দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার জোড়া খুন মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি তাজুল ইসলাম ওরফে কিলার তাজুল কে ৪ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত এ রিমান্ড আদেশ প্রদান করেন।
তাজুল দুর্গাপুর পৌরসভার বাগিচাপাড়ার এলাকার আজিজুল ইসলামের ছেলে। গত শনিবার (২৬অক্টোবর) গভীর রাতে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মাণিগাঁও গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে তাহিরপুর থানা পুলিশ। ওই সময় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বিপিএম এর জিজ্ঞাসাবাদে গত ২২ অক্টোবর ২০১৫ সালে দুর্গাপুর বড় বাজার এলাকার বিশিষ্ট বস্ত্র ব্যবসায়ি অরুণ কুমার সাহা (৭৪) ও তাঁর স্ত্রী হেনা রাণী সাহা (৬৫) কে গলা কেটে হত্যার সাথে জড়িতের কথা স্বীকার করে তাজুল।
ওই ঘটনার পর অরুন সাহার বড় ছেলে সুজিত সাহা বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় একটি মামলা করেন যার নং ১০(১০)২০১৫ ইং ধারা-৩০২/৩৪ দঃবিঃ। মামলাটি বেশকিছু দিন তদন্ত শেষে অধিক তদন্ত ও এর সাথে প্রকৃত জড়িতদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব পরে ময়মনসিংহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর উপর। বহু মামলার আসামী তাজুল কে গ্রেফতারের পর বৃহ:স্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুর্গাপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হলে বিজ্ঞ আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ময়মনসিংহ পিবিআই কে সোপর্দ করেন।
সন্ত্রাসী তাজুল ভাড়াটে খুনি হিসেবে বহু সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। তার বিরুদ্ধে দুর্গাপুর থানায় মামলা রয়েছে (অস্ত্র মামলা সহ) ৫টি, নেত্রকোনা সদর থানায় ২টি, ময়মনসিংহ সদর থানায় ২টি, তাহিরপুর থানায় ৩টি, মাওনা পুলিশ ফাঁড়িতে ১টি মামলা সহ বহু সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে ৯ মে ২০১৭ সনে দুর্গাপুর বাজারের সুজন টেলিকমের মালিক আকবর হোসেন নেত্রকোনা থেকে দুর্গাপুর আসার পথে প্রান নাশের উদ্দেশ্যে মোটর সাইকেল চালক সহ অপর যাত্রীকে কুপিয়ে আহত করে সাথে থাকা প্রায় ২ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়, প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্গাপুর বাজারের আমলাপাড়া মোড়ে মো. সবুজ মিয়াকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করার সময় অল্পের জন্য বেঁচে যায় সবুজ, ময়মনসিংহের ব্যবসায়ি হত্যার সাথে জড়িত রয়েছেন মর্মে স্বীকার করেছে অপর এক খুনি, শিবগঞ্জ থেকে বিরিশির আসার পথে ব্যবসায়ী ছিদ্দিক কে কুপিয়ে প্রায় ১লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ২০১২ সালে অস্ত্র কেনা বেচার সময় গুলি বিনিময়ের পর ধরা পরলেও পরবর্তিতে জামিনে বেড়িয়ে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে সে।
তাহিরপুর বর্ডার এলাকায় তার শশুরবাড়ী হওয়ায় গরু চুরি, নারী-পাচার, জুয়া খেলা সহ মাদক সম্রাট হিসেবেও তার নাম শোনা যায় ওই এলাকায়। দুর্গাপুর সহ বৃহত্তর ময়মনসিংহে কিলার তাজুল হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে তার। এত কিছুর পরেও কোন অপশক্তির জোরে এ সকল কাজ করে যাচ্ছে তা জানতে চায় এলাকাবাসী। ‘‘শেখ হাসিনার অঙ্গীকার-জুয়া, মাদক ও সন্ত্রাসী ছারখার’’ এরই ধারাবাহিকতায় দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকার ব্যবসায়ী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সহ সর্বস্তরের মানুষের প্রানের দাবী, এমন ঘৃন্য আসামীর পদচারনায় বিজ্ঞ আদালত পাড়া কলঙ্কিত হওয়ার পুর্বে চিহ্নিত সন্ত্রাসী তাজুল ও তার আশ্রয় দাঁতাদের খুঁজে বের করে কঠিনতর শাস্তীর দাবী জানানো হয়।