নেত্রকোনা ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানে এলাকাবাসী ভেঙ্গে দিলো দশটি চুলাই মদের আখড়া

  • আপডেট : ১১:২০:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৯
  • ৪৫৩

নাঈম আলী, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: চা বাগান এলাকায় মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের সহায়তায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানে এলাকাবাসী ভেঙ্গে দিয়েছে চুলাই মদ তৈরীর দশটি আখড়া। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলমান আন্দোলনে এসব চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গেচুরে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
দেশের বিভিন্ন চা বাগান সমুহে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত হয়ে আসা মাদকের যে বেচা কেনা ছিল তা এখনও অব্যাহত আছে। সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যা হলেই মাদক সেবন করে মাতাল শ্রমিকরা পরিবারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে ঝগড়াঝাটি, হানাহানি, ভাঙচুর সহ নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ফলে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও পরিবার সদস্যদেরকে বিপর্যস্ত করে ফেলছে চা বাগানের মাদকাসক্ত পুরুষরা।
মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী, ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সীতারাম বীন ও জাগরণ যুবফোরাম সভাপতি মোহন রবিদাসের নেতৃত্বে কানিহাটি চা বাগানে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগানের ১০টি শ্রমিক ঘরের চুলাই মদ তৈীর আখড়া ভেঙ্গেচুড়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াসনও উপস্থিত ছিলেন।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ইউনিয়নের মূল ও ফাঁড়ি বাগানে পুলিশি উপস্থিতিতে সামাজিক বৈঠক করে চুলাই মদ তৈরী বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সাথে সাথে চা বাগানে যাতে কোন প্রকার মাদক ব্যবসা না হয় তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এর পরও কিছু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ী নিজ ঘরে চুলাই তৈরী অব্যাহত রেখেছিল। তাই শনিবার অভিযান চালিয়ে সেই চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী আকস্মিক অভিযানে চা বাগানে চুলাই মদের আখড়া গুড়িয়ে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চা শ্রমিকরা খুবই স্বল্প আয়ী। এর মাঝে মাদকে সব টাকা ব্যয় করে নিজের শারীরিক ক্ষতির সাথে পরিবার পরিজনের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে এ দিক নিয়ে সামাজিক বৈঠকে বোঝানো হয়েছিল। তার পরও চুলাই মদ তৈরী হওয়ার এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রথম দফা চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হলো। এর পরও চুলাই মদ তৈরী ও ব্যবসা করলে পরবর্তীতে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানে এলাকাবাসী ভেঙ্গে দিলো দশটি চুলাই মদের আখড়া

আপডেট : ১১:২০:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৯

নাঈম আলী, কমলগঞ্জ প্রতিনিধি: চা বাগান এলাকায় মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবশেষে ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্যের সহায়তায় মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানে এলাকাবাসী ভেঙ্গে দিয়েছে চুলাই মদ তৈরীর দশটি আখড়া। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলমান আন্দোলনে এসব চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গেচুরে গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
দেশের বিভিন্ন চা বাগান সমুহে ব্রিটিশ আমল থেকে প্রচলিত হয়ে আসা মাদকের যে বেচা কেনা ছিল তা এখনও অব্যাহত আছে। সারাদিন কঠোর পরিশ্রমের পর সন্ধ্যা হলেই মাদক সেবন করে মাতাল শ্রমিকরা পরিবারে গিয়ে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে ঝগড়াঝাটি, হানাহানি, ভাঙচুর সহ নানা ধরণের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ফলে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি ছাড়াও পরিবার সদস্যদেরকে বিপর্যস্ত করে ফেলছে চা বাগানের মাদকাসক্ত পুরুষরা।
মাদক বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল আহমদ, শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী, ওয়ার্ড ইউপি সদস্য সীতারাম বীন ও জাগরণ যুবফোরাম সভাপতি মোহন রবিদাসের নেতৃত্বে কানিহাটি চা বাগানে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগানের ১০টি শ্রমিক ঘরের চুলাই মদ তৈীর আখড়া ভেঙ্গেচুড়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ অভিযানে কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াসনও উপস্থিত ছিলেন।
শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এ ইউনিয়নের মূল ও ফাঁড়ি বাগানে পুলিশি উপস্থিতিতে সামাজিক বৈঠক করে চুলাই মদ তৈরী বন্ধ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। সাথে সাথে চা বাগানে যাতে কোন প্রকার মাদক ব্যবসা না হয় তারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। এর পরও কিছু সংখ্যক মাদক ব্যবসায়ী নিজ ঘরে চুলাই তৈরী অব্যাহত রেখেছিল। তাই শনিবার অভিযান চালিয়ে সেই চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী আকস্মিক অভিযানে চা বাগানে চুলাই মদের আখড়া গুড়িয়ে দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চা শ্রমিকরা খুবই স্বল্প আয়ী। এর মাঝে মাদকে সব টাকা ব্যয় করে নিজের শারীরিক ক্ষতির সাথে পরিবার পরিজনের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে এ দিক নিয়ে সামাজিক বৈঠকে বোঝানো হয়েছিল। তার পরও চুলাই মদ তৈরী হওয়ার এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। প্রথম দফা চুলাই মদের আখড়া ভেঙ্গে দেওয়া হলো। এর পরও চুলাই মদ তৈরী ও ব্যবসা করলে পরবর্তীতে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।