নেত্রকোনা ০৫:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেন্দুয়ায় অবিভক্ত বাংলার অর্থমন্ত্রীর কোটি টাকা মূল্যের পৈতৃক বাড়িটি রক্ষার দাবী এলাকাবাসীর

  • আপডেট : ০৭:২৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ২৬৩

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ঃ

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া গ্রামে অবস্থিত তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার অর্থমন্ত্রী প্রয়াত নলিনী রঞ্জন সরকারের কোটি টাকা মূল্যের পৈতৃক বাড়িটি। ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটি সরকারের নানা অবহেলা ও অযতেœর কারনে অস্থাবর সম্পত্তি তছরুপ হয়ে আজ ধংসের পথে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি এই বাড়িটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী মদন উপজেলার হাসনপুর গ্রামের মৃত টিকেন্দ্র সরকারের ছেলে দিলীপ সরকার ঐতিহ্যবাহী ওই বাড়িটির অস্থাবর সম্পত্তি (ঘর, গাছপালা) বিক্রি করে তছরুপ করে আসছেন।

সাজিউড়া সাগুলী গ্রাম সহ এলাকাবাসী ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কিছুদিন আগে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তাদের দাবী, এই বাড়িটির কাচরী, মন্দির ও বসতঘর সহ প্রায় ২৮টি ঘর ছিল। বসতঘর, কাচারীঘর ও মন্দির ছাড়া এই বাড়ির সব ঘর কালো বাজারে বিক্রি করে আত্মসাত করে আসছে দিলীপ সরকার। দিলীপ সরকার নিজেকে নলিনী রঞ্জন সরকারের ভাগ্নের দিকে নাতি বলে দাবী করেন।

এ বিষয়ে সাজিউড়া গ্রামের দেবমন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই বিশ্বাস ও সাধারন সম্পাদক চপল সরকার জানান, নলিনী রঞ্জন সরকারের কোন বোনই ছিল না। বোন না থাকলে ভাগ্নে ভাগ্নী কিভাবে হয় তা আমাদের জানা নেই। আমরা এই বাড়িটির ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানাই। ওই গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার বিজয় বিশ্বাস ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি রহিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, একটি বিশেষ মহলের যোগসাজসে এই বাড়িটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী দিলীপ সরকার প্রায় কোটি টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পত্তি ও মূল্যবান গাছপালা বিক্রি করে সমুদয় টাকা তছরুপ করেছে।

তারা বলেন, গত কয়েক বছর আগে চিরাং ইউনিয়ন ভ‚মি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাতের একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় দিলীপ সরকার কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি পায়। পরে অদৃশ্য কারনে মামলার প্রক্রিয়াটি থেমে যায়। গত কয়েকদিন আগে এলাকাবাসীর ও দিলীপ সরকারের একটি অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করেন কেন্দুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ও কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। এলাকার নতুন প্রজন্মের দাবী ওই বাড়িটিতে নলিনী রঞ্জন সরকার নামে একটি পার্ক করার।

এতে সামাজিক পরিবেশও সুন্দর হবে, সেই সঙ্গে সরকারেরও মোটা অংকের রাজস্ব আদায় হবে। সম্প্রতি নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল ঐতিহ্যবাহী ওই বাড়িটির অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলামকে পরামর্শ দেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোছাঃ শিরিন সুলতানা বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে বিস্তাড়িত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমাকে চিঠি দিয়েছেন।

খুব তাড়াতাড়িই এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করব। চিরাং ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম জরিপ বলেন, আমার কাছ থেকে ওয়ারিশান সনদপত্র নিতে এসেছিলেন দিলীপ সরকার কিন্তু সত্যিকার ওয়ারিশান না হওয়ায় আমি তাকে সনদপত্র দেইনি। এ ব্যাপারে দিলীপ সরকারের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় বণিক সমিতির সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীর মতবিনিময়

কেন্দুয়ায় অবিভক্ত বাংলার অর্থমন্ত্রীর কোটি টাকা মূল্যের পৈতৃক বাড়িটি রক্ষার দাবী এলাকাবাসীর

আপডেট : ০৭:২৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ঃ

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের সাজিউড়া গ্রামে অবস্থিত তৎকালীন অবিভক্ত বাংলার অর্থমন্ত্রী প্রয়াত নলিনী রঞ্জন সরকারের কোটি টাকা মূল্যের পৈতৃক বাড়িটি। ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটি সরকারের নানা অবহেলা ও অযতেœর কারনে অস্থাবর সম্পত্তি তছরুপ হয়ে আজ ধংসের পথে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি এই বাড়িটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী মদন উপজেলার হাসনপুর গ্রামের মৃত টিকেন্দ্র সরকারের ছেলে দিলীপ সরকার ঐতিহ্যবাহী ওই বাড়িটির অস্থাবর সম্পত্তি (ঘর, গাছপালা) বিক্রি করে তছরুপ করে আসছেন।

সাজিউড়া সাগুলী গ্রাম সহ এলাকাবাসী ঐতিহ্যবাহী এই বাড়িটির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কিছুদিন আগে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। তাদের দাবী, এই বাড়িটির কাচরী, মন্দির ও বসতঘর সহ প্রায় ২৮টি ঘর ছিল। বসতঘর, কাচারীঘর ও মন্দির ছাড়া এই বাড়ির সব ঘর কালো বাজারে বিক্রি করে আত্মসাত করে আসছে দিলীপ সরকার। দিলীপ সরকার নিজেকে নলিনী রঞ্জন সরকারের ভাগ্নের দিকে নাতি বলে দাবী করেন।

এ বিষয়ে সাজিউড়া গ্রামের দেবমন্দির কমিটির সভাপতি নিতাই বিশ্বাস ও সাধারন সম্পাদক চপল সরকার জানান, নলিনী রঞ্জন সরকারের কোন বোনই ছিল না। বোন না থাকলে ভাগ্নে ভাগ্নী কিভাবে হয় তা আমাদের জানা নেই। আমরা এই বাড়িটির ঐতিহ্য রক্ষার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবী জানাই। ওই গ্রামের সাবেক ইউপি মেম্বার বিজয় বিশ্বাস ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি রহিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, একটি বিশেষ মহলের যোগসাজসে এই বাড়িটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী দিলীপ সরকার প্রায় কোটি টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পত্তি ও মূল্যবান গাছপালা বিক্রি করে সমুদয় টাকা তছরুপ করেছে।

তারা বলেন, গত কয়েক বছর আগে চিরাং ইউনিয়ন ভ‚মি সহকারী কর্মকর্তা বাদী হয়ে কেন্দুয়া থানায় অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাতের একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় দিলীপ সরকার কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্তি পায়। পরে অদৃশ্য কারনে মামলার প্রক্রিয়াটি থেমে যায়। গত কয়েকদিন আগে এলাকাবাসীর ও দিলীপ সরকারের একটি অভিযোগ সরেজমিন তদন্ত করেন কেন্দুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান ও কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। এলাকার নতুন প্রজন্মের দাবী ওই বাড়িটিতে নলিনী রঞ্জন সরকার নামে একটি পার্ক করার।

এতে সামাজিক পরিবেশও সুন্দর হবে, সেই সঙ্গে সরকারেরও মোটা অংকের রাজস্ব আদায় হবে। সম্প্রতি নেত্রকোনা-৩ আসনের এম.পি অসীম কুমার উকিল ঐতিহ্যবাহী ওই বাড়িটির অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলামকে পরামর্শ দেন। এলাকাবাসীর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মোছাঃ শিরিন সুলতানা বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে বিস্তাড়িত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আমাকে চিঠি দিয়েছেন।

খুব তাড়াতাড়িই এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করব। চিরাং ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আলম জরিপ বলেন, আমার কাছ থেকে ওয়ারিশান সনদপত্র নিতে এসেছিলেন দিলীপ সরকার কিন্তু সত্যিকার ওয়ারিশান না হওয়ায় আমি তাকে সনদপত্র দেইনি। এ ব্যাপারে দিলীপ সরকারের সঙ্গে যোগযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।