নেত্রকোনা ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৫ বছর বয়সে ৬০ বিয়ে করা বক্কর অবশেষে পূর্বধলা থানা পুলিশের হাতে আটক

  • আপডেট : ০৯:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৯
  • ১০২৭

মো: আব্দুল হান্নান রঞ্জন, নেত্রকোণা: 

ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ৪৫ বছর বয়সে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন পেশা দেখিয়ে ৬০টি বিয়ে করেছেন আবু বক্কর নামে এক প্রতারক ব্যক্তি অবশেষে শেষ স্ত্রীর মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। বিভিন্না এলাকায় অসহায় মেয়েদের বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিলো তার নেশা, পেশা ও ব্যবসা।

বহুবিবাহের ধারাবাহিকতায়, সর্বশেষে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ঔটি গ্রামের মাস্টার্স পড়ুয়া রোজী খানমকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে বিয়ে করে। এটা ছিল তার ৬০তম বিয়ে এবং মাস্টার্স পড়ুয়া রোজী খানম হয়েছেন তার ৬০তম স্ত্রী যার মামলায় ধরা পড়েছেন প্রতারক বক্কর। রোজী খানমের এক আত্মীয়ের সাথে আবু বক্কর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ওই এলাকায় যাতায়াত করতো। সে ইনসেপ্টা ফার্মাসিস্ট জেলা এরিয়া ম্যানেজার এবং অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে নাম শাহিন আলম, পিতা আক্রাম, গ্রাম-কুতুবেরচর, সাধুরপাড়া, বকসীগঞ্জ, জামালপুর ঠিকানা ব্যবহার করে রোজীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর রোজীর বাড়িতেই বসবাস করে বক্কর।

এ সময় রোজীর পরিবারের কাছে যৌতুকের ২ লাখ টাকা দাবি করে। এতে রোজীর পরিবার অপারগতা প্রকাশ করলে প্রতারক আবু বক্কর কৌশলে শ্যালককে ওষুধ কোম্পানির চাকরি দেওয়ার কথা বলে শশুরের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয় এবং তাদের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে স্ত্রী রোজীর পরিবার খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে বক্কর। এ ঘটনায় রোজী বেগম বাদী হয়ে প্রতারক বক্করের বিরুদ্ধে নেত্রকোণার পূর্বধলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

রোজী খানমের মামলার প্রেক্ষিতে পূর্বধলা থানা পুলিশ এক অভিযান চালিয়ে আজ রবিবার ভোররাতে জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আবু বক্করকে আটক করে। আটককৃত আবু বক্কর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। আটক প্রতারক আবু বক্কর জানায়, সে ৬০টি বিয়ে করলেও তার সাতটি সন্তান রয়েছে। শুধু টাকার লোভে এতোগুলো বিয়ে করেছে। সব জায়গায় টাকা পাওয়ার পরই ফেলে এসেছে বিবাহিত স্ত্রীদের।

সে বিয়ে করতে পেশা হিসেবে নিজেকে কখনো ব্যবসায়ী, রিপেজেন্টেটিভ, উর্ধতন কর্মকর্তা, অবিবাহিত ও বৌ মারা গেছে এসব কথা বলে ভিন্ন নাম-ঠিকানা ব্যবহার করতো। নিজ উপজেলা ইসলামপুরের ঠিকানা সে কখনই ব্যবহার করতো না। বর্তমানে নিজের বাড়িতে প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমসহ দুই স্ত্রী ও সাত সন্তান রয়েছে। পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহিদুর রহমান জানান, প্রতারণার মাধ্যমে আবু বক্কর ৬০টি বিয়ে করার কথা নিজে স্বীকার করেছে। পূর্বধলা থানা পুলিশ রোজী খানমের মামলায় ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে পূর্বধলা থানায় নিয়ে এসেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

৪৫ বছর বয়সে ৬০ বিয়ে করা বক্কর অবশেষে পূর্বধলা থানা পুলিশের হাতে আটক

আপডেট : ০৯:৩৬:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৯

মো: আব্দুল হান্নান রঞ্জন, নেত্রকোণা: 

ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ৪৫ বছর বয়সে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন পেশা দেখিয়ে ৬০টি বিয়ে করেছেন আবু বক্কর নামে এক প্রতারক ব্যক্তি অবশেষে শেষ স্ত্রীর মামলায় পুলিশের হাতে আটক হয়েছে। বিভিন্না এলাকায় অসহায় মেয়েদের বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেয়াই ছিলো তার নেশা, পেশা ও ব্যবসা।

বহুবিবাহের ধারাবাহিকতায়, সর্বশেষে নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ঔটি গ্রামের মাস্টার্স পড়ুয়া রোজী খানমকে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে বিয়ে করে। এটা ছিল তার ৬০তম বিয়ে এবং মাস্টার্স পড়ুয়া রোজী খানম হয়েছেন তার ৬০তম স্ত্রী যার মামলায় ধরা পড়েছেন প্রতারক বক্কর। রোজী খানমের এক আত্মীয়ের সাথে আবু বক্কর পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ওই এলাকায় যাতায়াত করতো। সে ইনসেপ্টা ফার্মাসিস্ট জেলা এরিয়া ম্যানেজার এবং অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে নাম শাহিন আলম, পিতা আক্রাম, গ্রাম-কুতুবেরচর, সাধুরপাড়া, বকসীগঞ্জ, জামালপুর ঠিকানা ব্যবহার করে রোজীকে বিয়ে করে। বিয়ের পর রোজীর বাড়িতেই বসবাস করে বক্কর।

এ সময় রোজীর পরিবারের কাছে যৌতুকের ২ লাখ টাকা দাবি করে। এতে রোজীর পরিবার অপারগতা প্রকাশ করলে প্রতারক আবু বক্কর কৌশলে শ্যালককে ওষুধ কোম্পানির চাকরি দেওয়ার কথা বলে শশুরের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে গাঁ ঢাকা দেয় এবং তাদের সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে স্ত্রী রোজীর পরিবার খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারে ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছে বক্কর। এ ঘটনায় রোজী বেগম বাদী হয়ে প্রতারক বক্করের বিরুদ্ধে নেত্রকোণার পূর্বধলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।

রোজী খানমের মামলার প্রেক্ষিতে পূর্বধলা থানা পুলিশ এক অভিযান চালিয়ে আজ রবিবার ভোররাতে জামালপুর জেলার ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আবু বক্করকে আটক করে। আটককৃত আবু বক্কর উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে। আটক প্রতারক আবু বক্কর জানায়, সে ৬০টি বিয়ে করলেও তার সাতটি সন্তান রয়েছে। শুধু টাকার লোভে এতোগুলো বিয়ে করেছে। সব জায়গায় টাকা পাওয়ার পরই ফেলে এসেছে বিবাহিত স্ত্রীদের।

সে বিয়ে করতে পেশা হিসেবে নিজেকে কখনো ব্যবসায়ী, রিপেজেন্টেটিভ, উর্ধতন কর্মকর্তা, অবিবাহিত ও বৌ মারা গেছে এসব কথা বলে ভিন্ন নাম-ঠিকানা ব্যবহার করতো। নিজ উপজেলা ইসলামপুরের ঠিকানা সে কখনই ব্যবহার করতো না। বর্তমানে নিজের বাড়িতে প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমসহ দুই স্ত্রী ও সাত সন্তান রয়েছে। পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ তাওহিদুর রহমান জানান, প্রতারণার মাধ্যমে আবু বক্কর ৬০টি বিয়ে করার কথা নিজে স্বীকার করেছে। পূর্বধলা থানা পুলিশ রোজী খানমের মামলায় ইসলামপুর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে আটক করে পূর্বধলা থানায় নিয়ে এসেছে।