নেত্রকোনা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পীরগাছায় যৌতুকের জন্য নববধূর হাত-পায়ের রগ কর্তন

  • আপডেট : ১০:৩০:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৮৭

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের পীরগাছায়  যৌতুকের দাবিতে নববধূকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার  স্বামী ও  স্বজনদের বিরুদ্ধে।

খবর পেয়ে ২৭ অক্টোবর রোববার সকালে পীরগাছা থানার পুলিশ নববধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়ার সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর পাশ্ববর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। এ সময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার মেয়ে জামাইকে দেন। মেয়ের বিয়ের মেহেদির রঙ মুছতে না মুছতেই জামাই শাহজাদা মিয়া আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং নববধূকে নির্যাতন করতে থাকে।

এরই একপর্যায়ে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিয়ে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া সৃষ্টি হলে স্বামী শাহজাদা মিয়া নববধূ শিউলি বেগমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বজনরা মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নববধূর হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে আসামিরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন।

পরে রাতে স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে নববধূর পায়ে পাঁচটি এবং হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। এ সংবাদ পেয়ে মেয়ের মা রহিমা বেগম ও মামী পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে গত রোববার সকালে নববধূর বাবা ফজলুল হক পীরগাছা থানার পুলিশকে জানালে এসআই রিয়াজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সোমবার হাসপাতালে গেলে মেয়ের বাবা ফজলুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল হাদী মোহাম্মদ জানান, মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করায় সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের দাফন সম্পন্ন

পীরগাছায় যৌতুকের জন্য নববধূর হাত-পায়ের রগ কর্তন

আপডেট : ১০:৩০:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০১৯

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:

রংপুরের পীরগাছায়  যৌতুকের দাবিতে নববধূকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার  স্বামী ও  স্বজনদের বিরুদ্ধে।

খবর পেয়ে ২৭ অক্টোবর রোববার সকালে পীরগাছা থানার পুলিশ নববধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়ার সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর পাশ্ববর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। এ সময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার মেয়ে জামাইকে দেন। মেয়ের বিয়ের মেহেদির রঙ মুছতে না মুছতেই জামাই শাহজাদা মিয়া আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং নববধূকে নির্যাতন করতে থাকে।

এরই একপর্যায়ে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিয়ে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া সৃষ্টি হলে স্বামী শাহজাদা মিয়া নববধূ শিউলি বেগমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বজনরা মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নববধূর হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে আসামিরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন।

পরে রাতে স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে নববধূর পায়ে পাঁচটি এবং হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। এ সংবাদ পেয়ে মেয়ের মা রহিমা বেগম ও মামী পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে গত রোববার সকালে নববধূর বাবা ফজলুল হক পীরগাছা থানার পুলিশকে জানালে এসআই রিয়াজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সোমবার হাসপাতালে গেলে মেয়ের বাবা ফজলুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল হাদী মোহাম্মদ জানান, মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করায় সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।