সামসুল হক জুয়েল, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ভাংনাহাটি গ্রামে (১৮) দিনের আব্দুল্লাহ আল মাহাদী নামের এক শিশু সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন শিশুটির দাদী এবং বিজয় ফকিরের মা মোসাম্মৎ মলিনা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মলিনা বেগম জানান, তার ছোট ছেলে কলেজছাত্র বিজয় ফকির তার শ্বশুর পৌর এলাকার ভাংনাহাটি গ্রামের মোফাজ্জল হোসেন ও তার পরিবারের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিজের সন্তানের হত্যা মামলায় আটক হয়েছে।
তিনি বলেন, গত শনিবার বিকেলে আমার স্বামী শামছুল হককে ঢাকা হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসি। এসময় আমাদের সাথে আমার ছেলে বিজয় ফকিরও বাড়িতে আসে। বাসায় ফেরার পর থেকে বিজয়ের শাশুড়ি বারবার ফোন দিয়ে তাদের বাড়িতে যেতে বলে।প্রথমে বিজয় তার অসুস্থ বাবাকে রেখে যেতে রাজি হয়নি কিন্তু পরবর্তীতে শ্বাশুরী এবং বউয়ের পিরাপিড়ীতে বিজয় আমার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়।
সকালবেলা বিজয়ের শ্বশুর আমাকে ফোন দিয়ে বলে ডাকাত পাঠিয়েছেন আমার নাতিকে মেরে ফেলেছে আপনার ছেলে। তবে আমার বিশ্বাস আমার ছেলে কখনো তার সন্তানকে হত্যা করতে পারে না বা হত্যার করার কোনো কারণ নেই। সন্তান হওয়ার পর আমার ছেলে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও শুকরিয়া জানিয়ে সকলের দোয়া চেয়ে আনন্দে তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেছে। এত আনন্দের মাঝে থেকে নিজ সন্তানকে হত্যা করবে এটা কল্পনা করা যায় না।
তিনি আরো বলেন, মামলার বিবরণ ও বিভিন্ন ভাবে জানতে পারি ওই রাতে আমার ছেলে তার শ্যালকের সাথে একটি কক্ষে ঘুমায় এবং অন্য একটি কক্ষে তার স্ত্রী মুন্নি ও তার শাশুড়ি ঘুমায়। পরদিন সকালে বাথরুমের বালতিতে আমার নাতির নিথর দেহ পড়ে রয়েছে জানতে পারি। তখনো আমার ছেলে ঘুমিয়ে ছিল। আমার ঘুমন্ত ছেলেকে ডেকে এনে মারধর করে নিজ ছেলের হত্যার দায়ে পুলিশে দেয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ হত্যাকাণ্ডে আমার ছেলে বিজয় ফকির কোনভাবেই জড়িত নয়। আমার নাতিকে হত্যা করে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আপনাদের(সাংবাদিক) মাধ্যমে পুলিশ প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
মামলার বিবরণীতে লেখা হয়েছে আমার ছেলের সাথে স্ত্রীর পারিবারিক কলহ লেগে থাকত। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা ওদের সাথে আমাদের মধুর সম্পর্ক ছিল কখনো ঝগড়া হতো না। বৌমা কখনো রাগ করে বাপের বাড়ি চলে গেছেন এমন ঘটনাও নেই। বরং এই মধুর সম্পর্কের কারণে ছেলের শ্বশুর দুই দফায় দশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা ধার নেয়। এবং আমরা জানতে পারি এই মেয়ের পূর্বের স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে সতেরো লক্ষ টাকা নিয়ে আপোষ মীমাংসা করেছে। এরপর ২০১৪ সালে নিজের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় এলাকার লোকজনদের মিথ্যা মামলা দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।পরে পুলিশ মামলাটি মিথ্যা বলে ফাইনাল করে দেয়। আমাদের কাছ থেকে ধার নেয়া টাকা ও কাবিনের বিশ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর জন্যই এমন ষড়যন্ত্র করতে পারে।
উল্লেখ্যঃ
গত রবিবার (২৭ অক্টোবর ) সকাল ৭টার দিকে উপজেলার ভাংনাহাটি গ্রামে (১৮) দিনের শিশু আব্দুল্লাহ আল মাহাদী নামের এক শিশু সন্তানকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে।