাশিয়ার আগ্রহ কম দেখে আমরা কূটনীতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করে গত ২৪ আগস্ট তাদের সঙ্গে গম কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ৪৩০ ডলার প্রতি মেট্রিক টন দামে।’

সচিব বলেন, ‘এটা বাড়তি দাম না। কারণ যে দেশ রফতানি করছে তারা শুধু গমই দেবে আর কোনো সাপোর্ট দেবে না। মূল দামটা হয় পরিবহন খরচ আর বন্দরে। কারণ সেখানে চার/পাঁচটা খাতে দাম বেড়ে যায়। যেমন- লোডিং জাহাজ ভাড়া, ইনস্যুরেন্স, লাইটেনিং, বার্থ অপারেটিং, হ্যান্ডেলিং- এসব চার্জ যোগ হয়ে গমটা আসে। এফওবি দাম কেনার দিন ছিল ৩৩৩ ডলার। এই দাম যুক্তিসঙ্গত। সব চার্জ মিলিয়ে দাম ধরলে রাশিয়া থেকে গম কেনায় বাংলাদেশ লাভবানই হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম বা নিয়ম ভেঙে এই গম কেনা হয়নি।’ তাহলে এ নিয়ে প্রশ্ন কেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখানে
ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। একজনে পেলে আরেকজন সমালোচনা শুরু করে।’ এ সময় টিআইবি’র বিবৃতি নিয়েও কথা বলেন খাদ্য সচিব। তিনি বলেন, ‘সংস্থাটি যে তথ্য তুলে ধরেছে তা ভুল ও অসত্য। জনমনে এ ধরনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।’

উল্লেখ্য, দেশে বছরে গমের চাহিদা ৭০ লাখ মেট্রিক টনের মতো। চাহিদার ৬০ লাখ মেট্রিক টনই সরকারকে আমদানি করতে হয়। গত জুনে গমের মজুত বেশ কমে যায়। ফলে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। সূত্র মতে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওই পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।,

from Sarabangla https://ift.tt/oHOJKp0

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

‘রাশিয়া থেকে গম কেনায় কোনো দুর্নীতি হয়নি’

আপডেট : ০৭:০৬:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঢাকা: রাশিয়া থেকে গম কেনা নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। তিনি বলেন, এই গম কেনায় কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। সবধরনের প্রটোকল মেনেই গম কেনা হয়েছে। এ নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছেন তারা ভুল ও অসত্য তথ্য দিয়েছেন।,

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে গম কেনা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

খাদ্য সচিব বলেন, ‘রাশিয়া থেকে গম কিনেছি এ কথাটি সত্য। একটি দেশের প্রথম সারির গণমাধ্যম এটা নিয়ে একাধিক নিউজ করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে টিআইবি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। সেখানেও বেশি দামে গম কেনার কথা বলা হয়েছে। আমি বলব, বেশি দাম দিয়ে রাশিয়া থেকে গম কেনা হয়নি।’

গম কেনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে খাদ্য সচিব বলেন, ‘গম আমাদের প্রয়োজন ছিল। এটা কেনার পর গমের ক্ষেত্রে অন্তত খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখতে স্বস্তিতে আছি। নিরাপদ খাদ্য মজুত রাখতে হয়। জুন মাসে আমাদের টার্গেট থাকে ৮ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রাখার। এর মধ্যে অন্তত দুই লাখ মেট্রিক টন গম। কিন্তু এবার জুনে আমাদের গমের মজুত দেড় লাখ মেট্রিক টনে নেমে যায়। এই গমটা ওএমএস ও সরকারি বিভিন্ন দফতরের ও বাহিনীর সদস্যদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয়।’

গম আমদানির প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সচিব বলেন, ‘গম কমে যাওয়ার পর আমদানির উদ্যোগ নিতে গিয়ে দেখি পাশের দেশ ভারতে গম রফতানি বন্ধ। ভারত থেকে গম আমদানি করা গেলে দুই দিক থেকেই লাভ। কারণ দূরত্ব কম হওয়ায় পরিবহন সহজ এবং খরচ কম লাগে। আবার সময়ও কম লাগে। এবার যখন আমরা ভারত থেকে গম কিনতে পারলাম না তখন আমরা অন্য দেশে গম খুঁজতে থাকি। মন্ত্রণালয় থেকে গম কেনার জন্য অন্তত ৮ থেকে ১০টি দেশে আমরা চিঠি দিই। শুরুতে আমরা রেসপন্স পাইনি। পরে যারা করেছে সেখানে দেখলাম আর্জেন্টিনা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু দূরত্ব বেশি হওয়ায় আমরা তাদের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখাইনি। বেলারুশ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের পোর্ট না থাকায় সেখান থেকে গম কেনা সম্ভব হয়নি। কাজাখিস্তান রাজি হচ্ছিল না। রাশিয়া প্রথম দিকে একটু অমনোযোগী ছিল। পরে তারা গুরুত্ব দেয়। গত জুনেআমরা মিটিং করি। কিন্তু ততক্ষণে আমাদের মজুত আরও কমে যায়। রাশিয়ার আগ্রহ কম দেখে আমরা কূটনীতিক চ্যানেলে যোগাযোগ করে গত ২৪ আগস্ট তাদের সঙ্গে গম কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ৪৩০ ডলার প্রতি মেট্রিক টন দামে।’

সচিব বলেন, ‘এটা বাড়তি দাম না। কারণ যে দেশ রফতানি করছে তারা শুধু গমই দেবে আর কোনো সাপোর্ট দেবে না। মূল দামটা হয় পরিবহন খরচ আর বন্দরে। কারণ সেখানে চার/পাঁচটা খাতে দাম বেড়ে যায়। যেমন- লোডিং জাহাজ ভাড়া, ইনস্যুরেন্স, লাইটেনিং, বার্থ অপারেটিং, হ্যান্ডেলিং- এসব চার্জ যোগ হয়ে গমটা আসে। এফওবি দাম কেনার দিন ছিল ৩৩৩ ডলার। এই দাম যুক্তিসঙ্গত। সব চার্জ মিলিয়ে দাম ধরলে রাশিয়া থেকে গম কেনায় বাংলাদেশ লাভবানই হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো দুর্নীতি, অনিয়ম বা নিয়ম ভেঙে এই গম কেনা হয়নি।’ তাহলে এ নিয়ে প্রশ্ন কেন? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘এখানে
ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। একজনে পেলে আরেকজন সমালোচনা শুরু করে।’ এ সময় টিআইবি’র বিবৃতি নিয়েও কথা বলেন খাদ্য সচিব। তিনি বলেন, ‘সংস্থাটি যে তথ্য তুলে ধরেছে তা ভুল ও অসত্য। জনমনে এ ধরনের প্রেস বিজ্ঞপ্তি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।’

উল্লেখ্য, দেশে বছরে গমের চাহিদা ৭০ লাখ মেট্রিক টনের মতো। চাহিদার ৬০ লাখ মেট্রিক টনই সরকারকে আমদানি করতে হয়। গত জুনে গমের মজুত বেশ কমে যায়। ফলে রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। যা এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। সূত্র মতে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওই পাঁচ লাখ মেট্রিক টন গম দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।,

from Sarabangla https://ift.tt/oHOJKp0