পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় যৌতুকের দাবিতে নববধূকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও স্বজনদের বিরুদ্ধে।
খবর পেয়ে ২৭ অক্টোবর রোববার সকালে পীরগাছা থানার পুলিশ নববধূকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মুনছুর আলীর ছেলে শাহজাদা মিয়ার সাথে গত ২০ সেপ্টেম্বর পাশ্ববর্তী তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া সরদারপাড়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে শিউলি বেগমের বিয়ে হয়। এ সময় ফজলুল হক নগদ ৮৫ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার মেয়ে জামাইকে দেন। মেয়ের বিয়ের মেহেদির রঙ মুছতে না মুছতেই জামাই শাহজাদা মিয়া আরো দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং নববধূকে নির্যাতন করতে থাকে।
এরই একপর্যায়ে গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিয়ে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া সৃষ্টি হলে স্বামী শাহজাদা মিয়া নববধূ শিউলি বেগমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন এবং হত্যার উদ্দেশ্যে তার স্বজনরা মিলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নববধূর হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়। এ সময় প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে আসামিরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন।
পরে রাতে স্থানীয় এক হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে নববধূর পায়ে পাঁচটি এবং হাতে ১৫টি সেলাই দিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। এ সংবাদ পেয়ে মেয়ের মা রহিমা বেগম ও মামী পেয়ারা বেগম ঘটনাস্থলে গেলে আসামিরা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে বাধা দেয় এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে গত রোববার সকালে নববধূর বাবা ফজলুল হক পীরগাছা থানার পুলিশকে জানালে এসআই রিয়াজুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ওই বাড়ি থেকে নববধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সোমবার হাসপাতালে গেলে মেয়ের বাবা ফজলুল হক বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে ৩৬ দিনের মাথায় যৌতুকের জন্য হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়া হয়েছে। পীরগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আল হাদী মোহাম্মদ জানান, মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করায় সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।
পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।