
আদর্শিক হৃদয় আজ আঘাতে- আঘাতে -বেদনায় -বেদনায় চিহ্নভিন্ন হয়ে রক্তের বন্যায় বাংলাদেশ ভেসে যাচ্ছে। এটি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের প্রতি আঘাত নয়,এটি আওয়ামী লীগের আদর্শগুলো মুছে ফেলার চক্রান্তের সফলতার ১ম ধাপ।
এটি ১৫ই আগষ্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের চেয়েও ভয়ংকর একটি ঘটনার সাক্ষী করলো বাংলার ইতিহাসকে। এরপরও আওয়ামী লীগের মতো দলটির যদি বোধ উদয় না হয় তাহলে সত্যিই বাংলার ইতিহাসে দুর্যোগের ঘনঘটার অবসান হবে না।
আজকে দলটি সরকারে থাকায় দলের দলীয় আদর্শগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আদর্শিক কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে, আর হাইব্রিডরা ভোগে ব্যস্ত আছে, অন্যদিকে সরকার দলীয় মন্ত্রী,এমপি সাহেবগন সরকারি কাজে ব্যস্ত।
সরকারি গাড়ির শব্দে, বঙ্গবন্ধুর আর্তনাদ তাদের কর্ণে প্রবেশ করছে না, গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া তাদের চোখকে ঝাপসা করে দিয়েছে ফলে ভাস্কর্য ভাঙার শব্দ সকলকে ফাঁকি দিয়ে নিঃশব্দে আলোকিত বাংলাদেশের একটি জনপদ কুষ্টিয়া জেলাকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করে নিরবচ্ছিন্ন ভাস্কর্য ভাঙার কাজকে সমাপ্ত করে সফলতার দ্বার উন্মুক্ত করলো।
লজ্জিত বাঙালি,ছিঃ!যেভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এবারের সংগ্রামের দিক নির্দেশনার তর্জুনীকে অপমানিত করেছিলো ঠিক সেই একইভাবে ভাস্কর্যটির হাতটি ভেঙ্গে দিয়ে উগ্রপন্হীরা বঙ্গবন্ধুর উপর প্রতিশোধ নিল।
হায়রে রাজনীতি,হায়রে দল! তোর নামে কতই না কলংক ? গাড়ী দিলো,বাড়ি দিলো- সম্পদের পাহাড় দিলো, বিনিময়ে কি শুধুই অপবাদ !
বুকে গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত বঙ্গবন্ধুর ছবির চাইতেও বেদনাদায়ক ছবিটি কুষ্টিয়ার ক্ষতবিক্ষত ভাস্কর্যটি। কতটা অসহায় আজ বঙ্গবন্ধু ? বঙ্গবন্ধু একটি প্রতীক,একটি আদর্শ,যেটি শুধুই রাজনৈতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক,এটি কোন ধর্মীয় অনুশাসনকে ব্যাহত করছে না অথচ নির্বাক দাঁড়িয়ে অবলোকন করছে, তারই ধ্বংসাবশেষ !
আজ বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া দলটি সরকারে থাকা অবস্থায় যেভাবে দলীয় আদর্শগুলোকে গলাটিপে হত্যা করছে- সেটি কোন অবস্থায় কাম্য হতে পারে না। তাইতো হয়তোবা বঙ্গবন্ধু ওপারে থেকে বলছেন,,-ওরে বাঙালি জেগে উঠো,উগ্রতা পরিহার করে শান্তির পথে ধাবিত হও।
সময় এসেছে আর দেরি নয়– বঙ্গবন্ধুর প্রতি অবিচারে বাংলা আর বাঙালি জেগে উঠবেই,ত্রিশলাখ শহীদের রক্তস্নাতের অর্জন বাংলাদেশ আজ
প্রতিবাদী কন্ঠে রাজপথের রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখে সকল অপশক্তিকে পরাভূত করবে এটিই প্রত্যাশিত।
লেখকঃ মোঃ এমদাদুল হক বাবুল
প্রভাষক,ইতিহাস বিভাগ,
পূর্বধলা সরকারি কলেজ, পূর্বধলা,নেত্রকোনা।