নেত্রকোনা ০২:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুষ্টিয়ায় কারাবন্দীদের শিক্ষার জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

  • আপডেট : ০২:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৮০

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া :

কুষ্টিয়ায় কারাবন্দীদের জন্য নৈতিক, প্রাক-প্রাথমিক ও কর্মমূখী শিক্ষা উদ্যোগ নিয়েছেন জেল সুপার। বন্দিদের নিবন্ধন খাতায় টিপসইয়ের সুযোগ না দিয়ে বাধ্যতামূলক স্বাক্ষর জ্ঞান ও কর্মমূখী শিক্ষার উদ্যোগ সফল হচ্ছে।

২০১৭ সালে জেল সুপার জাকের হোসেন ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেন। বন্দিদের মধ্য থেকে ৫জন শিক্ষিত কয়েদীদের নিয়ে শিক্ষক প্যানেল গঠন করেন। তারা প্রতিদিন সকাল ৮টা – ১০টা পর্যন্ত নিরক্ষর বন্দিদের ক্লাস নেন। জেল সুপার জানান, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘৈাষনা ২০২১ সালে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র এবং ২০৪১ সাল উন্নত রাষ্ট্র পরিনত করতে হলে কারাগারে বন্দীদের অক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দিলে দেশে নিরক্ষর মুক্ত হবে এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

বর্তমান সরকার ডিজিটাল রাষ্ট্র ঘোষনা করেছেন। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশার সহযোগীতায় কুষ্টিয়া জেল সুপার তা বাস্তবায়নে করে চলেছেন। ২০১৭ সালে ৪২০ জনকে স্বাক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দেয়া হয়। ২০১৮ সালে সংখ্যা এক হাজার ৪৬৩ জন। চলতি বছরে ৭৮৫ জন বন্দি পাঠ নিচ্ছেন । জেল সুপার জাকের হোসেন জানান, ১৮০জন কয়েদী ও হাজতী হাউজ ওয়ারিং এর শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যে ২০ জন জামিন পেয়ে নিজ এলাকায় দোকান দিয়ে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিরো (২৩) জানান, তিনি কারাগার থেকে হাউজ ওয়ারিং এর কাজ শিখে জামিনে বের হয়ে নিজ এলাকায় দোকান দিয়ে আত্ম ণির্ভরশীল হচ্ছেন। সে এই প্রশিক্ষনকে সাধুবাদ জানান। কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়ার মাসুম বিল্লার ছেলে তুষার ইমরান (২১) জানান, তিনি কারাগার থেকে হাউজ ওয়ারিং কাজ শিখে জামিন পেয়ে নিজেই দোকান দিয়ে বেকারত্ব দুর করতে সক্ষম হয়েছেন।

তাদের সংসার এখন খুবই ভালোভাবে চলছে। কলম নামের এক হাজতি বলেন, আমি নিরক্ষর ছিলাম । ্পরাধ করে কারাগারে এসে সরকারের মহত উদ্যোগে আমি অক্ষর জ্ঞান পেয়েছি। আমি এখন পড়তে লিখতে ও নাম স্বাক্ষর করতে পারি। ছাদেক নামে এক হাজতী বলেন আমি এখন আমার নাম , আমার পিতার নামসহ সব কিছু লিখতে পারি। আর কোন অপরাধ নয় ফিরে যেতে চাই স্বাভাবিক জীবনে। যে শিক্ষা কারাগার থেকে পেলাম তার স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

এছাড়া বন্দিদের তিন মাস মেয়াদে ইলেক্ট্রিক ওয়ারিং, ৬ মাস মেয়াদি টিভি-ফ্রিজ মেরামত ও তাঁত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের শিক্ষা কর্মসূচী যেন সত্যিকারে সংশোধনগারে পরিনত হতে চলেছে।

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশার সমন্বয়য়ে বন্দিদের হাতকে কর্মের হাতে রুপান্তরিত করতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় দলিল লিখক সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন

কুষ্টিয়ায় কারাবন্দীদের শিক্ষার জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

আপডেট : ০২:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া :

কুষ্টিয়ায় কারাবন্দীদের জন্য নৈতিক, প্রাক-প্রাথমিক ও কর্মমূখী শিক্ষা উদ্যোগ নিয়েছেন জেল সুপার। বন্দিদের নিবন্ধন খাতায় টিপসইয়ের সুযোগ না দিয়ে বাধ্যতামূলক স্বাক্ষর জ্ঞান ও কর্মমূখী শিক্ষার উদ্যোগ সফল হচ্ছে।

২০১৭ সালে জেল সুপার জাকের হোসেন ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ নেন। বন্দিদের মধ্য থেকে ৫জন শিক্ষিত কয়েদীদের নিয়ে শিক্ষক প্যানেল গঠন করেন। তারা প্রতিদিন সকাল ৮টা – ১০টা পর্যন্ত নিরক্ষর বন্দিদের ক্লাস নেন। জেল সুপার জানান, বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘৈাষনা ২০২১ সালে উন্নয়নশীল রাষ্ট্র এবং ২০৪১ সাল উন্নত রাষ্ট্র পরিনত করতে হলে কারাগারে বন্দীদের অক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দিলে দেশে নিরক্ষর মুক্ত হবে এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।

বর্তমান সরকার ডিজিটাল রাষ্ট্র ঘোষনা করেছেন। কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশার সহযোগীতায় কুষ্টিয়া জেল সুপার তা বাস্তবায়নে করে চলেছেন। ২০১৭ সালে ৪২০ জনকে স্বাক্ষরজ্ঞান শিক্ষা দেয়া হয়। ২০১৮ সালে সংখ্যা এক হাজার ৪৬৩ জন। চলতি বছরে ৭৮৫ জন বন্দি পাঠ নিচ্ছেন । জেল সুপার জাকের হোসেন জানান, ১৮০জন কয়েদী ও হাজতী হাউজ ওয়ারিং এর শিক্ষা নিয়ে ইতিমধ্যে ২০ জন জামিন পেয়ে নিজ এলাকায় দোকান দিয়ে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করেছেন।

দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া গ্রামের আবু বক্করের ছেলে হিরো (২৩) জানান, তিনি কারাগার থেকে হাউজ ওয়ারিং এর কাজ শিখে জামিনে বের হয়ে নিজ এলাকায় দোকান দিয়ে আত্ম ণির্ভরশীল হচ্ছেন। সে এই প্রশিক্ষনকে সাধুবাদ জানান। কুষ্টিয়া শহরের আড়–য়াপাড়ার মাসুম বিল্লার ছেলে তুষার ইমরান (২১) জানান, তিনি কারাগার থেকে হাউজ ওয়ারিং কাজ শিখে জামিন পেয়ে নিজেই দোকান দিয়ে বেকারত্ব দুর করতে সক্ষম হয়েছেন।

তাদের সংসার এখন খুবই ভালোভাবে চলছে। কলম নামের এক হাজতি বলেন, আমি নিরক্ষর ছিলাম । ্পরাধ করে কারাগারে এসে সরকারের মহত উদ্যোগে আমি অক্ষর জ্ঞান পেয়েছি। আমি এখন পড়তে লিখতে ও নাম স্বাক্ষর করতে পারি। ছাদেক নামে এক হাজতী বলেন আমি এখন আমার নাম , আমার পিতার নামসহ সব কিছু লিখতে পারি। আর কোন অপরাধ নয় ফিরে যেতে চাই স্বাভাবিক জীবনে। যে শিক্ষা কারাগার থেকে পেলাম তার স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

এছাড়া বন্দিদের তিন মাস মেয়াদে ইলেক্ট্রিক ওয়ারিং, ৬ মাস মেয়াদি টিভি-ফ্রিজ মেরামত ও তাঁত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের শিক্ষা কর্মসূচী যেন সত্যিকারে সংশোধনগারে পরিনত হতে চলেছে।

কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশার সমন্বয়য়ে বন্দিদের হাতকে কর্মের হাতে রুপান্তরিত করতে এ উদ্যোগ নিয়েছেন।