মামুনুর রশিদ,ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার হরিরামপুর সাউথকান্দা আরজি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে খুন হয় একই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আবু তাহের। খুন হওয়ার ৫মাস পর ওই ঘটনার রহস্য উদঘাটন করলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ।
পিবিআই সূত্রে জানাযায় গত ৩০ মে সকালে ত্রিশাল থানাধীন আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের কুর্সানগর খিরো নদীর পাড়ে আছাদুজ্জামানের বাঁশ বাগানে স্কুল ছাত্র আবু তাহেরের অর্ধগলিত লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় ্এলাকাবাসী।
ঔই সময় নিহত স্কুল ছাত্র আবু তাহেরের পিতা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ত্রিশাল থানায় গত ৩০জুন মামলা দায়ের করেন ।
ত্রিশাল থানা পুলিশ তদন্তাবস্থায় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পিবিআই ময়মনসিংহ মামলাটির তদন্ত ভার গ্রহণ করেন। পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক, পিপিএম এর সার্বিক তত্ত¡াবধানে তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক সালাহ উদ্দিন আহমেদ তদন্তকালে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় একই গ্রামের মোঃ শহীদুল ইসলাম এর ছেলে মোঃ ফরিদ খান (১৯) কে বৃহস্প্রতিবার টঙ্গী থেকে আটক করা হয়। আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার সহপাঠী ও কিছু বখাটে ছেলে একজন ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় আবু তাহের প্রতিবাদ করে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নিকট মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ইভটিজারদের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য অভিযোগ করে।
এরই জের হিসেবে বখাটেরা আবু তাহেরের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।পরে তারা তাহেরকে পরিকল্পিতভাবে কুর্শ্বানগর সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয় সংলগ্ন খিরো নদীর পাড়ে গত ২৪ জুন সন্ধা সাড়ে ৬ টার দিকে তাকে ডাব খাওয়ানোর কথা বলে ফুসলিয়ে ফাসলিয়ে ডেকে নিয়ে সন্ধ্যার পর ৮ জন মিলে আবু তাহেরকে শ^াসরুদ্ধ করে হত্যা করে।পরে জঙ্গলে বাঁশ ঝাড়ের নিচে লতা পাতা দিয়ে ঢেকে রেখে তার লাশ। জড়িত আসামী ফরিদ বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে অন্যান্য সহযোগী আসামীদের নাম উল্লেখ করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
ইভটিজারদের হাতে নির্মমভাবে হত্যার স্বীকার স্কুল ছাত্র তাহেরের পিতা নজরুল ইসলাম আবেগ জড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের জানান, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় যারা আমার নিরাপরাধ ছেলেকে হত্যা করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি চাই।
আর যেন কোন বাবা মায়ের কুল খালি না হয়। এই হত্যার রহস্য উদঘাটন করাই ময়মনসিংহ পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক স্যারকে অনেক কৃতজ্ঞতা জানায়।
ময়মনসিংহ পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক এ প্রতিনিধিকে জানান, ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আরজি স্কুলের ৮ম শ্রেনীর মেধাবী শিক্ষার্থী আবু তাহেরের এ হত্যা কান্ডটি ঘটেছে । ৮ম শ্রেণীর একজন সহপাঠিকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করে স্কুলের শিক্ষকদের জানালে শিক্ষকরা তার কোন বিচার না করায় ইভটিজার দের হাতে শিক্ষার্থীর প্রান দিতে হলো। এই হত্যা কান্ডের দায় স্কুলের শিক্ষকরা এরাতে পারেন না। আর যেন কোন শিক্ষাথীকে এ ভাবে নির্মম হত্যা কান্ডের স্বীকার না হতে হয় সেজন্য আমাদের সচেতন হতে হবে।