নেত্রকোনা ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বারহাট্টায় সুজিদা আক্তার হত্যাকান্ড ! পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

  • আপডেট : ০২:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৯
  • ৩০৮

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা ঃ

দাদন চেয়ে টাকা না পাওয়া, গালিগালাজ সংক্রান্ত সৃষ্ট ক্ষোভ ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ছেলে আবিদ নূরকে খুন করতে গিয়ে ভূল করে মা সুজিদাকে খুন করেছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার চিরাম ইউনিয়নের খাশিকোনা গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী সুজিদা আক্তারকে (৫০) হত্যাকান্ডে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামী গ্রেফতার, আসামী কর্তৃক ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের মাধ্যমে ‘ক্লু লেস’ হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, খাশিকোনা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে তিন সন্তানের জনক ফজলুর রহমান ফজলু (৩২) অভাব অনটনের কারণে ধার দেনায় ডুবে ছিলো। পাওনাদারের চাপে উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে তার চাচী মৃত সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী দাদন ব্যবসায়ী সুজিদা আক্তারের কাছে ১৫ হাজার টাকা ধার চান। চাচী দেনায় ডুবে থাকা ভাতিজা ফজলুকে ধারে টাকা দিকে অস্বীকৃতি জানায়। ফজলু ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি তারই চাচাতো ভাই সুজিদার ছেলে আবিদ নূরের কাছে বিচার দিলে উল্টো আবিদ নূর ফজলুকে গালিগালাজ করে।

এতে আবিদ নূরের প্রতি ফজলুর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ দিকে খাশিকোনা গ্রামের সামনের বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গ্রামে দুটি গ্রæপের সৃষ্টি হয়। ফজলু ও আবিদ নূর একই গ্রæপের লোক। এ নিয়ে দুই গ্রæপের মধ্যে দ্ব›দ্ব-কলহ ও মামলা মোকাদ্দমা চলে আসছিল। আবিদ নূরের প্রতি ফজলু মিয়ার চরম ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ফজলু মিয়া আবিদ নূরকে খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক গত ২২ অক্টোবর রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে আবিদ নূরের বসত ঘরের পিছনের দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে খাটে শয়নকৃত সুজিদা খাতুনকে আবিদ নূর মনে করে ছুরিকাঘাত করে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজিদাকে মৃত ঘোষনা করেন।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে। পুলিশ তদন্তকালে ফজলুর রহস্য জনক আচরন ও প্রতিপক্ষের ১৭ জনের নামে মামলা দিতে দেয়ার অতি উৎসাহ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। ফজলুকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সে আবেগ আপ্লুত হয়ে আবিদ নূরকে খুন করতে গিয়ে ভূলবশত এ হত্যাকান্ড ঘটনানোর কথা স্বীকার করে। পরে সে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

বারহাট্টায় সুজিদা আক্তার হত্যাকান্ড ! পুলিশ সুপারের প্রেস ব্রিফিং

আপডেট : ০২:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০১৯

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোনা ঃ

দাদন চেয়ে টাকা না পাওয়া, গালিগালাজ সংক্রান্ত সৃষ্ট ক্ষোভ ও প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ছেলে আবিদ নূরকে খুন করতে গিয়ে ভূল করে মা সুজিদাকে খুন করেছে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন নেত্রকোনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার চিরাম ইউনিয়নের খাশিকোনা গ্রামের মৃত সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী সুজিদা আক্তারকে (৫০) হত্যাকান্ডে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামী গ্রেফতার, আসামী কর্তৃক ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের মাধ্যমে ‘ক্লু লেস’ হত্যাকান্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন উপলক্ষ্যে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী বলেন, খাশিকোনা গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে তিন সন্তানের জনক ফজলুর রহমান ফজলু (৩২) অভাব অনটনের কারণে ধার দেনায় ডুবে ছিলো। পাওনাদারের চাপে উপায়ান্তর না দেখে অবশেষে তার চাচী মৃত সিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী দাদন ব্যবসায়ী সুজিদা আক্তারের কাছে ১৫ হাজার টাকা ধার চান। চাচী দেনায় ডুবে থাকা ভাতিজা ফজলুকে ধারে টাকা দিকে অস্বীকৃতি জানায়। ফজলু ক্ষিপ্ত হয়ে বিষয়টি তারই চাচাতো ভাই সুজিদার ছেলে আবিদ নূরের কাছে বিচার দিলে উল্টো আবিদ নূর ফজলুকে গালিগালাজ করে।

এতে আবিদ নূরের প্রতি ফজলুর চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ দিকে খাশিকোনা গ্রামের সামনের বিলে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গ্রামে দুটি গ্রæপের সৃষ্টি হয়। ফজলু ও আবিদ নূর একই গ্রæপের লোক। এ নিয়ে দুই গ্রæপের মধ্যে দ্ব›দ্ব-কলহ ও মামলা মোকাদ্দমা চলে আসছিল। আবিদ নূরের প্রতি ফজলু মিয়ার চরম ক্ষোভ ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা এবং প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই ফজলু মিয়া আবিদ নূরকে খুন করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা মাফিক গত ২২ অক্টোবর রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে আবিদ নূরের বসত ঘরের পিছনের দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে খাটে শয়নকৃত সুজিদা খাতুনকে আবিদ নূর মনে করে ছুরিকাঘাত করে। তাকে আশংকাজনক অবস্থায় নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজিদাকে মৃত ঘোষনা করেন।

ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়ে। পুলিশ তদন্তকালে ফজলুর রহস্য জনক আচরন ও প্রতিপক্ষের ১৭ জনের নামে মামলা দিতে দেয়ার অতি উৎসাহ দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। ফজলুকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে সে আবেগ আপ্লুত হয়ে আবিদ নূরকে খুন করতে গিয়ে ভূলবশত এ হত্যাকান্ড ঘটনানোর কথা স্বীকার করে। পরে সে জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।