নেত্রকোনা ০৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পূর্বধলায় সার্ভেয়ার ও ইউপি সদস্যসহ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, ইউপি সদস্য ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ ৫ জনের নামে বসত ঘর ভাংচুর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন এক গৃহবধু।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নেত্রকোনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলার নৈগাঁও গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ হোরে মদিনা (৩২) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ হাদিউল ইসলামকে (৪৫)। তাছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নৈগাঁও গ্রামের সেলিম সরকার (৫০), একই গ্রামের আঃ রাসিদ (৬০), নৈগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ ওরফে তৌহিদ মিয়া (৫৮) ও তার ভাই একই স্কুলের সহকারি শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ওরফে জজ মিয়া (৫২)।

বাদীর আইনজীবী শহিদুল্লাহ জানান, শ্লীলতাহানি,বসতবাড়ি দখল ও মারধরের অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলাটি নেত্রকোনা বিজ্ঞ আমলি আদালতের বিচারিক আশরাফুন্নাহার আমলে নিয়ে জুডিসিয়াল তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানাযায়, নৈগাঁও গ্রামে সে দীর্ঘদিন ধরে নিজ দখলীয় ভূমিতে বসবাস করে আসছিলেন। দখলীয় বসতবাড়ি জবর দখল করে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় আঃ রাসিদ গংরা নানান ফন্দি আঁটছিল।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ হাদিউল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সেলিম সরকারকে নিয়ে হোরে মদিনার বাড়িতে গিয়ে ফিতা দিয়ে মাপপামাপি শুরু করে। এ সময় তার স্বামী দিনমজুর শাহীন বাড়িতে ছিলেন না।

এক পর্যায়ে তারা হোরে মদিনার বসতঘরের মাঝখানে একটি বাঁশের খুঁটি স্থাপন করে। এবিষয়ে তিনি জানতে চাইলে হাদিউল ইসলাম জানান, খুঁটির পশ্চিম পাশের জায়গা সরকারি জায়গা।

মামলার ১নং আসামি হাদিউল ইসলাম অন্যান্য আসামীদের হুকুম দেয় খুঁটির বরাবর পশ্চিম পাশের জায়গার ঘর ভেঙে ফেলার জন্য। বিবাদীগন বসতঘরের বেড়া ভাঙার সময় বাদীনি ফেরাতে গেলে হাদিউল ইসলাম তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং শরীরের কাপড়-চোপড় টেনে খুলে অর্ধ উলঙ্গ করে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়।

ঘরের পশ্চিম পাশে টিনের বেড়া ভাঙ্গা শুরু করলে সেখানে ফেরাতে গেলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শরীরের নানা স্থানে কিল, ঘুসি, নীলা-ফুলা জখম করে। ঘরের বেড়া ভেঙে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে জিজ্ঞেস করলে হাদিউল ইসলাম সরকারি সার্ভেয়ার বলে পরিচয় দেয়।

ভাঙ্গার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোন সদুত্তর না দিয়ে হাদিউল উচ্চবাচ্য করে জবাব দেয় এবিষয়ে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় নাই বলে ঘটনার বিষয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

পরে ওই দিন রাতে সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম বাদী হয়ে তাকে মারধরের অভিযোগ এনে স্থানীয় ২৩ জনসহ অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে পূ্র্বধলা থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য সেলিম সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকেও পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাছাড়া তারা চারটা বা সোয়া চারটা পর্যন্ত বিদ্যালয়েই থাকেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মফিজুল হক বলেন, মামলার বিষয়টি আপনাদের কাছেই প্রথম শুনলাম। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের দাফন সম্পন্ন

পূর্বধলায় সার্ভেয়ার ও ইউপি সদস্যসহ দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেট : ১০:২৭:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

নেত্রকোনার পূর্বধলায় ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, ইউপি সদস্য ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ ৫ জনের নামে বসত ঘর ভাংচুর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন এক গৃহবধু।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে নেত্রকোনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উপজেলার নৈগাঁও গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী মোছাঃ হোরে মদিনা (৩২) বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ হাদিউল ইসলামকে (৪৫)। তাছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য নৈগাঁও গ্রামের সেলিম সরকার (৫০), একই গ্রামের আঃ রাসিদ (৬০), নৈগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহীদুল্লাহ ওরফে তৌহিদ মিয়া (৫৮) ও তার ভাই একই স্কুলের সহকারি শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ওরফে জজ মিয়া (৫২)।

বাদীর আইনজীবী শহিদুল্লাহ জানান, শ্লীলতাহানি,বসতবাড়ি দখল ও মারধরের অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলাটি নেত্রকোনা বিজ্ঞ আমলি আদালতের বিচারিক আশরাফুন্নাহার আমলে নিয়ে জুডিসিয়াল তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানাযায়, নৈগাঁও গ্রামে সে দীর্ঘদিন ধরে নিজ দখলীয় ভূমিতে বসবাস করে আসছিলেন। দখলীয় বসতবাড়ি জবর দখল করে উচ্ছেদ করার উদ্দেশ্যে স্থানীয় আঃ রাসিদ গংরা নানান ফন্দি আঁটছিল।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ হাদিউল ইসলাম স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ সেলিম সরকারকে নিয়ে হোরে মদিনার বাড়িতে গিয়ে ফিতা দিয়ে মাপপামাপি শুরু করে। এ সময় তার স্বামী দিনমজুর শাহীন বাড়িতে ছিলেন না।

এক পর্যায়ে তারা হোরে মদিনার বসতঘরের মাঝখানে একটি বাঁশের খুঁটি স্থাপন করে। এবিষয়ে তিনি জানতে চাইলে হাদিউল ইসলাম জানান, খুঁটির পশ্চিম পাশের জায়গা সরকারি জায়গা।

মামলার ১নং আসামি হাদিউল ইসলাম অন্যান্য আসামীদের হুকুম দেয় খুঁটির বরাবর পশ্চিম পাশের জায়গার ঘর ভেঙে ফেলার জন্য। বিবাদীগন বসতঘরের বেড়া ভাঙার সময় বাদীনি ফেরাতে গেলে হাদিউল ইসলাম তাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং শরীরের কাপড়-চোপড় টেনে খুলে অর্ধ উলঙ্গ করে শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটায়।

ঘরের পশ্চিম পাশে টিনের বেড়া ভাঙ্গা শুরু করলে সেখানে ফেরাতে গেলে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শরীরের নানা স্থানে কিল, ঘুসি, নীলা-ফুলা জখম করে। ঘরের বেড়া ভেঙে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে জিজ্ঞেস করলে হাদিউল ইসলাম সরকারি সার্ভেয়ার বলে পরিচয় দেয়।

ভাঙ্গার কারণ জিজ্ঞেস করলে কোন সদুত্তর না দিয়ে হাদিউল উচ্চবাচ্য করে জবাব দেয় এবিষয়ে তার ব্যাখ্যা দেওয়ার সময় নাই বলে ঘটনার বিষয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়।

পরে ওই দিন রাতে সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলাম বাদী হয়ে তাকে মারধরের অভিযোগ এনে স্থানীয় ২৩ জনসহ অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে পূ্র্বধলা থানায় মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার হাদিউল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ইউপি সদস্য সেলিম সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকেও পাওয়া যায়নি।

অপরদিকে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা জানান, তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাছাড়া তারা চারটা বা সোয়া চারটা পর্যন্ত বিদ্যালয়েই থাকেন।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মফিজুল হক বলেন, মামলার বিষয়টি আপনাদের কাছেই প্রথম শুনলাম। এবিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখছি।