নেত্রকোনা ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

  • আপডেট : ০৬:২৫:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯
  • ২০০

মহুয়া জান্নাত মনি,রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।

পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী, পরিষদ সদস্য থোয়াই চিং মারমা, পরিষদ সদস্য ত্রিদীব কান্তি দাশ, পরিষদ সদস্য সান্তনা চাকমা, পরিষদ সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, পরিষদ সদস্য অমিত চাকমা রাজু, পরিষদ সদস্য সাধন মনি চাকমা, পরিষদ সদস্য মনোয়ারা আক্তার জাহান, পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা এবং হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে আপনারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলে এ জেলার উন্নয়ন হবে এবং এ জেলার মানুষের কল্যাণ হবে। আপনাদের সবারই মূল লক্ষ্যটা হবে মানুষের সেবা করা। মুজিববর্ষ (২০২০) কে সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক জেলার প্রত্যেক উপজেলায় “পরিছন্ন গ্রাম-শহর” কার্যক্রমের উপরে চেয়ারম্যান কর্মপরিল্পনাগুলো তুলে ধরেন এবং তা বাস্তবায়নে হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার বলেন, বিগত মাসে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ৯৬০ হলেও চলতি মাসে ৬২৬জন পাওয়া গেছে। সুতরাং আগের তুলনায় চলতি বছরে ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ অনেকাংশে কমেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতেও ডেলিভারি সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কম্যুনিটি ক্লিনিকে এ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৫৮৬জন রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে সকল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, বর্তমানে আমনের মৌসুম চলছে। গত ৯-১০ নভেম্বর ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাব এ জেলায় না পড়ায় শাক-সবজির তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়া নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বলেন, সামনে বোরো মৌসুমে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদেরকে সহায়তার জন্য জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে বীজ ও ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পরিণয় চাকমা বলেন, বর্তমানে সব প্রাইমারী স্কুলে সমাপনী পরীক্ষা চলছে। এবারে ১১ হাজার ৩৮জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া জেলার চেলাছড়া ও আটারকছড়া আবাসিক ছাত্রাবাস সমূহের ব্যয় রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র লেখা হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ইতিমধ্যে দেশের ২০৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জেলা ও উপজেলার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৯৫% নতুন বই চলে এসেছে যা বছরের ১ম দিনেই বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক মেধাবৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে পরিষদের সাথে সভা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এ লক্ষ্যে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত বলেন, অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃত্রিম প্রজনন, চিকিৎসা সেবা, টিকা প্রদান, প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক কার্যক্রম করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গবাদি পশুকে চিকিৎসা ও প্রোডাকশন কার্যক্রম যথারীতি চলছে।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃদাঃ) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, আতœকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেকার যুবদের বর্তমানে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, আসামবস্তী, নানিয়ারচর ও কাপ্তাইয়ের উদ্দ্যানতত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে শীতকালীন শাক-সবজি, ফুলের চারা ও টার্গেট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারা-কলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।

এছাড়া, সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

আপডেট : ০৬:২৫:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৯

মহুয়া জান্নাত মনি,রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা সোমবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা।

পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ছাদেক আহমদ এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য অংসুই প্রু চৌধুরী, পরিষদ সদস্য থোয়াই চিং মারমা, পরিষদ সদস্য ত্রিদীব কান্তি দাশ, পরিষদ সদস্য সান্তনা চাকমা, পরিষদ সদস্য স্মৃতি বিকাশ ত্রিপুরা, পরিষদ সদস্য অমিত চাকমা রাজু, পরিষদ সদস্য সাধন মনি চাকমা, পরিষদ সদস্য মনোয়ারা আক্তার জাহান, পরিষদ সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, পরিষদ সদস্য জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমা এবং হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, সরকারের উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য পরিষদের হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সঙ্গে আপনারা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করলে এ জেলার উন্নয়ন হবে এবং এ জেলার মানুষের কল্যাণ হবে। আপনাদের সবারই মূল লক্ষ্যটা হবে মানুষের সেবা করা। মুজিববর্ষ (২০২০) কে সামনে রেখে পরিচ্ছন্ন বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক জেলার প্রত্যেক উপজেলায় “পরিছন্ন গ্রাম-শহর” কার্যক্রমের উপরে চেয়ারম্যান কর্মপরিল্পনাগুলো তুলে ধরেন এবং তা বাস্তবায়নে হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার বলেন, বিগত মাসে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ৯৬০ হলেও চলতি মাসে ৬২৬জন পাওয়া গেছে। সুতরাং আগের তুলনায় চলতি বছরে ম্যালেরিয়া রোগের প্রকোপ অনেকাংশে কমেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতেও ডেলিভারি সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া কম্যুনিটি ক্লিনিকে এ পর্যন্ত ৩২ হাজার ৫৮৬জন রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে। অন্যদিকে জেনারেল হাসপাতালে সকল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, বর্তমানে আমনের মৌসুম চলছে। গত ৯-১০ নভেম্বর ঘুর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাব এ জেলায় না পড়ায় শাক-সবজির তেমন কোন ক্ষতি হয়নি। এছাড়া নিরাপদ সবজি ও ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তিনি বলেন, সামনে বোরো মৌসুমে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে কৃষকদেরকে সহায়তার জন্য জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ে বীজ ও ইউরিয়া সার মজুদ রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা পরিণয় চাকমা বলেন, বর্তমানে সব প্রাইমারী স্কুলে সমাপনী পরীক্ষা চলছে। এবারে ১১ হাজার ৩৮জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া জেলার চেলাছড়া ও আটারকছড়া আবাসিক ছাত্রাবাস সমূহের ব্যয় রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য মন্ত্রণালয়ে পত্র লেখা হয়েছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, ইতিমধ্যে দেশের ২০৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। জেলা ও উপজেলার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রায় ৯৫% নতুন বই চলে এসেছে যা বছরের ১ম দিনেই বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, জেলা পরিষদ কর্তৃক মেধাবৃত্তি পরীক্ষা গ্রহণের লক্ষ্যে পরিষদের সাথে সভা করে তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এ লক্ষ্যে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ বরুন কুমার দত্ত বলেন, অর্থ বছরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃত্রিম প্রজনন, চিকিৎসা সেবা, টিকা প্রদান, প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠক কার্যক্রম করা হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত গবাদি পশুকে চিকিৎসা ও প্রোডাকশন কার্যক্রম যথারীতি চলছে।

যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অঃদাঃ) মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন, আতœকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বেকার যুবদের বর্তমানে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে।

হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, আসামবস্তী, নানিয়ারচর ও কাপ্তাইয়ের উদ্দ্যানতত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে শীতকালীন শাক-সবজি, ফুলের চারা ও টার্গেট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারা-কলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।

এছাড়া, সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।