নেত্রকোনা ০৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পে গতি নেই, বাড়ছে খরচ

  • আপডেট : ১০:০৫:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ১৯

গতি কম তারপরও ব্যয় বাড়ছে চট্টগ্রামে অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ কাজের। এজন্য ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

এটির মূল ব্যয় ছিল এক হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সেখান থেকে ৫০২ কোটি ৪০ লাখ ৯১ হাজার টাকা বেড়ে এখন মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও গত জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি মোট ৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং ভৌত অগ্রগতি ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ।,


প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার সঙ্গে সঞ্চালন ব্যবস্থার সামঞ্জস্য রেখে সরকার বিদ্যুতের উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। এই উন্নয়ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্থাপিত নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অধিকতর উন্নয়নের জন্য মূল প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৯ জুলাই অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদন পায়।,

এটির মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা (সরকারি তহবিল থেকে ৩৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ) টাকা। এছাড়া ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুনে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।,

সঞ্চালন ব্যবস্থার রুট পরিবর্তনের কারণে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ বৃদ্ধি, স্থানীয় পরামর্শকের সংস্থান, টাওয়ার স্থাপনের জন্য জমির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, মুদ্রা বিনিময় হারের পরিবর্তনে ব্যয় বৃদ্ধি এবং কিছু অঙ্গের ব্যয় হ্রাস বা বৃদ্ধিসহ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করে মোট এক হাজার ৯০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা প্রক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।,

এ প্রস্তাবটি নিয়ে গত জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ দিয়ে প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য বলা হয়েছে। পিইসি সভার প্রেক্ষিতে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পুনর্গঠন করে মোট এক হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠানো হয়েছে কমিশনে।,

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, মূল প্রকল্পের আওতাভুক্ত একটি কাজ হচ্ছে হাটহাজারী-রামপুর ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল লাইন হতে দুই দশমিক ৬৬ কিলোমিটার লাইন-ইন লাইন-আউট নির্মাণ।,

উল্লিখিত এলআইএলও লাইন নির্মাণ কাজটি হাটহাজারী-রামপুরা ২৩০ কেভি লাইনের সাথে সম্পর্কিত, যা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেডের ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (এনপিটিএনডিপি) শিরোনামে আরেকটি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ছিল।,

এই প্রকল্প হাটহাজারী
-রামপুরা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইনটি বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ভাটিয়ারীর আপত্তির কারণে বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই এটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এনপিটিএনডি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রামপুর উপকেন্দ্র এবং ওই প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য আনন্দবাজার উপকেন্দ্রের সোর্স নিশ্চিত করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে খুলশী থেকে আনন্দবাজার ২৩০ কেভি ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড এবং আনন্দবাজার থেকে রামপুর পর্যন্ত ২৩০ কেভি ৩ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রয়োজনীয় কাজ হয়ে পড়ে।,

এজন্য দ্বিতীয় পিএসসি সভার সিদ্ধান্তে নতুন ৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার ২৩০ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড সঞ্চালন লাইটি এই সংশোধিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং বিদ্যমান ২ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার লাইনটি প্রকল্প হতে বাদ দেওয়া হয়েছে।,

প্রকল্প সংশোধনের কারণ ব্যাখা দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি: প্যাকেজ-২ বাস্তবায়নের চুক্তি কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ২৪ মাস। আরডিপিপি অনুমোদনের পরে চুক্তি স্বাক্ষর এবং চুক্তি মোতাবেক ডেভান্স অর্থ দেওয়ার মতো আরও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাস্তবতার জন্য অতিরিক্ত ৪ থেকে ৫ মাস সময়ের প্রয়োজন হয়।,

প্যাকেজ-২ এর আওতায় আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন নির্মাণ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও মহাসড়কের এলাকা দিয়ে যাবে। সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল লাইনগুলো নির্মাণ করতে হবে।,

এছাড়া প্যাকেজ-৩ এর আওতাভুক্ত বিদ্যমান খুলশী ১৩২/৩৩ কেভি এআইএস উপকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ চলমান রেখে ২৩০/১৩২/৩৩ কেভি জিআইএস উপকেন্দ্রকে উন্নিত করার কাজটি অত্যন্ত জটিল এবং সময় সাপেক্ষ। এরমধ্যে চলতি বছরের ২১ মার্চ প্যাকেজ-৩ এর চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় এবং চলতি বছরের ১৬ জুন চুক্তিটি কার্যকর হয়। চুক্তি কার্যকরের তারিখ অনুযায়ী প্যাকেজটির সমাপ্তকাল ২৪ মাস অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৫ জুন। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।,

নতুন খাত সংযোজন: পরামর্শক, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রকল্পের তৃতীয় ত্রিপক্ষীয় পোর্টফোলিও পর্যালোচনা সভায় একটি পরিবেশ ও সামাজিক পরামর্শক নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবতৃীতে এআইআইবির পরামর্শ অনুযাযী টার্ণকী কাজের ইনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড সোস্যাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (এএসএমপি) বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগের বিষয়টি বিড ডকুমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করে। এজন্য আরডিপিপিতে ৫৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ের নতুন অঙ্গ যুক্ত করা হয়েছে।,

ভূমি অধিগ্রহণ (ভূমি ভাড়া): ৪০০ কেভি ওভারহেড সঞ্চালন লাইনের রুটটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত জায়গার ওপর দিয়ে গমন করে। ওভারহেড সঞ্চালন লাইনটির রিভার ক্রসিং টাওয়ার, এ্যাংকর টাওয়ার ও ট্রান্সমিশন কম্পাউন্ড স্থাপন করতে তিন হাজার ৪৮৮ বর্গমিটার জায়গার প্রয়োজন। এই জায়গার ভাড়া (প্রতিবছর) দেওয়ার শর্তে চট্টগ্রাম বন্দর সম্মতি দিয়েছে। এ জন্য অধিগ্রহণ বা জমি ক্রয় (জমি ভাড়া) ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।,

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্থাপিত নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত ৮৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনের মাধ্যমে চট্টগ্
রাম শহর ও ওই অঞ্চলের নির্ভরযোগ্য ও দক্ষতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার অবকাঠাামোর উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।,

from  Sarabangla https://ift.tt/JxOPR6u

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পে গতি নেই, বাড়ছে খরচ

আপডেট : ১০:০৫:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

গতি কম তারপরও ব্যয় বাড়ছে চট্টগ্রামে অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ কাজের। এজন্য ‘চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে।

এটির মূল ব্যয় ছিল এক হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। সেখান থেকে ৫০২ কোটি ৪০ লাখ ৯১ হাজার টাকা বেড়ে এখন মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার টাকা। প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও গত জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি মোট ৪৭ কোটি ৬৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং ভৌত অগ্রগতি ১৮ দশমিক ২২ শতাংশ।,


প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থার সঙ্গে সঞ্চালন ব্যবস্থার সামঞ্জস্য রেখে সরকার বিদ্যুতের উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মসূচি নিয়েছে সরকার। এই উন্নয়ন কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্থাপিত নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার অধিকতর উন্নয়নের জন্য মূল প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৯ জুলাই অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অনুমোদন পায়।,

এটির মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা (সরকারি তহবিল থেকে ৩৫৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৯২৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ) টাকা। এছাড়া ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুনে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি করে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।,

সঞ্চালন ব্যবস্থার রুট পরিবর্তনের কারণে সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ বৃদ্ধি, স্থানীয় পরামর্শকের সংস্থান, টাওয়ার স্থাপনের জন্য জমির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা, মুদ্রা বিনিময় হারের পরিবর্তনে ব্যয় বৃদ্ধি এবং কিছু অঙ্গের ব্যয় হ্রাস বা বৃদ্ধিসহ প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করে মোট এক হাজার ৯০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা প্রক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে।,

এ প্রস্তাবটি নিয়ে গত জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ দিয়ে প্রস্তাবিত সংশোধিত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য বলা হয়েছে। পিইসি সভার প্রেক্ষিতে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পুনর্গঠন করে মোট এক হাজার ৮৬১ কোটি ২৮ লাখ ৯১ হাজার প্রাক্কলিত ব্যয়ে প্রকল্পটির পুনর্গঠিত ডিপিপি পাঠানো হয়েছে কমিশনে।,

প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, মূল প্রকল্পের আওতাভুক্ত একটি কাজ হচ্ছে হাটহাজারী-রামপুর ২৩০ কেভি ডাবল সার্কিট আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল লাইন হতে দুই দশমিক ৬৬ কিলোমিটার লাইন-ইন লাইন-আউট নির্মাণ।,

উল্লিখিত এলআইএলও লাইন নির্মাণ কাজটি হাটহাজারী-রামপুরা ২৩০ কেভি লাইনের সাথে সম্পর্কিত, যা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লিমিটেডের ন্যাশনাল পাওয়ার ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট (এনপিটিএনডিপি) শিরোনামে আরেকটি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত ছিল।,

এই প্রকল্প হাটহাজারী
-রামপুরা ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইনটি বাংলাদেশ নৌ-বাহিনী ভাটিয়ারীর আপত্তির কারণে বাস্তবায়ন করা যায়নি। তাই এটি বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এনপিটিএনডি প্রকল্পের আওতায় নির্মিত রামপুর উপকেন্দ্র এবং ওই প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য আনন্দবাজার উপকেন্দ্রের সোর্স নিশ্চিত করার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে খুলশী থেকে আনন্দবাজার ২৩০ কেভি ৬ দশমিক ১০ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড এবং আনন্দবাজার থেকে রামপুর পর্যন্ত ২৩০ কেভি ৩ দশমিক ৭৭ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড সঞ্চালন লাইন নির্মাণ প্রয়োজনীয় কাজ হয়ে পড়ে।,

এজন্য দ্বিতীয় পিএসসি সভার সিদ্ধান্তে নতুন ৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার ২৩০ কেভি আন্ডারগ্রাউন্ড সঞ্চালন লাইটি এই সংশোধিত প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং বিদ্যমান ২ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার লাইনটি প্রকল্প হতে বাদ দেওয়া হয়েছে।,

প্রকল্প সংশোধনের কারণ ব্যাখা দিতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি: প্যাকেজ-২ বাস্তবায়নের চুক্তি কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে ২৪ মাস। আরডিপিপি অনুমোদনের পরে চুক্তি স্বাক্ষর এবং চুক্তি মোতাবেক ডেভান্স অর্থ দেওয়ার মতো আরও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাস্তবতার জন্য অতিরিক্ত ৪ থেকে ৫ মাস সময়ের প্রয়োজন হয়।,

প্যাকেজ-২ এর আওতায় আন্ডারগ্রাউন্ড লাইন নির্মাণ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও মহাসড়কের এলাকা দিয়ে যাবে। সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবল লাইনগুলো নির্মাণ করতে হবে।,

এছাড়া প্যাকেজ-৩ এর আওতাভুক্ত বিদ্যমান খুলশী ১৩২/৩৩ কেভি এআইএস উপকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সরবরাহ চলমান রেখে ২৩০/১৩২/৩৩ কেভি জিআইএস উপকেন্দ্রকে উন্নিত করার কাজটি অত্যন্ত জটিল এবং সময় সাপেক্ষ। এরমধ্যে চলতি বছরের ২১ মার্চ প্যাকেজ-৩ এর চুক্তি স্বাক্ষর করা হয় এবং চলতি বছরের ১৬ জুন চুক্তিটি কার্যকর হয়। চুক্তি কার্যকরের তারিখ অনুযায়ী প্যাকেজটির সমাপ্তকাল ২৪ মাস অর্থাৎ ২০২৪ সালের ১৫ জুন। প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।,

নতুন খাত সংযোজন: পরামর্শক, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত প্রকল্পের তৃতীয় ত্রিপক্ষীয় পোর্টফোলিও পর্যালোচনা সভায় একটি পরিবেশ ও সামাজিক পরামর্শক নিযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরবতৃীতে এআইআইবির পরামর্শ অনুযাযী টার্ণকী কাজের ইনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড সোস্যাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান (এএসএমপি) বাস্তবায়নের জন্য পরামর্শক নিয়োগের বিষয়টি বিড ডকুমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করে। এজন্য আরডিপিপিতে ৫৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ের নতুন অঙ্গ যুক্ত করা হয়েছে।,

ভূমি অধিগ্রহণ (ভূমি ভাড়া): ৪০০ কেভি ওভারহেড সঞ্চালন লাইনের রুটটি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রিত জায়গার ওপর দিয়ে গমন করে। ওভারহেড সঞ্চালন লাইনটির রিভার ক্রসিং টাওয়ার, এ্যাংকর টাওয়ার ও ট্রান্সমিশন কম্পাউন্ড স্থাপন করতে তিন হাজার ৪৮৮ বর্গমিটার জায়গার প্রয়োজন। এই জায়গার ভাড়া (প্রতিবছর) দেওয়ার শর্তে চট্টগ্রাম বন্দর সম্মতি দিয়েছে। এ জন্য অধিগ্রহণ বা জমি ক্রয় (জমি ভাড়া) ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুনভাবে আরডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।,

প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান সারাবাংলাকে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় স্থাপিত নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত ৮৮৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালনের মাধ্যমে চট্টগ্
রাম শহর ও ওই অঞ্চলের নির্ভরযোগ্য ও দক্ষতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার অবকাঠাামোর উন্নয়ন করা সম্ভব হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।,

from  Sarabangla https://ift.tt/JxOPR6u