মৌলভীবাজার, শ্রীমঙ্গল :
ফিসারির নামে শ্রীমঙ্গলে হাইল হাওর দখল হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া চারপাশের চা ও লেবু বাগানে ব্যবহার করা কীটনাশকে মারা যাচ্ছে মাছসহ হাওরটির জলজ প্রাণী। এতে চরম হুমকির মুখে পড়েছে হাওরের জীববৈচিত্র্য।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ভূমি অফিসসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই দখল ও দূষণ চলছে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে হাওরের জীববৈচিত্র্য একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে, বন্ধ হয়ে যাবে হাওরকেন্দ্রিক কয়েক হাজার দরিদ্র মানুষের জীবন জীবিকা।
উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাওরটির মোট আয়তন ১০ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে ৪ হাজার হেক্টর প্লাবন ভূমি, ৪ হাজার ৫১৭ হেক্টর হাওর, এক হাজার ৪০০ হেক্টর বিল, ৪০ হেক্টর খাল ও ৫০ হেক্টর নদী।
স্থানীয় মৎস্য অফিস জানায়, হাইল হাওর মৎস্যসম্পদে পরিপূর্ণ জলাভূমি। এখানে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে কয়েক হাজার মানুষ। হাইল হাওরে আগে ৯৮ প্রজাতির মাছের আবাস থাকলেও বর্তমানে ২১ প্রজাতির মাছ পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আরও ১১ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায়।
এই হাওরে শীত মৌসুমে হাইল হাওরে ২০ হাজারের বেশি দেশীয় এবং অতিথি পাখির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে হাইল হাওরের বড় একটি অংশ দখল করে ফেলেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। মাটির পাড় তুলে শত শত একর জুড়ে নিশ্চিত করেছে তাদের দখলদারিত্ব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হাওরের ভাড়াউড়া অংশে শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়ের দখলে রয়েছে সাত শত একর, রাজা মিয়ার দখলে পাঁচ হাজার একর, হুজুর হামজা মিয়ার দখলে রয়েছে আট শত একর। এমন করে হাইল হাওরজুড়ে রয়েছে সাত শত দখলদার, প্রত্যেকে গড়ে তুলেছে কথিত বাণিজ্যিক ফিশারিজ।