মেহেদী হাসান,রাবি সংবাদদাতা:
নানা আয়োজনে উদ্যাপিত হলো দেশের প্রথম ছাত্র-সাংবাদিকদের সংগঠন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন ফেস্টুন উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সাংবাদিক ইকবাল হোসেন চৌধুরী।
সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের আহবায়ক ও সংগঠনটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মলয় ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের প্রাক্তন সদস্য শাহ্ আলম চুন্নু। এতে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি হামিদুজ্জামান রবি ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বুলবুল।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কোনো রাজনৈতিক দলের চেয়ারম্যান হওয়ার জন্য উপাচার্য পদ ছাড়তে রাজি আছেন। এমন সংবাদ যখন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় তখন আমরা লজ্জিত হই। আমি জানিনা তিনি লজ্জিত হয়েছেন কি-না। আবার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘টর্চারসেল’ নামক কোনো কক্ষে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে তখনও আমাদের কলংকিত হতে হয়।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, আমাদের সংস্কৃতি ক্যাসিনো নয়। আমাদের সংস্কৃতি হচ্ছে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা। এজন্য বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে যে শুদ্ধি অভিযান হাতে নিয়েছেন সে অভিযানের পক্ষে আমাদের থাকতে হবে। আর এ অভিযান শুধু সরকারের নয়, কোনো দলের নয়, সেটি পুরো দেশের জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান বলেন, সমাজের সংস্কার ও উন্নয়ন করতে হলে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সমাজের নানান সমস্যা খুটিয়ে খুটিয়ে বের করার দায়িত্ব কিন্তু সাংবাদিকদের। ঠিক তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি, শিক্ষা বাণিজ্যসহ নানান সমস্যা সাংবাদিকদের তুলে ধরতে হবে। আমি গঠনমূলক সমালোচকদের পছন্দ করি। এছাড়া সকল পেশা-ই মহান পেশা। কিন্তু কোনো ব্যক্তি খারাপ কাজ করলে তার বদনামটা পেশার উপরেই পড়ে।
তিনি বলেন, একটি সংগঠন শুরু করা এবং সেটি পরিচালনা করা খুব কঠিন কাজ। আজ এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির পঞ্চাশ বছর পূর্তি এমনি এমনি হয়নি। এর পেছনে অনেকের শ্রম রয়েছে। আর একটি সংগঠন এগিয়ে যায় তার সদস্যদের সহযোগিতায়।
অনুষ্ঠানে সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেএম শহীদুল হকের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর অধ্যাপক মলয় ভৌমিক সভাপতির বক্তব্য দেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা ও অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আতিকুল ইসলাম, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ওসমান গণি তালুকদার প্রমুখ।
এদিকে দুপুর আড়াইটায় সিনেট ভবনে সংগঠনের আমন্ত্রিত অতিথি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রাক্তন-বর্তমান সদস্যদের স্মৃতিচারণ শুরু হয়। এ অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ সহযোগিতা করে।