নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক।
উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩০৮.০৩ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে পূর্বধলা উপজেলা অবস্থিত। উপজেলায় ভূমির ব্যবহার অনুযায়ী কৃষি জমির পরিমাণ ২৩ হাজার ৪ শত ৩০ হেক্টর। এ অঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আমন মওসুমে উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয় উফশী ১৬হাজার ২শত ৩৫ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ৩ হাজার ২ শত ৫০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ৬৩ হেক্টরসহ মোট ১৯হাজার ৫শ’ ৪৫ হেক্টও জমি।
সময় মতো ধানের ছাড়া রোপন, সঠিক পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক বিতরণ এবং আবহওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বছর পূর্বধলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ অঞ্চলের কৃষকরা আমন ধান কাটা শুরু করেছে।
মৌদাম গ্রামের কৃষক বিল্লাল আকন্দ জানান, এবার আবহওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময় মত বৃষ্টি হওয়ায় হাইব্রীড ধানী গোল্ড ৭০০৬, এগ্রো ধান ১২, উফশী বিনা ৭, ব্রি-৩২, ৩৪, ৪৯, ৫২, ৮৭ ধান এবং স্থানীয় জাত বিরই, নাতিশাইল, বদ্বিরাজ ধানের ফলন ভাল হয়েছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা অনেকটাই হতাশ। মেঘশিমূল গ্রামের কৃষক মোবারক হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কৃষকরা মাথার ঘাঁম পায়ে ফেলে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ফসল ফলায়। কিন্তু তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় না। সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কেনায় এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট বেশী লাভবান হচ্ছে।
ধলা গ্রামের আব্দুল হাই বলেন, গ্রামাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় অধিক মজুরি দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, এবার ব্রি-৩২ ধান ৪৮০/৫০০ টাকায়, ব্রি-৪৯ ধান ৫৬০/৫৮০টাকায় এবং বিনা-৭ ধান ৫৮০/৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম আমন ধানের বাম্পার ফলনের কথা স্বীকার করে বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়, সময় মতো সুষম সার ও কিটনাশক প্রয়োগের ফলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ না দেখা দেয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্যে আমন ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য সরকার কৃষি অফিসকে কৃষকদের তালিকা তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। কৃষকরা যাতে ধান বিক্রয়ে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হন তার জন্য কৃষি অফিস তৎপর রয়েছে।