নেত্রকোনা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অর্থাভাবে হারিয়ে যাচ্ছে দুর্গাপুরের আদিবাসী তাঁত শিল্প

নজরকাড়া ডিজাইন আর মন মাতানো রঙ্গে তাঁতে কাপড় বুনে চলছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার আদিবাসী এলাকা বিরিশিরির গাড়ো মহিলারা। তৈরীকৃত আদিবাসী পোষাক স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি পর্যটকরাও কিনে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। স্থানীয় আদিবাসী মহিলারা অন্যান্য পেশার পাশাপাশি তাঁত শিল্পের কাজে সাচ্ছন্নবোধ করলেও কালের বিবর্তনে বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে তাঁদের প্রিয় তাঁত শিল্প।

এ বিষয়ে বৃহ:স্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, জেলার বিরিশিরি এলাকার একমাত্র তাঁত শিল্পের অবস্থা আগের মতো আর চলছে না। রুগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে মেশিন গুলো। আদিবাসী মহিলা সদস্যগন তাঁদের ঐতিহ্যগত পোষাক ‘‘দকমান্দা’’ তৈরি করতে আশা হারিয়ে ফেলছেন। ওই এলাকার কমবেশি সবাই আদিবাসী তাঁতের সঙ্গে পরিচিত। তাঁতকে পুরোপুরি শিল্পে রূপান্তর করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। নতুন তাঁত মেশিন না থাকায় এখনো পুরাতন মেশিনে কাপড় বোনার কারনে গুনগত মান ও সঠিক সময়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে আদিবাসী তাঁত শ্রমিক শেফা ¤্রং বলেন, ২০১৮ সনে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় আমাদের হারিয়ে যাওয়া শিল্প পুনরায় ফিরে আসলেও বর্তমানে টাকার অভাবে এ শিল্প বিলুপ্তির পথে। নতুন মেশিন না থাকায় কাপড় তৈরীতে বেশি খরচ পড়ায় বাইরে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়। আমাদের এ শিল্পকে রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করলে, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাহিরেও এ পোষাক সরবরাহ করতে পারবো।

আদিবাসী নারী সংগঠন ওয়াইডবিøউসি‘র সাধারণ সম্পাদিকা লুদিয়া রুমা সাংমা বলেন, এক সময় আদিবাসীরা তাঁত শিল্প দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হলেও বর্তমানে টাকার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিবাহী তাঁত শিল্প। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখনো এ শিল্পটিকে বৃহৎ শিল্পে রূপান্তর করা যাবে। এখানে প্রায় ৪০টি মেশিন রয়েছে, সুতা কাটার মেশিন সহ অন্যান্য আধুনিক যন্ত্র ক্রয় করতে পারলে, কম খরচেই তৈরী করা যেতো আদিবাসী পোষাক সহ অন্যান্য পোষক। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানী করা যেতো।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম বলেন, ২০১৮ সনে এ তাঁত শিল্পকে রক্ষার জন্য মননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বেশ কিছু টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি তাঁতের তৈরি কাপড়কে আকর্ষণীয় করতে কাপড় গুলোতে বুটিক ও পুতির কাজ করার তাঁত শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বল্প সুদে সরকারী ঋণ দেয়া হলে এ শিল্পটি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হতো। এ অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

অর্থাভাবে হারিয়ে যাচ্ছে দুর্গাপুরের আদিবাসী তাঁত শিল্প

আপডেট : ০৬:৪১:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২০

নজরকাড়া ডিজাইন আর মন মাতানো রঙ্গে তাঁতে কাপড় বুনে চলছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার আদিবাসী এলাকা বিরিশিরির গাড়ো মহিলারা। তৈরীকৃত আদিবাসী পোষাক স্থানীয় চাহিদার পাশাপাশি পর্যটকরাও কিনে নিচ্ছেন প্রতিনিয়ত। স্থানীয় আদিবাসী মহিলারা অন্যান্য পেশার পাশাপাশি তাঁত শিল্পের কাজে সাচ্ছন্নবোধ করলেও কালের বিবর্তনে বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে তাঁদের প্রিয় তাঁত শিল্প।

এ বিষয়ে বৃহ:স্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, জেলার বিরিশিরি এলাকার একমাত্র তাঁত শিল্পের অবস্থা আগের মতো আর চলছে না। রুগ্ন অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে মেশিন গুলো। আদিবাসী মহিলা সদস্যগন তাঁদের ঐতিহ্যগত পোষাক ‘‘দকমান্দা’’ তৈরি করতে আশা হারিয়ে ফেলছেন। ওই এলাকার কমবেশি সবাই আদিবাসী তাঁতের সঙ্গে পরিচিত। তাঁতকে পুরোপুরি শিল্পে রূপান্তর করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। নতুন তাঁত মেশিন না থাকায় এখনো পুরাতন মেশিনে কাপড় বোনার কারনে গুনগত মান ও সঠিক সময়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে আদিবাসী তাঁত শ্রমিক শেফা ¤্রং বলেন, ২০১৮ সনে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহায়তায় আমাদের হারিয়ে যাওয়া শিল্প পুনরায় ফিরে আসলেও বর্তমানে টাকার অভাবে এ শিল্প বিলুপ্তির পথে। নতুন মেশিন না থাকায় কাপড় তৈরীতে বেশি খরচ পড়ায় বাইরে বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হয়। আমাদের এ শিল্পকে রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিনা সুদে ঋণ প্রদান করলে, স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বাহিরেও এ পোষাক সরবরাহ করতে পারবো।

আদিবাসী নারী সংগঠন ওয়াইডবিøউসি‘র সাধারণ সম্পাদিকা লুদিয়া রুমা সাংমা বলেন, এক সময় আদিবাসীরা তাঁত শিল্প দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হলেও বর্তমানে টাকার অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে ঐতিবাহী তাঁত শিল্প। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখনো এ শিল্পটিকে বৃহৎ শিল্পে রূপান্তর করা যাবে। এখানে প্রায় ৪০টি মেশিন রয়েছে, সুতা কাটার মেশিন সহ অন্যান্য আধুনিক যন্ত্র ক্রয় করতে পারলে, কম খরচেই তৈরী করা যেতো আদিবাসী পোষাক সহ অন্যান্য পোষক। এতে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানী করা যেতো।

এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম বলেন, ২০১৮ সনে এ তাঁত শিল্পকে রক্ষার জন্য মননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বেশ কিছু টাকা অনুদান দেয়া হয়েছে। স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষার পাশাপাশি তাঁতের তৈরি কাপড়কে আকর্ষণীয় করতে কাপড় গুলোতে বুটিক ও পুতির কাজ করার তাঁত শ্রমিকদের উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি স্বল্প সুদে সরকারী ঋণ দেয়া হলে এ শিল্পটি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হতো। এ অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।