নেত্রকোনা ০৭:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজের বিয়ে নিজেই ঠেকাল স্কুলছাত্রী

  • আপডেট : ০৯:১৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২
  • ৪০

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : পুলিশে ফোন দিয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাল আছিয়া আক্তার (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। পরে ওই স্কুলছাত্রীর পড়ালেখার দায়িত্ব নেন ওসি। আছিয়া আক্তার ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের দরগাগট্টি গ্রামের আতিক মাতুব্বরের মেয়ে। সে জয়ঝাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সোমবার ফরিদপুর কোর্টে তার বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে। ,

স্কুলছাত্রী আছিয়া জানায়, আমার লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা। আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। কিন্তু আমার পরিবার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে ঠিক করে। বিষয়টি আমি নিজে ওসি স্যারকে ফোনে জানালে তিনি আমার বিয়ে ঠেকায়। ওসি স্যার আমার লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। তিনি আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে স্কুলে যান। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে আমার পড়ালেখার সমস্ত খরচ দিতে চান। ওসি স্যারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ,

আছিয়ার বাবা আতিক মাতুব্বর পূর্বকন্ঠকে বলেন, আমার মেয়ে আছিয়া নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। দুই তিন দিন আগে তাকে দেখতে আসে পাত্রপক্ষ। তাদের পছন্দ হওয়ার পর তারা আমার মেয়েকে নাকফুল পরিয়ে যান। তবে বিয়ের দিন তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। অভিযোগ পেয়ে আজ রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে সালথা থানার ওসি আমাদের থানায় ডেকে নিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। পরে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে আমরা চলে আসি। দুপুরে ওসি আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবেন বলে জানান। এতে আমরা খুশি।

জয়ঝাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান মো. মিরাজ আলী পূর্বকন্ঠকে বলেন, সালথা থানার ওসি মেয়েটাকে নিয়ে আমার স্কুলে উপস্থিত হন। তিনি আমাদের জানান- মেয়েটার বাল্য বিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। পরে ওসি মেয়েটার লেখাপড়ার খরচ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, একটা মেয়ের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য।

সালথা থানার ওসি মো. শেখ সাদিক পূর্বকন্ঠকে বলেন, আছিয়া আজ রোববার সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু পিতামাতা ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আমাকে বিয়ে দিতে চাইছে। সোমবার ফরিদপুর কোর্টে নিয়ে তাকে কাবিন করবে এবং বিয়ে দিবে। এই সংবাদ পেয়ে একজন এসআইকে ওই বাড়িতে পাঠাই। তিনি সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আছিয়াসহ তার পরিবারকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাদের বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে ধারণা দেই এবং আছিয়া যে লেখাপড়া করে মানুষ হতে চায়, তাকে সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি।

তিনি আরও বলেন, এখন থেকে আছিয়ার সমস্ত লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব আমি গ্রহণ করব। আমি যখন চলে যাব তখন যে অফিসার আসবে, তাকে মেসেজ দিয়ে যাব এবং আমি নিজেও সব সময় ওর খোঁজখবর রাখব।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি।

পূর্বধলায় উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী

নিজের বিয়ে নিজেই ঠেকাল স্কুলছাত্রী

আপডেট : ০৯:১৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০২২

সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : পুলিশে ফোন দিয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাল আছিয়া আক্তার (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী। পরে ওই স্কুলছাত্রীর পড়ালেখার দায়িত্ব নেন ওসি। আছিয়া আক্তার ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের দরগাগট্টি গ্রামের আতিক মাতুব্বরের মেয়ে। সে জয়ঝাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সোমবার ফরিদপুর কোর্টে তার বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল বলে জানা গেছে। ,

স্কুলছাত্রী আছিয়া জানায়, আমার লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা। আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। কিন্তু আমার পরিবার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে ঠিক করে। বিষয়টি আমি নিজে ওসি স্যারকে ফোনে জানালে তিনি আমার বিয়ে ঠেকায়। ওসি স্যার আমার লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। তিনি আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে স্কুলে যান। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে আমার পড়ালেখার সমস্ত খরচ দিতে চান। ওসি স্যারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। ,

আছিয়ার বাবা আতিক মাতুব্বর পূর্বকন্ঠকে বলেন, আমার মেয়ে আছিয়া নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। দুই তিন দিন আগে তাকে দেখতে আসে পাত্রপক্ষ। তাদের পছন্দ হওয়ার পর তারা আমার মেয়েকে নাকফুল পরিয়ে যান। তবে বিয়ের দিন তারিখ এখনো ঠিক হয়নি। অভিযোগ পেয়ে আজ রোববার (২০ নভেম্বর) সকালে সালথা থানার ওসি আমাদের থানায় ডেকে নিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। পরে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে আমরা চলে আসি। দুপুরে ওসি আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবেন বলে জানান। এতে আমরা খুশি।

জয়ঝাপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান মো. মিরাজ আলী পূর্বকন্ঠকে বলেন, সালথা থানার ওসি মেয়েটাকে নিয়ে আমার স্কুলে উপস্থিত হন। তিনি আমাদের জানান- মেয়েটার বাল্য বিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। পরে ওসি মেয়েটার লেখাপড়ার খরচ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, একটা মেয়ের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য।

সালথা থানার ওসি মো. শেখ সাদিক পূর্বকন্ঠকে বলেন, আছিয়া আজ রোববার সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু পিতামাতা ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আমাকে বিয়ে দিতে চাইছে। সোমবার ফরিদপুর কোর্টে নিয়ে তাকে কাবিন করবে এবং বিয়ে দিবে। এই সংবাদ পেয়ে একজন এসআইকে ওই বাড়িতে পাঠাই। তিনি সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আছিয়াসহ তার পরিবারকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তাদের বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে ধারণা দেই এবং আছিয়া যে লেখাপড়া করে মানুষ হতে চায়, তাকে সেই সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি।

তিনি আরও বলেন, এখন থেকে আছিয়ার সমস্ত লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব আমি গ্রহণ করব। আমি যখন চলে যাব তখন যে অফিসার আসবে, তাকে মেসেজ দিয়ে যাব এবং আমি নিজেও সব সময় ওর খোঁজখবর রাখব।