
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকারী বিধি নিষেধ উপেক্ষা করে মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে ওয়াজ মাহফিল চলছিল। আর সে ওয়াজ মাহফিলকে ঘিরে এলাকার দুই পক্ষের আধ্যিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা। আহত হয়েছেন দু’পক্ষের কমপক্ষে ৬জন।
বুধবার বিকালে পূর্বধলা উপজেলা সদর ইউনিয়নের হিড়িভিটা গ্রামে ঘটেছে এ ঘটনা। সংঘর্ষে আহতরা হলেন, পূর্বধলা উপজেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি হিড়িভিটা গ্রামের ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার আজাদ (৪৫), উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের গিরিয়াসা গ্রামের জালাল উদ্দিন (৩৯), বোয়ালিয়াকান্দা গ্রামের আবু সায়েম (৩২)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় আবু সায়েমকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অপর দুজনকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
অপর পক্ষের আহতরা হলেন, হিড়িভিটা গ্রামের আঃ রাজ্জাক (৬০), খোরশেদ জমা (৪৮) ও মমিন মিয়া (৩৮)। এদের মধ্যে খোরশেদ জমাকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে ও অপর দুইজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানাযায়, পূর্বধলা সদর ইউনিয়নের হিড়িভিটা গ্রামের মফিজিয়া তা’লিমুল কুরআন নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ওই গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা হাজী আব্দুল মালেক তালুকদার ও তার ভাতিজা উপজেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার আজাদ এবং ওই মাদ্রসার পরিচালক হাফেজ ওমর ফারুক সমর্থকদের মধ্যে মাদ্রাসার কমিটি ও এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেও মাদ্রসার পরিচালক হাফেজ ওমর ফারুক আজ বুধবার সেখানে ওয়াজ মাহফিল আহŸান করেন। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে ওই গ্রামের দুলাল তালুকদার ওয়াজ মাহফিল বন্ধের জন্য জেলা ও পুলিশ প্রশাসন বরাবর আবেদন করেন। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। বুধবার বিকালে ওয়াজ মাহফিল চলাকালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে। হাজী আব্দুল মালেক তালুকদারের ভাতিজা জাতীয় পার্টির নেতা ওয়াহিদুজ্জামান তালুকদার আজাদ জানান, প্রতিপক্ষের লোকেরা বিকালে সংঘবদ্ধভাবে তার বাড়িতে গিয়ে তাকে ও তার অনুসারীদের কুপিয়ে আহত করে। এছাড়া বাড়ির আসবাবপত্র ও কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। প্রতিপক্ষের মাদ্রসার পরিচালক হাফেজ ওমর ফারুক জানান, আজাদসহ তার অনুসারীরা সভাস্থলে এসে তাদের উপর হামলা চালায়।
খবর পেয়ে পূর্বধলা থানার ওসি শিবিরুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও উম্মে কুলসুম বলেন, সভার আয়োজকরা আগে থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছ থেকে কোন রকম অনুমতি নেয়নি।
তিনি আরও জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন জাহান সেতুকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি সেখানে গিয়ে ওয়াজ মাহফিলটি বন্ধ করে দিয়ে এসেছেন।
উল্লেখ্য গত বছরও এ মাদ্রাসার ওয়াজ মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিবদমান দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। তখন স্থানীয় প্রশাসন সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করেছিল।

আপনার মতামত লিখুন :