নেত্রকোনা ০৪:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শ্লীলতাহনি সহ্য করতে না পেরে বিষপান, বিনা চিকিৎসায় পাঁচ মাস পর মৃত্যু

কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টার প্রায় পাঁচ মাস পর বিনা চিকিৎসায় মুত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নিল জেসমিন।

নিহিত জেসমিন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের কন্যা।

স্বামী পরিত্যক্তা ও এক সন্তানের জননী জেসমিনকে দীর্ঘদিন যাবৎ কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল প্রতিবেশী গিয়াসউদ্দিন ফরাজীর লম্পট পুত্র বিল্লাল ফরাজী।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট বিকেলে জেসমিন তার মেয়ে নুহা আক্তারকে আনতে পার্শ্ববর্তী রাস্তায় গেলে এক সন্তানের জনক লম্পট বিল্লাল ও তার সহযোগীরা তার পথরোধের পর বিয়ের জন্য জোর জবরদস্তি করে।

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিল্লাল তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির পর মোটর সাইকেলে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে।

এসময় জেসমিনের ডাকচিৎকারে লম্পট বিল্লাল সুযোগ মতো তাকে অপহরণ ও স্বপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বাড়ী ফিরে মারধর, শ্লীলতাহানি, অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে জেসমিন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

মুমূর্ষ অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে েনিয়ে ভর্তি করলে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করে।

প্রায় দুই মাস চিকিৎসার পর ব্যয় ভার বহন করতে না পেরে জেসমিনের দিনমুজুর পিতা তাকে বাড়ী নিয়ে আসে। ঘটনার পর নির্যাতিতার পরিবার কালীগঞ্জ থানায় মামলা করার চেষ্টা করলেও রহস্যজনক কারণে তৎকালীন অফসিার ইনচার্জ আবু বকর মিয়া মামলা না নিয়ে তাদরে ফিরিয়ে দেয়। এরই মধ্যে বিল্লাল মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যায়।

জেসমিনের অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে পুলিশ দীর্ঘ ১ মাস ৭দিন পর তড়িগড়ি করে জেসমিনের মাকে বাদী ও ৭জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা রেকর্ড করে, যার নং ২১ তারখিঃ ১৭/০৯/২০১৯। মামলা রেকর্ড হলেও আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

অবশেষে বিচার না পেয়ে বাড়ীতে প্রায় তিন মাস বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত শনিবার ভোরে মৃত্যুর কোল আশ্রয় নেয় জেসমিন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, চাচা হেকিম মেম্বারের আশ্রয়- প্রশয়ে লম্পট বিল্লাল একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে।

এ ঘটনায় বিল্লাল ও হেকিম মেম্বারকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
করছেন তারা।

ইতিপূর্বেও গত ৩১ জুলাই লম্পট বিল্লাল বড়গাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

এতে ব্যর্থ হয়ে বিল্লাল ওই ছাত্রীর মা শিউলী বেগমকে মারধর ও তাক অপহরণের চেষ্টা করে।

বিল্লালের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এ ব্যাপারে হেকিম ফরাজী (হেকিম মেম্বার) বলনে, থানায় দায়েরকৃত মামলায় আমাকেও আসামী করা হয়েছে। ব্যাপারটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিকরছি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার উপ পরদির্শক সোহলে মোল্লা বলেন, নিহত জেসমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ কাপাসিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে এ মুহুর্তে কিছু বলা
যাচ্ছে না। তবে আসামীরা জামিন রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

শ্লীলতাহনি সহ্য করতে না পেরে বিষপান, বিনা চিকিৎসায় পাঁচ মাস পর মৃত্যু

আপডেট : ০৭:০০:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০

কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় মারধর ও শ্লীলতাহানির ঘটনা সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্মহত্যা চেষ্টার প্রায় পাঁচ মাস পর বিনা চিকিৎসায় মুত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নিল জেসমিন।

নিহিত জেসমিন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের রফিকুল ইসলামের কন্যা।

স্বামী পরিত্যক্তা ও এক সন্তানের জননী জেসমিনকে দীর্ঘদিন যাবৎ কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল প্রতিবেশী গিয়াসউদ্দিন ফরাজীর লম্পট পুত্র বিল্লাল ফরাজী।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০ আগষ্ট বিকেলে জেসমিন তার মেয়ে নুহা আক্তারকে আনতে পার্শ্ববর্তী রাস্তায় গেলে এক সন্তানের জনক লম্পট বিল্লাল ও তার সহযোগীরা তার পথরোধের পর বিয়ের জন্য জোর জবরদস্তি করে।

বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বিল্লাল তাকে মারধর ও শ্লীলতাহানির পর মোটর সাইকেলে তুলে অপহরণের চেষ্টা করে।

এসময় জেসমিনের ডাকচিৎকারে লম্পট বিল্লাল সুযোগ মতো তাকে অপহরণ ও স্বপরিবারে হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বাড়ী ফিরে মারধর, শ্লীলতাহানি, অপহরণ ও প্রাণনাশের হুমকির বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে জেসমিন বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

মুমূর্ষ অবস্থায় পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে েনিয়ে ভর্তি করলে ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করে।

প্রায় দুই মাস চিকিৎসার পর ব্যয় ভার বহন করতে না পেরে জেসমিনের দিনমুজুর পিতা তাকে বাড়ী নিয়ে আসে। ঘটনার পর নির্যাতিতার পরিবার কালীগঞ্জ থানায় মামলা করার চেষ্টা করলেও রহস্যজনক কারণে তৎকালীন অফসিার ইনচার্জ আবু বকর মিয়া মামলা না নিয়ে তাদরে ফিরিয়ে দেয়। এরই মধ্যে বিল্লাল মালয়েশিয়ায় পালিয়ে যায়।

জেসমিনের অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে পুলিশ দীর্ঘ ১ মাস ৭দিন পর তড়িগড়ি করে জেসমিনের মাকে বাদী ও ৭জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা রেকর্ড করে, যার নং ২১ তারখিঃ ১৭/০৯/২০১৯। মামলা রেকর্ড হলেও আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

অবশেষে বিচার না পেয়ে বাড়ীতে প্রায় তিন মাস বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত শনিবার ভোরে মৃত্যুর কোল আশ্রয় নেয় জেসমিন।

ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, চাচা হেকিম মেম্বারের আশ্রয়- প্রশয়ে লম্পট বিল্লাল একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে।

এ ঘটনায় বিল্লাল ও হেকিম মেম্বারকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি
করছেন তারা।

ইতিপূর্বেও গত ৩১ জুলাই লম্পট বিল্লাল বড়গাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে।

এতে ব্যর্থ হয়ে বিল্লাল ওই ছাত্রীর মা শিউলী বেগমকে মারধর ও তাক অপহরণের চেষ্টা করে।

বিল্লালের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এ ব্যাপারে হেকিম ফরাজী (হেকিম মেম্বার) বলনে, থানায় দায়েরকৃত মামলায় আমাকেও আসামী করা হয়েছে। ব্যাপারটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিকরছি।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার উপ পরদির্শক সোহলে মোল্লা বলেন, নিহত জেসমিনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ কাপাসিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পংকজ দত্ত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে এ মুহুর্তে কিছু বলা
যাচ্ছে না। তবে আসামীরা জামিন রয়েছে।