নেত্রকোনা ১১:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ি সড়কের মাঝখানে গ্যাসলাইন, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

  • আপডেট : ০৩:৪০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৫৮

নাঈম আলী: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অপরিকল্পিতভাবে বড় করা হয়েছে চা বাগানের একটি পাহাড়ি সড়ক। এতে সড়কের পাশ দিয়ে নেওয়া গ্যাস সঞ্চালন লাইন বর্তমানে সড়কের মধ্যে এসে পড়েছে। আর বৃষ্টিতে সে সড়কের মাটি সরে গিয়ে উপরে ভেসে উঠেছে গ্যাস সঞ্চালন লাইন। ফলে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ লাইনের উপর দিয়েই যান চলাচল করছে। শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান ইউনিয়নের টিপরা ছড়ার প্রবেশমুখ থেকে নাহার চা বাগান যাওয়ার সড়কে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শীঘ্রই পাইপলাইন না সরালে দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। চা বাগান কর্তৃপক্ষও গ্যাস পরিসঞ্চালন লাইনের এ অবস্থাকে ঝুঁকিপুর্ণ মনে করছেন। তবে জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম কর্তৃপক্ষ এতে ততোটা ঝুঁকি দেখছে না। ফলে আগামী শীত মৌসুমে পাইপ লাইন সরনারোর কাজ শুরুর কথা জানিয়েছে গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, এখন চা বাগানে ভরা মৌসুম চলছে। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এই লাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাস বন্ধ থাকলে চায়ের উৎপাদন বন্ধ হয়ে পাড়বে। তাই এখনই সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে না। আপাতত স্থানীয়ভাবে মাটি ফেলে এটিকে যতটা সম্ভব মাটির নিচে রাখা যায় সে ব্যবস্থা চলছে।

স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ সঞ্চালন লাইনটি নেওয়ার সময় রাস্তা ছোট ছিলো, ফলে তখন পাইপলাইন ছিলো রাস্তার পাশে, কিন্তু রাস্তাটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রশস্ত করলে সঞ্চালন লাইনটি বর্তমানে বর্ধিত রাস্তার মধ্যে অবস্থান করছে। এজন্যই তৈরী হয়েছে এ অবস্থা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিপরা ছড়া চা বাগানের প্রবেশ মুখ থেকে নাহার চা বাগানে যাওয়ার পাহাড়ি কাঁচা এ রাস্তাটির চার কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাস্তার বেশীরভাগ অংশে মাটি সরে গিয়ে গ্যাস সঞ্চালন পাইপ বেরিয়ে পড়েছে। চালকরা এই সঞ্চালন লাইনের উপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এই রাস্তায় চলাচলকারী জীপ গাড়ির চালক আব্দুল খালেক বলেন, রাস্তাটি এমনিতেই আঁকাবাঁকা ও কর্দমাক্ত, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে যেতে হয়, এমনিতেই আমরা এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাই। এখন এই গ্যাস পাইপ লাইন বিপদজনক সমস্যা হিসেবে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। গাড়ির কারণে যদি এই গ্যাস লাইন কোন সমস্যা হয় তখন আমরাও বিপদে পরবো।

নাহার চা বাগানের ব্যবস্থাপক পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমি নিজেও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। এটি একটু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ই আছে। চা বাগানের পক্ষ থেকে কয়েকবার পাইপ লাইনের উপর মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু বৃষ্টির পানিতে মাটি সরে গেছে। এখন পাইপগুলো খুলে গভীর গর্ত করে টানতে হবে। কিন্তু এই কাজ সম্পাদন করতে হলে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখতে হবে। আমরা আবেদন করেছি, আগামী শীতে এটি সরানোর কাজ হবে বলে আমরা জেনেছি।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন লিমিটেডের শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক শাখার উপ-ব্যবস্থাপক গৌতম দেব বলেন, আমরা চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আবেদন পেয়েছি। আমাদের সংল্লিষ্ট বিভাগকে কাজের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ডিসেম্বর এর দিকে কাজ শুরু করবো, এখানে গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। তবে আমরা দ্রুত কাজটি করে ফেলবো।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

পাহাড়ি সড়কের মাঝখানে গ্যাসলাইন, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল

আপডেট : ০৩:৪০:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ অগাস্ট ২০১৯

নাঈম আলী: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অপরিকল্পিতভাবে বড় করা হয়েছে চা বাগানের একটি পাহাড়ি সড়ক। এতে সড়কের পাশ দিয়ে নেওয়া গ্যাস সঞ্চালন লাইন বর্তমানে সড়কের মধ্যে এসে পড়েছে। আর বৃষ্টিতে সে সড়কের মাটি সরে গিয়ে উপরে ভেসে উঠেছে গ্যাস সঞ্চালন লাইন। ফলে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন এ লাইনের উপর দিয়েই যান চলাচল করছে। শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান ইউনিয়নের টিপরা ছড়ার প্রবেশমুখ থেকে নাহার চা বাগান যাওয়ার সড়কে এমন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শীঘ্রই পাইপলাইন না সরালে দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। চা বাগান কর্তৃপক্ষও গ্যাস পরিসঞ্চালন লাইনের এ অবস্থাকে ঝুঁকিপুর্ণ মনে করছেন। তবে জালালাবাদ গ্যাস টি এন্ড ডি সিস্টেম কর্তৃপক্ষ এতে ততোটা ঝুঁকি দেখছে না। ফলে আগামী শীত মৌসুমে পাইপ লাইন সরনারোর কাজ শুরুর কথা জানিয়েছে গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, এখন চা বাগানে ভরা মৌসুম চলছে। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও এই লাইন দিয়ে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্যাস বন্ধ থাকলে চায়ের উৎপাদন বন্ধ হয়ে পাড়বে। তাই এখনই সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে না। আপাতত স্থানীয়ভাবে মাটি ফেলে এটিকে যতটা সম্ভব মাটির নিচে রাখা যায় সে ব্যবস্থা চলছে।

স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, এ সঞ্চালন লাইনটি নেওয়ার সময় রাস্তা ছোট ছিলো, ফলে তখন পাইপলাইন ছিলো রাস্তার পাশে, কিন্তু রাস্তাটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ প্রশস্ত করলে সঞ্চালন লাইনটি বর্তমানে বর্ধিত রাস্তার মধ্যে অবস্থান করছে। এজন্যই তৈরী হয়েছে এ অবস্থা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, টিপরা ছড়া চা বাগানের প্রবেশ মুখ থেকে নাহার চা বাগানে যাওয়ার পাহাড়ি কাঁচা এ রাস্তাটির চার কিলোমিটার এলাকায় রাস্তার নিচ দিয়ে গ্যাসের পাইপ লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাস্তার বেশীরভাগ অংশে মাটি সরে গিয়ে গ্যাস সঞ্চালন পাইপ বেরিয়ে পড়েছে। চালকরা এই সঞ্চালন লাইনের উপর দিয়েই গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এই রাস্তায় চলাচলকারী জীপ গাড়ির চালক আব্দুল খালেক বলেন, রাস্তাটি এমনিতেই আঁকাবাঁকা ও কর্দমাক্ত, পাহাড়ের ঢাল বেয়ে যেতে হয়, এমনিতেই আমরা এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে অনেক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাই। এখন এই গ্যাস পাইপ লাইন বিপদজনক সমস্যা হিসেবে সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। গাড়ির কারণে যদি এই গ্যাস লাইন কোন সমস্যা হয় তখন আমরাও বিপদে পরবো।

নাহার চা বাগানের ব্যবস্থাপক পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমি নিজেও এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করি। এটি একটু ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়ই আছে। চা বাগানের পক্ষ থেকে কয়েকবার পাইপ লাইনের উপর মাটি দিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেছি কিন্তু বৃষ্টির পানিতে মাটি সরে গেছে। এখন পাইপগুলো খুলে গভীর গর্ত করে টানতে হবে। কিন্তু এই কাজ সম্পাদন করতে হলে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখতে হবে। আমরা আবেদন করেছি, আগামী শীতে এটি সরানোর কাজ হবে বলে আমরা জেনেছি।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন লিমিটেডের শ্রীমঙ্গল আঞ্চলিক শাখার উপ-ব্যবস্থাপক গৌতম দেব বলেন, আমরা চা বাগান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আবেদন পেয়েছি। আমাদের সংল্লিষ্ট বিভাগকে কাজের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ডিসেম্বর এর দিকে কাজ শুরু করবো, এখানে গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় আমরা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না। তবে আমরা দ্রুত কাজটি করে ফেলবো।