জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যুগোপযোগী ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণের পাশাপাশি ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
সেই ধারাবাহিকতায় জতির পিতা সুযোগ্য কন্যা মানানীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে ডিজিটাল যাত্রা।
সেই সূত্র ধরে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলায়ও প্রাথমিক শিক্ষার পালে লেগেছে ডিজিটাল হাওয়া। উপজেলার ১২২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একযোগে জুলাই ২০১৯ মাসে বিজয় ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহার করে পাঠ পরিচালনা শুরু হয়।
একযোগে সকল বিদ্যালয়ে ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহার করে পাঠ পরিচালনার ক্ষেত্রে কালিয়াকৈর উপজেলা বাংলাদেশের প্রথম উপজেলা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আর এই স্বীকৃতি দিয়েছেন স্বয়ং বিজয় ডিজিটাল কন্টেট এর নির্মাতা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বার।
প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়নকল্পে কালিয়াকৈরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নেয়া হয়েছে শিশুবান্ধব নানা উদ্যোগ ইতোমধ্যে সেজেছে স্কুল রংধনু রঙ্গে, শিখবে শিশু মনে প্রাণে।
এই উপজীব্যকে ধারন করে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়কে রংধনু রঙ্গে রাঙ্গানো হয়েছে। ইতোমধ্যে অভিভাবকদের সুবিধার বিষয়টি বিবেচনা করে সকল বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অভিভাবক অপেক্ষাগার নির্মান করা হচ্ছে।
পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন করার জন্য মা সমাবেশের মাধ্যমে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একযোগে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হচ্ছে।
নান্দনিক দৈনিক সমাবেশের মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বছরের প্রথম দিনে শৃঙ্খলাবোধ ও দেশপ্রেম জাগ্রত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি নৈতিকতা ও শুদ্ধাচারবোধ জাগ্রত করার লক্ষ্যে বিদ্যালয়সমূহে স্থাপন করা হয়েছে।
সততা ষ্টোর, মহানুভবতার দেয়াল, লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের উদ্ভুকরনে গ্রহণ করা হয়েছে জাকজমকপূর্ণ নানামুখী উদ্যোগ। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ওদ্ভুদ্ধকরনে স্থাপিত হয়েছে স্থায়ী মঞ্চ।
উপজেলার সকল বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া মেটিং স্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বাস্থ্য ও হাইজেনিক বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে জোরদার করা হয়েছে।
ক্ষুদে ডাক্তার কার্যক্রম কাব স্কাউটিং আন্দোলনে কোমলমতি শিশুদের জনসম্মুখে বক্তৃতা দানে ভীতি দূরীকরনে বিদ্যালয় সমূহে রয়েছে শিশু কেন্দ্রিক বক্তৃতা টেবিল। বিদ্যালয়ের পরিবেশ উন্নয়নে সৃজন করা হয়েছে ফুলের বাগান, জোরদার করা হয়েছে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী, শিশুদের বসার স-ুব্যবস্থা নিশ্চিত করণে উপজেলা প্রশাসন এর পক্ষ হতে প্রদান করা হয়েছে নানা শিক্ষা উপকরণ।
মিড ডে মিল কর্মসুচী বাস্তবায়নে প্রদান করা হয়েছে টিফিন বক্স। ভাষা শহীদনের স্মৃতি অক্ষয় করার প্রয়াসে প্রতিটি স্কুলে শহীদ মিনার স্থাপনের কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। সকল শিক্ষকের এপ্রন পরিধান পূর্বক পাঠদান নিশ্চিত করা হচ্ছে।
উন্নত অবকাঠামো নির্মান নিশ্চিত কল্পে নিয়মিতভাবে নির্মানাধীন বিদ্যালয়সমূহের নির্মান কাজ পরিদর্শন করা হচ্ছে। শিল্পসমৃদ্ধ কালিয়াকৈর-এ কিন্ডার গার্টেন স্কুলের পরিবর্তে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিত করণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মাধ্যমে লিফলেট বিতরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এসব কার্যক্রমের সাথে সাথে চলছে শিক্ষার গুনগত মান অর্জন। মাননীয় সচিব মহোদয়ের ইনোভেশন “ওয়ান ডে, ওয়ান ওয়ার্ড” বিদ্যালয়ে অত্যন্ত কার্যকরিভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে শিক্ষার্থীদের সাবলীলভাবে পঠন ও লিখন শৈলি বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষনকে আকর্ষণীয় ও আনন্দদায়ক করার মানসে বিদ্যালয়সমূহে স্থাপন করা হয়েছে পরিমঞ্চ, রোমাঞ্চকর শিশুশ্রেণী, গ্যালাক্সি কথা।
উপজেলা প্রশাসনের আন্তরিক, যুগোপযোগী ও বৈচিত্রময় কার্যক্রমের ফলে বিদ্যালয় সমূহে বেড়েছে শ^তস্পূর্ত উপস্থিতি। লক্ষ্যনীয়ভাবে কমেছে ঝরেপড়ার হার। নিশ্চিত হচ্ছে এসডিজি-এর অন্যতম লক্ষ্য মানসম্মত শিক্ষা। এভাবে এগিয়ে যাচ্ছে কালিয়াকৈর, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।