নেত্রকোনা ০২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আাটপাড়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

  • আপডেট : ০২:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯
  • ১৭৯

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোণা ঃ নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক।

আটপাড়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে আটপাড়া উপজেলা অবস্থিত। উপজেলায় ভূমির ব্যবহার অনুযায়ী কৃষি জমির পরিমাণ ৩৭ হাজার ৪ শত ৫৩ একর। এ অঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আমন মওসুমে উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়, উফশী ৭ হাজার ৬ শত ৮১ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৬ শত ৩০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ৯০ হেক্টরসহ মোট ৯ হাজার ৪ শত হেক্টর জমি। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত জমিতে আমন আবাদ করা হয়।
সময় মতো ধানের ছাড়া রোপন, সঠিক পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক বিতরণ এবং আবহওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বছর আটপাড়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ অঞ্চলের কৃষকরা আমন ধান কাটা শুরু করেছে।

স্বল্প শুনই গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান জানান, এবার আবহওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময় মত বৃষ্টি হওয়ায় হাইব্রীড ধানী গোল্ড ৭০০৬, এগ্রো ধান ১২, উফশী বিনা ৭, ব্রি-৩২, ৩৪, ৪৯, ৫২, ৮৭ ধান এবং স্থানীয় জাত বিরই, নাতিশাইল, বদ্বিরাজ ধানের ফলন ভাল হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা অনেকটাই হতাশ। স্বরমুশিয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন চঞ্চল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কৃষকরা মাথার ঘাঁম পায়ে ফেলে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ফসল ফলায়।

কিন্তু তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় না। সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কেনায় এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট বেশী লাভবান হচ্ছে। হাতিয়া তারাচাপুর গ্রামের ইদি আমিন বলেন, গ্রাম্য মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ধার দেনা করে আমি ১৮ কাটা জমিতে আমন আবাদ করেছি। ফলন ভাল হলেও বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কি ভাবে ধার দেনা পরিশোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না। দেওগাঁও গ্রামের কৃষক সঞ্জুর রহমান জানান, গ্রামাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় অধিক মজুরি দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, এবার ব্রি-৩২ ধান ৪৮০/৫০০ টাকায়, ব্রি-৪৯ ধান ৫৬০/৫৮০টাকায় এবং বিনা-৭ ধান ৫৮০/৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আটপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান আমন ধানের বাম্পার ফলনের কথা স্বীকার করে বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়, সময় মতো সুষম সার ও কিটনাশক প্রয়োগের ফলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ না দেখা দেয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্যে আমন ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য সরকার কৃষি অফিসকে কৃষকদের তালিকা তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক তালিকা তৈরী করে উপজেলা কৃষি অফিসের ওয়েবসাইডে প্রকাশ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে ধান বিক্রয়ে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হন তার জন্য কৃষি অফিস তৎপর রয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের দাফন সম্পন্ন

আাটপাড়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

আপডেট : ০২:৩৩:৪৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০১৯

এ কে এম আব্দুল্লাহ, নেত্রকোণা ঃ নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলায় এ বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক।

আটপাড়া উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯২ বর্গ কিলোমিটার জায়গা নিয়ে আটপাড়া উপজেলা অবস্থিত। উপজেলায় ভূমির ব্যবহার অনুযায়ী কৃষি জমির পরিমাণ ৩৭ হাজার ৪ শত ৫৩ একর। এ অঞ্চলের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি আমন মওসুমে উপজেলায় আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়, উফশী ৭ হাজার ৬ শত ৮১ হেক্টর, স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৬ শত ৩০ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ৯০ হেক্টরসহ মোট ৯ হাজার ৪ শত হেক্টর জমি। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত জমিতে আমন আবাদ করা হয়।
সময় মতো ধানের ছাড়া রোপন, সঠিক পরিচর্যা, সার ও কীটনাশক বিতরণ এবং আবহওয়া অনুকুলে থাকায় চলতি বছর আটপাড়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকের মুখে দেখা দিয়েছে হাসির ঝিলিক। অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকেই এ অঞ্চলের কৃষকরা আমন ধান কাটা শুরু করেছে।

স্বল্প শুনই গ্রামের কৃষক হামিদুর রহমান জানান, এবার আবহওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময় মত বৃষ্টি হওয়ায় হাইব্রীড ধানী গোল্ড ৭০০৬, এগ্রো ধান ১২, উফশী বিনা ৭, ব্রি-৩২, ৩৪, ৪৯, ৫২, ৮৭ ধান এবং স্থানীয় জাত বিরই, নাতিশাইল, বদ্বিরাজ ধানের ফলন ভাল হয়েছে। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও বাজারে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় তারা অনেকটাই হতাশ। স্বরমুশিয়া গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন চঞ্চল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কৃষকরা মাথার ঘাঁম পায়ে ফেলে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে ফসল ফলায়।

কিন্তু তারা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় না। সরকার সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কেনায় এক শ্রেণির মধ্যস্বত্বভোগী সিন্ডিকেট বেশী লাভবান হচ্ছে। হাতিয়া তারাচাপুর গ্রামের ইদি আমিন বলেন, গ্রাম্য মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ধার দেনা করে আমি ১৮ কাটা জমিতে আমন আবাদ করেছি। ফলন ভাল হলেও বাজারে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কি ভাবে ধার দেনা পরিশোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না। দেওগাঁও গ্রামের কৃষক সঞ্জুর রহমান জানান, গ্রামাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিকের অভাব দেখা দেয়ায় অধিক মজুরি দিয়ে ধান কাটাতে হচ্ছে। বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, এবার ব্রি-৩২ ধান ৪৮০/৫০০ টাকায়, ব্রি-৪৯ ধান ৫৬০/৫৮০টাকায় এবং বিনা-৭ ধান ৫৮০/৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আটপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাসুদুর রহমান আমন ধানের বাম্পার ফলনের কথা স্বীকার করে বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায়, সময় মতো সুষম সার ও কিটনাশক প্রয়োগের ফলে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ না দেখা দেয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে ন্যায্য মূল্যে আমন ধান বিক্রি করতে পারেন তার জন্য সরকার কৃষি অফিসকে কৃষকদের তালিকা তৈরীর নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মোতাবেক তালিকা তৈরী করে উপজেলা কৃষি অফিসের ওয়েবসাইডে প্রকাশ করা হয়েছে। কৃষকরা যাতে ধান বিক্রয়ে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হন তার জন্য কৃষি অফিস তৎপর রয়েছে।