নেত্রকোনা ০১:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতপুরে রাতের আধারে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ধান- বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত কৃষক

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ শুরু থেকেই রয়েছে। দৌলতপুরের কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সরকারী নির্দেশনা থাকলেও সেসব ধান ক্রয় করা হচ্ছে দৌলতপুরের বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। আর এসব ধান ব্যবসায়ী ও তাদের পোষা বাহিনীর কড়া প্রহরায় ট্রলি বোঝাই হয়ে দিনের বেলায় সরবরাহ না করে রাতের আধারে দৌলতপুর খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হচ্ছে। ধান ক্রয়ের প্রকাশ্য এমন অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার ও নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছেন।

এরফলে দৌলতপুরের ধান উৎপাদনকারী কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রয় থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও কৃষকদের অভিমত সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর খাদ্য গুদামে কৃষকদের পরিবর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মনোনীত ব্যবসায়ীরা ধান সরবরাহ করছেন। তবে এক্ষেত্রে ওইসব ব্যবসায়ীরা চাতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন। ধান ক্রয়ে লটারী ও লটারীর বাইরে যেসব কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে সেই সব কৃষকদের কাছ থেকে ধান সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা কৃষক কার্ড সরবরাহ করেছেন। কোন কৃষককে ট্রন প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে আবার কোন কোন কৃষককে হুমকি দিয়ে তাদের কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

জোর করে বা অর্থ দিয়ে সংগ্রহ করা ওইসব কৃষক কার্ড দিয়ে গুটি কয়েক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রশাসনকে ম্যানেজ করে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছেন। যা দৌলতপুরের বাইরে এমনকি জেলার বাইরে থেকে ক্রয় করে ট্রলি ভর্তি করে রাতের আধারে দৌলতপুর খাদ্য গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। সাইদুর রহমান, আব্দুল জব্বার, খালেকসহ কয়েকজন কৃষক জানান, ধান বিক্রয়ের কৃষক তালিকায় তাদের নাম থাকলেও তারা ধান বিক্রয় করতে পারেননি।

তাদের কার্ড স্থানীয় নেতারা ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে সরকারীভাবে দৌলতপুরে ২হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যে ২হাজার ৪২৪জন কৃষককে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে লোক দেখানো লটারি করা হলেও তাৎক্ষনিকভাবে লটারির মাধ্যমে ঘোষিত নির্ধারিত কৃষকদের নাম ধান ক্রয়ের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

যদিও লটারি হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ইচ্ছেমত ব্যক্তিদের নাম আবার ভৌতিক নাম তালিকাভূক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধা আদায়ে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ধান ক্রয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। সোমবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দৌলতপুর খাদ্য গুদামে প্রায় সাড়ে ৬’শ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে বলে দৌলতপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জনিয়েছেন। রাতের আধারে ধান ক্রয়ের কথা স্বীকার করে তিনি আরো জানান, এমন পরিস্থিতি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে রয়েছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের সাথে অচিরেই আলোচনায় বসবো। ধান ক্রয়ে মন্থর গতির বিষয়ে দৌলতপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন- আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত ধান ক্রয় করা যাবে। এখনও অনেক সময় রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

দৌলতপুরে রাতের আধারে খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের ধান- বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত কৃষক

আপডেট : ০২:২৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জানুয়ারী ২০২০

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারিভাবে ধান ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ শুরু থেকেই রয়েছে। দৌলতপুরের কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের সরকারী নির্দেশনা থাকলেও সেসব ধান ক্রয় করা হচ্ছে দৌলতপুরের বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। আর এসব ধান ব্যবসায়ী ও তাদের পোষা বাহিনীর কড়া প্রহরায় ট্রলি বোঝাই হয়ে দিনের বেলায় সরবরাহ না করে রাতের আধারে দৌলতপুর খাদ্য গুদামে সরবরাহ করা হচ্ছে। ধান ক্রয়ের প্রকাশ্য এমন অনিয়মের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নির্বিকার ও নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করছেন।

এরফলে দৌলতপুরের ধান উৎপাদনকারী কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রয় থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র ও কৃষকদের অভিমত সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর খাদ্য গুদামে কৃষকদের পরিবর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মনোনীত ব্যবসায়ীরা ধান সরবরাহ করছেন। তবে এক্ষেত্রে ওইসব ব্যবসায়ীরা চাতুরতার আশ্রয় নিয়েছেন। ধান ক্রয়ে লটারী ও লটারীর বাইরে যেসব কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে সেই সব কৃষকদের কাছ থেকে ধান সরবরাহকারী ব্যবসায়ীরা কৃষক কার্ড সরবরাহ করেছেন। কোন কৃষককে ট্রন প্রতি ২ থেকে ৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে আবার কোন কোন কৃষককে হুমকি দিয়ে তাদের কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

জোর করে বা অর্থ দিয়ে সংগ্রহ করা ওইসব কৃষক কার্ড দিয়ে গুটি কয়েক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী প্রশাসনকে ম্যানেজ করে খাদ্য গুদামে ধান সরবরাহ করছেন। যা দৌলতপুরের বাইরে এমনকি জেলার বাইরে থেকে ক্রয় করে ট্রলি ভর্তি করে রাতের আধারে দৌলতপুর খাদ্য গুদামে ঢুকানো হচ্ছে। সাইদুর রহমান, আব্দুল জব্বার, খালেকসহ কয়েকজন কৃষক জানান, ধান বিক্রয়ের কৃষক তালিকায় তাদের নাম থাকলেও তারা ধান বিক্রয় করতে পারেননি।

তাদের কার্ড স্থানীয় নেতারা ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে নিয়েছেন। চলতি মৌসুমে সরকারীভাবে দৌলতপুরে ২হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যে ২হাজার ৪২৪জন কৃষককে লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়। উপজেলা পরিষদ কনফারেন্স রুমে লোক দেখানো লটারি করা হলেও তাৎক্ষনিকভাবে লটারির মাধ্যমে ঘোষিত নির্ধারিত কৃষকদের নাম ধান ক্রয়ের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

যদিও লটারি হওয়ার দুই সপ্তাহ পর ইচ্ছেমত ব্যক্তিদের নাম আবার ভৌতিক নাম তালিকাভূক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিজেদের সুবিধা আদায়ে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ধান ক্রয় কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। সোমবার রাত সাড়ে ৭টা পর্যন্ত দৌলতপুর খাদ্য গুদামে প্রায় সাড়ে ৬’শ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা হয়েছে বলে দৌলতপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জনিয়েছেন। রাতের আধারে ধান ক্রয়ের কথা স্বীকার করে তিনি আরো জানান, এমন পরিস্থিতি নিয়ে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে রয়েছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের সাথে অচিরেই আলোচনায় বসবো। ধান ক্রয়ে মন্থর গতির বিষয়ে দৌলতপুর খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন- আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারী পর্যন্ত ধান ক্রয় করা যাবে। এখনও অনেক সময় রয়েছে।