কুষ্টিয়ার অস্তিত্বহীন ৩৫ চাল মিলের প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। অভিযুক্ত মিলের নামে সরকারি চাল ক্রয়ের অনুমোদনও বাতিল করে দিয়েছে জেলার খাদ্য বিভাগ। বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বরাদ্দ বাতিল করেছেন বলে নিশ্চিত করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক। তবে ভুয়া অস্তিত্বহীন মিলারদের নাম কিভাবে তালিকাভুক্ত করে চাল বরাদ্দ দেয়া হলো সে বিষয় কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে প্রকৃত মিলাররা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মিলাররা জানায় ভুয়া তালিকা করে মোটা অংকের বানিজ্য করতেই খাদ্য বিভাগ এই তালিকা করে চাল বরাদ্দ দিয়েছিলেন। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় খাদ্য বিভাগের দুনীতি প্রকাশ পেয়েছে। তা না হলে মোটা অংকের বানিজ্য হতো কুষ্টিয়া জেলা খাদ্য বিভাগের। এর পরেও জেলা খাদ্য কর্মকর্তা স্ব পদে বহাল রয়েছেন। ‘অস্তিত্বহীন মিলের নামে হাজার টন সরকারি চাল বরাদ্দ’ শিরোনামে বেশ কিছু জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর জের ধরে মন্ত্রণালয় থেকে টেলিফোনে জেলা প্রশাসককে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোয়ার হোসেনকে আহŸায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটি বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা পেয়ে অস্তিত্বহীন মিলের নামে চালের বরাদ্দ বাতিলের সুপারিশ করেন। বাতিল করা মিলের নামে বরাদ্দকৃত চাল অন্য সব মিলের ওপর ভাগ করে পূণরায় বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানান জেলা খাদ্য বিভাগ। তদন্ত কমিটির আহŸায়ক ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মনোয়ার হোসেন জানান, সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (কারিগরি) শাহনেওয়াজ, খাদ্য পরিদর্শক জহুরুল আলম, জেলা অটো চালকল মালিক সমিতির একাংশের সভাপতি ওমর ফারুক ও অপর অংশের সভাপতি আবদুস সামাদ। মঙ্গলবার সারা দিন কমিটির সদস্যরা চারভাগে ভাগ হয়ে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় কমিটির সদস্যরা লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৩৫টি মিলের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি। মঙ্গলবার বিকালেই কমিটির সদস্যরা অস্তিত্বহীন ৩৫ মিলের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন এবং তাদের নামে বরাদ্দকৃত আমন চাল ক্রয়ের অনুমোদন বাতিলের সুপারিশ করেন। বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক মোঃ আসলাম হোসেন অস্তিত্বহীন মিলারদের নামে চালের বরাদ্দ বাতিল করেন বলে নিশ্চিত করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।