নেত্রকোনা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনিয়ম অভিযোগে বন্ধ ড্রেজিং প্রকল্প চালু করলেন পানি সচিব

  • আপডেট : ০৬:৪৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯
  • ১৯৯

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া , ২৫অক্টোবর,২০১৯:

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদী পূনরুদ্ধার ২য় ধাপ প্রকল্পের বন্ধ থাকা রক্ষনাবেক্ষন ড্রেজিং চালু করলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। শুক্রবার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার মহানগর এলাকায় গড়াই নদীর উৎসমুখে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজারের মাধ্যমে এই নদী খনন কাজ শুরু হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার কৃষিসহ জীব বৈচিত্র ও সুন্দরবন রক্ষায় লবণাক্ততার আগ্রাসন রুখতে এবং শুষ্ক মৌসুমে গড়াইয়ে পানি প্রবাহ নিশ্চিতে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক এই প্রকল্পটি যে কোন মূল্যে সফল বাস্তবায়নের দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন পানি সচিব। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কেন্দ্রিয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ^াস, ড্রেজিং ডিভিশনের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল ওহাব, বাপাউবো কুষ্টিয়ার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য ১৯৯৮ সালে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপের ক্যাপিটাল ড্রেজিং দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটিতে দুই দশকে অদ্যবদি চলমান ২য় ধাপের প্রকল্পসহ এখাতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু নানা অনিয়ম-দুর্ণীতির কারনে প্রকল্পটি থেকে টেকসই সুফল না পাওয়ায় এবছরের ২৬এপ্রিল সরেজমিন পরিদর্শনকালে ক্ষুব্ধ হন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি। সেসময় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে গড়াই নদীর খনন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন নেতৃবৃন্দ।

এর সত্যতা যাচাইয়ে মন্ত্রী নিজে স্ব-চক্ষে দেখতে যান ড্রেজিং প্রকল্প। অভিযোগের দৃশ্যত সত্যতা পাওয়ায় চলমান ড্রেজিং বন্ধ ঘোষনা করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। সে সময় প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমে বলেছিলেন,‘গড়াই নদী আমি দেখেছি, আমি নিজেই খুব দু:খ পেয়েছি। এই গড়াই খনন প্রকল্প যেভাবে বাস্তবায়ণ হচ্ছিল সেটা মোটেই কাঙ্খিত নয়, এটা এই ভাবে চলতে দেয়া যা বর্তমান দৃশ্যে এই নদীটি যেভাবে একটা নালার মতো সংকীর্ন হয়ে আছে এভাবে ১০ বা ২০ মিটার চওড়া নালা নয় বরং এর নাব্যতা রক্ষায় ৩শ মিটার প্রশ^স্ত করে খননসহ পদ্মার পানি প্রবাহে সংযুক্ত করা হবে। এলক্ষে এই প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত তিনটি ড্রেজারের সাথে আরও ২টি যুক্ত হয়ে একসাথে কাজ করবে। সরকারের এই প্রকল্পানুকুলে বরাদ্দকৃত কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অদ্যবধি হতাশা জনক খনন চিত্রের জন্য দায়িদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহন করবেন’।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বন্ধ করে দেয়া গড়াই খননে ২য় ধাপের এই রক্ষনাবেক্ষন ড্রেজিং সুইচ টিপে আনুষ্ঠানিক ভাবে আবার চালু করলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। এসময় তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি এই গড়াই নদী হচ্ছে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলার প্রানের আশ্রয় বা আঁধার। এর পানি প্রবাহ যদি ঠিক থাকে তাহলে এই অঞ্চলে ধেয়ে আসা স্যালাইনিটি কম থাকার সাথে মানুষের জীবন জীবিকা সব কিছুর উপর তার একটা প্রভাব পড়বে। বিশ^ জীব বৈচিত্রের আঁধা সুন্দর বনও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন।

চাষাবাদ থেকে শুরু করে প্রতিটা ক্ষেত্রেই এর একটা প্রত্যক্ষ প্রভাব আছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা এই গড়াই নদীর পানি প্রবাহকে সচল রেখে এর সাথে সরাসরি যা কিছু সম্পৃক্ত আছে তার সবই যাতে স্বাভাবিক গতিতে চলমান থাকে সেবিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়। পরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে খনন প্রকল্পটি বন্ধ থাকায় পলি জমে গড়াইয়ের একেবারে ভরাট হয়ে যায়, নদীল বুক চিরে ধু ধু বালি চর জেগে উঠে। এখন অক্টোবর মাস নদীতে পানি থাকার কথা কিন্তু এখনই দেখা যাচ্ছে নদীর মাঝে বেশ কিছু চর জেগে উঠেছে যা এক মাস পরেই নদীর মাঝে ধুধু বালুচর হয়ে যাবে এবং একেবারেই পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারনেই এবার আগে ভাগেই পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে উদ্যোগ নিয়েছি যাতে সঠিক সময়ে কাজটা শুরু করা যায়। এই খনন কাজটি ৫টা ড্রেজারের মাধ্যমে একযোগে কাজ করবে।

আশা করছি এর ফলে এবার গড়াই নদীতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। আমরা ৩শ মিটার একটা বড় চ্যানেল মেইন্টেইন করব সারা বছর, আর বাকিটা ফ্লাড ব্রেইন থাকবে। সেই সাথে নদীর তীরবর্তী ৬কি:মি ল্যন্ড ডিক্লেমেশন থাকবে। এই কাজ আমরা চালু রাখব একেবারে গড়াই সিস্টেম ধরে এটা খনন করব। সেই সাথে নদীর দুই পাড়ে যেখানে যেখানে তীর রক্ষার প্রয়োজন হবে সেখানে তা করা হবে। এই নদীর সাথে যেখানে শাখা নদীগুলো আছে সেগুলিকেও পুনরুদ্ধার করে সচল করা হবে। এখানে সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদের সকলে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আশা করি এবারের কাজটা আমরা সিরিয়াসলি করতে পারব তাতে আবার আমরা গড়াইকে তার আসল প্রান ফিরিয়ে দিতে পারব।

এসময় বিগত দিনের গড়াই খননে টেকসই সুফল প্রশ্নবিদ্ধের নিরসনে নতুন কোন পরিকল্পনা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, এবারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কাজটি করছি নিজেদের ড্রেজার দিয়ে সরকারী ড্রেজার দিয়ে। এখানে যে ৫টা ড্রেজার কাজ করবে এগুলো সবই সরকারী। এবার বিশেষ নজরদারির মাধ্যমে কাজটি হবে।

এখানে মনিটরিংএ সার্বক্ষনিক ইঞ্জিয়াররা থাকবেন, মন্ত্রী মহোদয়রা আসবেন, আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিবরাও সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখব। আশা করছি যে এবারে আমাদের যে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে তাতে নির্ধারিত ৩৮ কি:মি: ত্রæটিমুক্ত সঠিক খননের মাধ্যমে গড়াই নদীকে সচল করে আমরা একটা টেকসই সুফল পাবো। শেষ কথা হলো যে কোন মূল্যে সারা বছর এই নদীর পানি প্রবাহকে ঠিক রাখতে যা কিছু করার তার সবই করা হবে।

এসময় উপস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¡াবধায়ক পকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, চলতি অর্থ বছরে এই খনন প্রকল্পে ৬০কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় নিজ মেয়েকে হত্যা করে শেষ রক্ষা হলো না মায়ের

অনিয়ম অভিযোগে বন্ধ ড্রেজিং প্রকল্প চালু করলেন পানি সচিব

আপডেট : ০৬:৪৬:১২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৯

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া , ২৫অক্টোবর,২০১৯:

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদী পূনরুদ্ধার ২য় ধাপ প্রকল্পের বন্ধ থাকা রক্ষনাবেক্ষন ড্রেজিং চালু করলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। শুক্রবার সকাল ১০টায় সদর উপজেলার মহানগর এলাকায় গড়াই নদীর উৎসমুখে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব ড্রেজারের মাধ্যমে এই নদী খনন কাজ শুরু হয়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১০ জেলার কৃষিসহ জীব বৈচিত্র ও সুন্দরবন রক্ষায় লবণাক্ততার আগ্রাসন রুখতে এবং শুষ্ক মৌসুমে গড়াইয়ে পানি প্রবাহ নিশ্চিতে সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক এই প্রকল্পটি যে কোন মূল্যে সফল বাস্তবায়নের দৃঢ়তা ব্যক্ত করেন পানি সচিব। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড কেন্দ্রিয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী অখিল কুমার বিশ^াস, ড্রেজিং ডিভিশনের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল ওহাব, বাপাউবো কুষ্টিয়ার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ।

উল্লেখ্য ১৯৯৮ সালে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপের ক্যাপিটাল ড্রেজিং দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটিতে দুই দশকে অদ্যবদি চলমান ২য় ধাপের প্রকল্পসহ এখাতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু নানা অনিয়ম-দুর্ণীতির কারনে প্রকল্পটি থেকে টেকসই সুফল না পাওয়ায় এবছরের ২৬এপ্রিল সরেজমিন পরিদর্শনকালে ক্ষুব্ধ হন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপি। সেসময় সার্কিট হাউস মিলনায়তনে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও জেলা আ’লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে গড়াই নদীর খনন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেন নেতৃবৃন্দ।

এর সত্যতা যাচাইয়ে মন্ত্রী নিজে স্ব-চক্ষে দেখতে যান ড্রেজিং প্রকল্প। অভিযোগের দৃশ্যত সত্যতা পাওয়ায় চলমান ড্রেজিং বন্ধ ঘোষনা করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী। সে সময় প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমে বলেছিলেন,‘গড়াই নদী আমি দেখেছি, আমি নিজেই খুব দু:খ পেয়েছি। এই গড়াই খনন প্রকল্প যেভাবে বাস্তবায়ণ হচ্ছিল সেটা মোটেই কাঙ্খিত নয়, এটা এই ভাবে চলতে দেয়া যা বর্তমান দৃশ্যে এই নদীটি যেভাবে একটা নালার মতো সংকীর্ন হয়ে আছে এভাবে ১০ বা ২০ মিটার চওড়া নালা নয় বরং এর নাব্যতা রক্ষায় ৩শ মিটার প্রশ^স্ত করে খননসহ পদ্মার পানি প্রবাহে সংযুক্ত করা হবে। এলক্ষে এই প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত তিনটি ড্রেজারের সাথে আরও ২টি যুক্ত হয়ে একসাথে কাজ করবে। সরকারের এই প্রকল্পানুকুলে বরাদ্দকৃত কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অদ্যবধি হতাশা জনক খনন চিত্রের জন্য দায়িদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহন করবেন’।

পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বন্ধ করে দেয়া গড়াই খননে ২য় ধাপের এই রক্ষনাবেক্ষন ড্রেজিং সুইচ টিপে আনুষ্ঠানিক ভাবে আবার চালু করলেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। এসময় তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি এই গড়াই নদী হচ্ছে আমাদের দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি জেলার প্রানের আশ্রয় বা আঁধার। এর পানি প্রবাহ যদি ঠিক থাকে তাহলে এই অঞ্চলে ধেয়ে আসা স্যালাইনিটি কম থাকার সাথে মানুষের জীবন জীবিকা সব কিছুর উপর তার একটা প্রভাব পড়বে। বিশ^ জীব বৈচিত্রের আঁধা সুন্দর বনও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন।

চাষাবাদ থেকে শুরু করে প্রতিটা ক্ষেত্রেই এর একটা প্রত্যক্ষ প্রভাব আছে। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কণ্যা শেখ হাসিনা এই গড়াই নদীর পানি প্রবাহকে সচল রেখে এর সাথে সরাসরি যা কিছু সম্পৃক্ত আছে তার সবই যাতে স্বাভাবিক গতিতে চলমান থাকে সেবিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে ১৯৯৬ সালে এই প্রকল্পটি হাতে নেয়। পরে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে দীর্ঘদিন ধরে খনন প্রকল্পটি বন্ধ থাকায় পলি জমে গড়াইয়ের একেবারে ভরাট হয়ে যায়, নদীল বুক চিরে ধু ধু বালি চর জেগে উঠে। এখন অক্টোবর মাস নদীতে পানি থাকার কথা কিন্তু এখনই দেখা যাচ্ছে নদীর মাঝে বেশ কিছু চর জেগে উঠেছে যা এক মাস পরেই নদীর মাঝে ধুধু বালুচর হয়ে যাবে এবং একেবারেই পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারনেই এবার আগে ভাগেই পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে উদ্যোগ নিয়েছি যাতে সঠিক সময়ে কাজটা শুরু করা যায়। এই খনন কাজটি ৫টা ড্রেজারের মাধ্যমে একযোগে কাজ করবে।

আশা করছি এর ফলে এবার গড়াই নদীতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। আমরা ৩শ মিটার একটা বড় চ্যানেল মেইন্টেইন করব সারা বছর, আর বাকিটা ফ্লাড ব্রেইন থাকবে। সেই সাথে নদীর তীরবর্তী ৬কি:মি ল্যন্ড ডিক্লেমেশন থাকবে। এই কাজ আমরা চালু রাখব একেবারে গড়াই সিস্টেম ধরে এটা খনন করব। সেই সাথে নদীর দুই পাড়ে যেখানে যেখানে তীর রক্ষার প্রয়োজন হবে সেখানে তা করা হবে। এই নদীর সাথে যেখানে শাখা নদীগুলো আছে সেগুলিকেও পুনরুদ্ধার করে সচল করা হবে। এখানে সংশ্লিষ্ট যারা আছে তাদের সকলে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে আশা করি এবারের কাজটা আমরা সিরিয়াসলি করতে পারব তাতে আবার আমরা গড়াইকে তার আসল প্রান ফিরিয়ে দিতে পারব।

এসময় বিগত দিনের গড়াই খননে টেকসই সুফল প্রশ্নবিদ্ধের নিরসনে নতুন কোন পরিকল্পনা আছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সচিব বলেন, এবারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে সরাসরি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক কাজটি করছি নিজেদের ড্রেজার দিয়ে সরকারী ড্রেজার দিয়ে। এখানে যে ৫টা ড্রেজার কাজ করবে এগুলো সবই সরকারী। এবার বিশেষ নজরদারির মাধ্যমে কাজটি হবে।

এখানে মনিটরিংএ সার্বক্ষনিক ইঞ্জিয়াররা থাকবেন, মন্ত্রী মহোদয়রা আসবেন, আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিবরাও সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রাখব। আশা করছি যে এবারে আমাদের যে পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে তাতে নির্ধারিত ৩৮ কি:মি: ত্রæটিমুক্ত সঠিক খননের মাধ্যমে গড়াই নদীকে সচল করে আমরা একটা টেকসই সুফল পাবো। শেষ কথা হলো যে কোন মূল্যে সারা বছর এই নদীর পানি প্রবাহকে ঠিক রাখতে যা কিছু করার তার সবই করা হবে।

এসময় উপস্থিত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত¡াবধায়ক পকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, চলতি অর্থ বছরে এই খনন প্রকল্পে ৬০কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।