নেত্রকোনা ০৬:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করতে হবে- কাদের সিদ্দিকী

  • আপডেট : ০৪:৫৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৯৩

রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল:

মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারের এত সাহস হলো কী করে- তিনি মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়েন? আমি মনে করি, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহান যথাযথ নিয়মে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসার বদলে চরম অপমান করেছেন’। এ ঘটনায় তিনি অবিলম্বে চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারকে বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ও তার ‘চিকিৎসক সনদ’ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।

এরআগে সোমবার(২৫ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়াকে দেখতে যান। হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পরে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহানের সনদ ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে তার কথা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই বিষয়ে যতটুকু সম্ভব তিনি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন’।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক(উপ-পরিচালক) ডা. নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, হাসপাতালে এ বীরমুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়ার বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সদরউদ্দিনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামি বৃহস্পতিবারের(২৮ নভেম্বর) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান দেখিয়ে অপর বীরমুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব তার সবটুকুই করবো।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকিট ছিঁড়ি নাই। একটি মহল অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিক ও সাংগঠনিকভাবে আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা করছে’।

প্রকাশ, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভার মহেলা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়া তার কোমর ও পায়ের জয়েণ্টের হাড় ফেঁটে যাওয়ায় গত ১৭ নভেম্বর চিকিৎসা নিতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ২১ নভেম্বর সকালে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার ভিজিট করতে এসে রোগীর ফাইল দেখেন।

ফাইলে রাখা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়ার ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ’ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘এই সনদ কী রোগীর চিকিৎসা করবে, না ডাক্তার করবে?’- এ কথা বলেই তিনি সনদটি ছিঁড়ে ফেলে দেন। ডাক্তারের এহেন আচরণে আশপাশের লোকজন হতবম্ভ হয়ে পড়েন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করতে হবে- কাদের সিদ্দিকী

আপডেট : ০৪:৫৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯

রাইসুল ইসলাম লিটন, টাঙ্গাইল:

মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন, ‘চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারের এত সাহস হলো কী করে- তিনি মুক্তিযোদ্ধার সনদ ছিঁড়েন? আমি মনে করি, এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে।

বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহান যথাযথ নিয়মে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসার বদলে চরম অপমান করেছেন’। এ ঘটনায় তিনি অবিলম্বে চিকিৎসক শহীদুল্লাহ কায়সারকে বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ও তার ‘চিকিৎসক সনদ’ বাতিলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।

এরআগে সোমবার(২৫ নভেম্বর) সকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়াকে দেখতে যান। হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রশাসকের সাথে সাক্ষাৎ করেন। পরে কাদের সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে উপরোক্ত কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বীরমুক্তিযোদ্ধা শাজাহানের সনদ ছিঁড়ে ফেলার বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে তার কথা হয়েছে। জেলা প্রশাসকের পক্ষে ওই বিষয়ে যতটুকু সম্ভব তিনি করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন’।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক(উপ-পরিচালক) ডা. নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, হাসপাতালে এ বীরমুক্তিযোদ্ধার সনদ ছেঁড়ার বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সদরউদ্দিনকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামি বৃহস্পতিবারের(২৮ নভেম্বর) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান দেখিয়ে অপর বীরমুক্তিযোদ্ধার বিষয়টি আমি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছি। আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব তার সবটুকুই করবো।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকিট ছিঁড়ি নাই। একটি মহল অপপ্রচার চালিয়ে সামাজিক ও সাংগঠনিকভাবে আমাকে হেয় করার অপচেষ্টা করছে’।

প্রকাশ, টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভার মহেলা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়া তার কোমর ও পায়ের জয়েণ্টের হাড় ফেঁটে যাওয়ায় গত ১৭ নভেম্বর চিকিৎসা নিতে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ২১ নভেম্বর সকালে হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারী বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ কায়সার ভিজিট করতে এসে রোগীর ফাইল দেখেন।

ফাইলে রাখা বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শাজাহান ভূঁইয়ার ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ’ দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘এই সনদ কী রোগীর চিকিৎসা করবে, না ডাক্তার করবে?’- এ কথা বলেই তিনি সনদটি ছিঁড়ে ফেলে দেন। ডাক্তারের এহেন আচরণে আশপাশের লোকজন হতবম্ভ হয়ে পড়েন।