
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার একই পরিবারের ৬ জনের মৃত্যুতে এখন শুধুই কান্নার রুল। যে নবজাতক নিয়ে বাড়ি ফিরার কথা সেসহ সবাই ফিরল লাশ হয়ে। পরিবারের স্বজনদের সান্তনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছিলেন না কেউ। স্তব্ধ সবাই। কারণ এক সঙ্গে এতগুলো লাশ আর আগে এ গ্রামের কেউ দেখেনি।
আজ সিএনজি-বাস মুখোমুখি সংঘর্ষে কেড়ে নেয় সাত জনের প্রাণ। তারা হলেন, নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের ফেছুয়ালেঞ্জি গ্রামের ফারুক মিয়া (২৫), তার স্ত্রী মাসুমা আক্তার (২০), ৩ দিনের নবজাতক, বড় ভাই নিজাম উদ্দিন (২৭), বড় বোন তামান্না আক্তার জুলেখা (৩২), আরেক বড় ভাই আজিম উদ্দিনের স্ত্রী জ্যোৎ¯œা বেগম (২৫) ও ময়মনসিংহ সদরের চরলক্ষীপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে সিএনজির চালক রাকিবুল (৩০)।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার মাসুমার প্রসব ব্যাথা শুরু হলে প্রথমে তাকে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নেওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে স্বাভাবিক প্রসব হয় ফুটফুটে এক ছেলে শিশুর। আজ হাসপাতাল থেকে তারা ছাড়পত্র পেয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন অন্যরা।
এ সময় নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের তারকান্দা উপজেলার গাছতলা নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা শাহজালাল নামক একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হয়। পরে শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি নিহতদের লাশ উদ্ধার করে।
নিহতদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে আসছে। শুধু কান্নার রুল।
ফারুকের মা আয়েশা খাতুন আহাজারি করে বলছেন, আমার সবই শেষ হয়ে গেছে। এখন কাকে নিয়ে বাঁচব। জ্যোৎ¯œার মা রেজিয়া খাতুন আহাজারি করছিলেন আর বারবার মুর্চা যাচ্ছিলেন।
আগিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম রুবেল বলেন, ঘটনাটি হৃদয় বিধারক। পরিবারের স্বজনদের মাধ্যমে লাশ গ্রহণ করা হয়েছে।
শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নয়ন চন্দ্র দাস জানান, নিহতদের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।