
ভৌগোলিক অবস্থানগত কারনে পৃথিবী তার ভারসাম্য রক্ষার জন্যই অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন রুপে প্রকৃতিকে সজ্জিত করে মানবকুলকে ছায়াতলে আবৃত করে রেখেছে। প্রকৃতির এই বিচিত্র রুপ মানুষকে বৈচিত্র্যময় করে তোলে আর মানুষ তার স্বীয়কর্মের মাধ্যমে তার বিকাশ ঘটায়।
প্রত্যেক মানব অধ্যুষিত অঞ্চলের মানুষ চায় সুনাগরিক এবং দেশপ্রেমিক মানবহিতৈষী তন্ত্রমুগ্দ্ব শাসক। যেখানে ন্যায় বিচার,সুশাসন এবং ,শোষনমুক্ত সমাজ প্রতিষ্টিত হবে।যেখানে মানব কুলে থাকবে না হানাহানি ভেদাভেদ,সংঘাত আর রক্তপাত প্রতিষ্টিত হবে শান্তি আর সম্প্রীতির সহাবস্থান। । কিন্তু কোথায় জানি একটি জেনেটিক বৈশিষ্ট্যকে নিয়ে স্বরূপে দৃশ্যপটে দৃশ্যমান হয়– পৃথিবীর ছায়াতলে আবৃত বিকৃত সেই চরিত্রটি।
এরা প্রকৃতির নির্মমতাকে ভুলে যেয়ে মানুষে –মানুষে সংঘাত আর হানাহানি সৃষ্টি করে ফায়দা লুটে নেয়। মানুষ এগুলো ভুলে গেলেও প্রকৃতি কিন্তু ঠিকই মনে রাখে। ফলে যুগে যুগেই প্রমানিত হয়েছে ক্ষমতার সহচর্যে গড়ে তোলা অসৎ আর মিথ্যা প্রাচুর্যের ইমারত গুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে মাটির সাথে মিশে গেছে।
সুতরাং দুর্নীতি আর সুশাসন সমান্তরালে চলতে পারে না।তাইতো ছোটবেলায় আমাদের স্যারদের নিকট থেকে শিখেছিলাম “মানুষ বাচে তার কর্মের মাধ্যমে “।সৎকর্ম মানুষকে তৃপ্তি,শান্তি আর বৃত্তি দিয়ে –সফলতার শীর্ষে পৌঁছে দিয়ে নতুন প্রজন্মের আদর্শ হয়ে বেচে থাকে যুগ থেকে যুগান্তরে জনম-জনম ধরে মানব জাতির বিবেককে করে তোলে জাগ্রত।
এটিই বোধ হয় মানবের কাম্য।যার দৃষ্টান্ত মহাত্মা গান্ধী, জহরলাল নেহেরু,ক্ষুদিরাম বসু ,প্রফুল্লচাকী,সুভাষ বসু,চিত্তরঞ্জন,শ্রীমতি ইন্দিরা গান্দী,–সোহরাওয়ার্দী, শেরেবাংলা, ভাসানী,এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।এই মহৎ মানুষগুলো বারবার ব্যক্তির চেয়ে রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের পরামর্শ দিয়ে গেছেন –যা দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং নাগরিকদের আদর্শ হিসাবে অনুকরণীয় হওয়া উচিত। কিন্তু অযোগ্য আর দুর্নীতিবাজদের দ্বারা ক্ষমতাসীনদের তোষণনীতি বারবার জাতিরাষ্ট্রকে করছে ক্ষতিগ্রস্ত।
নৃতাত্বিক বৈশিষ্ট অনুসারে আমরা এই অঞ্চলের মানুষ অষ্ট্রিক নৃগোষ্ঠির অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন মহাদেশীয় মানুষের আগমনে এবং আতিথিয়েতার মিশ্রণের মিলনে এখানকার মানুষগুলো মিশ্র জাতিতে পরিনত হয়েছে।কিন্তু শাসনের নামে শোষকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী এই বীর জাতির বলিষ্ঠ কন্ঠস্বর তার বীরত্বের প্রমান করে বিশ্বকে থমকে দিয়েছে অনেকবার। এটিও এই অঞ্চলের মানুষের ঐতিহাসিক ঐতিহ্যের দলিল। ফরাসী বিপ্লবের বিজয়ে উল্লসিত জনতা বিপ্লবের গতি ধারাকে ভূলন্ঠিত করে বিপ্লবের সন্তানদের হত্যা করে যেভাবে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়েই গিলোটিনে প্রান দিয়েছিলো তেমনি ব্রিটিশ উপনিবেশিকরাও এই অঞ্চলে তাদের বিভেদ নীতি প্রয়োগে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে বিদায়ের পথে হেটে নিজেদের পরাজয়কে নয় বরং সততা,আদর্শ আর মানবতাকে সম্মান দেখিয়েছেন।
তাইতো সেদিন ভারতবাসী ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল মাউন্ট ব্যাটেনকে সম্মান দেখিয়ে যে উদারতা প্রদর্শন করেছিলেন তার পুরষ্কার আজও ভারতবাসী ভোগ করছে–আর অপর অংশ পাকিস্তান রাষ্ট্র তাদের অসহিষ্ণুতার কারনে পুরষ্কারের বদলে তিরস্কারে ভুষিত হয়েই যাচ্ছে।
এদিকে স্বাধীন বাংলাদেশের আর্বিভাব বিশ্ব মানচিত্রে একটি বিস্ময়কর সৃষ্টি । বিশ্বনেতৃত্বকে পেছেনে ফেলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মাত্র নয় মাসে একটি জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব সমকালীন বিশ্ববাসীর কাছে ছিলো বিস্ময়কর তাইতো আজ শত শত নেতৃত্বের সীমানা পেরিয়ে বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসমেটিক নেতৃত্ব এখন শুধু বাঙালির নয় বিশ্বনেতাদেরও আদর্শ হয়ে বেচে আছে এবং থাকবে।
সুতারাং বঙ্গবন্ধু আজ প্রকৃতির শোভা নয় বরং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাংলার ১৮কোটি বাঙ্গালীর হৃদয়ের চিন্তা আর চেতনায় চিরভাস্বর হয়ে জাগ্রত হউক হাজার বছর এটাই বাংলা – বাঙ্গালী আর বাংলাদেশের কাম্য হওয়া উচিত।
লেখক: এমদাদুল হক বাবুল, প্রভাষক পূর্বধলা সরকারি কলেজ।