সামসুল হক জুয়েল, গাজীপুর প্রতিনিধিঃ গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ কেন্দ্রে ভয়াবহ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় চলছে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। এক দিকে যেমন জরাজীর্ণ ভবন অন্য দিকে ডাক্তারের স্বল্পতা। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।
শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বরমী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর পার্শ্বে জামিয়া আনওয়ারিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত।
এটি ১৯৫১ সালে নির্মিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, বরমী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দেখতে একটি ভূতুরে ভবনের মতো। দূর থেকে দেখে বোঝার কোনো উপায় নেই যে এটা একটা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নড়বড়ে দরজা-জানালা ছাড়াও বটবৃক্ষসহ নানা পরগাছায় ছেয়ে গেছে ভবনটি।
বিভিন্ন স্থান থেকে ছাঁদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে ভবনটির ।
প্রায় ১৫ বছর যাবত নেই কোনো বিদ্যুৎ সংযোগও। তাই বিদ্যুৎ সংযোগ ছাড়াই চলছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির সেবা কার্যক্রম। দেয়ালে ফাটল এবং ছাঁদের পলেস্তারা খসে পড়ায় বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে হাসপাতালের ভবনেও পানি প্রবেশ করে।
অপর দিকে গরমের সময় বিদ্যুৎ না থাকায় এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রচুর কষ্ট পোহাতে হয়। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এই উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। যে কোনো সময় প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
বরমী ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে চারজনের বিপরীতে তিনি একাই স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। এখানকার মেডিকেল অফিসারকে অন্যত্র পেষণে বদলী করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে এখানে ডাক্তার আসতে চান না তিনি নিজেও ভয়ে ভয়ে থাকেন। যে রুমে তিনি বসে ছিলেন সেই রুমের ছাঁদের পলেস্তারা খসে পড়ে যাচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ সেবাও পাচ্ছেন না এখানে যোগদানের পর থেকেই।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মঈনুল ইসলাম খান জানান, এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঝুঁকিপূর্ণ। আর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া যায় না। দুই বছর পূর্বে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি দেখে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছিলেন তিনি।
বর্তমানে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া পুনরায় নির্মাণ করার জন্য জেলা সিভিল সার্জন এবং জেলা ইঞ্জিনিয়ারকে তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চিঠি পাঠিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
তিনি আরও জানান, ভবনটিতে কাজ করার সময় প্রায়ই রড, পলেস্তারা খসে পড়ে। কিছুদিন আগে স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে চুরিও হয়েছিল। পরে থানায় জিডি করে পুলিশের মাধ্যমে চুরি হওয়া জিনিস উদ্ধার করা হয়।
কিছুদিন আগে মাননীয় স্থানীয় সাংসদের নিকট ১০ শয্যা মা ও শিশু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্বাস্থ্য সেবার জন্য কক্ষ চেয়েছিলেন কিন্তু এমপি মহোদয় এখনো কিছু জানাননি তাই পুরাতন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলছে স্বাস্থ্য সেবা।