নেত্রকোনা ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শীতের সকালে কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার নারীরা

পৌষের শুরুতেই হটাৎ করে সারা দেশে শীত জেকে বসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়ার গ্রামাঞ্চলের নারীরা। কুমড়োর বড়ি তৈরি ও তা বাজারে বিক্রয় করে কুষ্টিয়াতে এখন অনেক পরিবার স্বাবলম্বীও হচ্ছেন । সাত সকলে কুষ্টিয়ার কবুরহাট, জগতি, আহাম্মদপুর, শিমুলিয়াসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে বেশ ব্যস্ত গ্রামীন নারীরা। যারা এই কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন তাদের মধ্যে কেউ বা তৈরী করছেন বাজারে বিক্রির জন্য আবার অনেকেই বাজারের কুমড়ো বড়ি পছন্দ নয় তাই বিভিন্ন খাবারের সাথে বারতি সুস্বাদু আনতে নিজ হাতে কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন এবং তা বছর জুরেই খাবেন।

কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত কয়েক জন গ্রামীণ মহিলারা জানান, আগের দিনে মেয়েরা ডাউল শিল পাটায় বেটে সারা রাত ভর গুড়া করে তা সারা দিন রোদ্রে শুকানোর পর কুমড়ো বড়ি তৈরি করতো। এখন আর রাতভর শিলপাটায় ডাউল গুরো করতে হয়না। ডাউল গুরো করার মেশিনের সাহায্যে ঘন্টার মধ্যই অনেক ডাউল গুরো করে বড়ি তৈরি করা যায়। তবে একে বারে পরিশ্রম কমও নয়। এই বড়ি সারা বছর তৈরী করা গেলেও এটা শীতকালে বেশী তৈরী হয় এবং শীত মৌসুমের তৈরী বড়ি বেশী সুস্বাদু হয়। যে কারনে এই সময়ে বিক্রয়কারীসহ নিজ বাড়িতে খাওয়ার জন্য এই কুমড়ো তৈরী করেন অনেকেই এমনটি বলেন কবুর হাটের এক গৃহবধু আঞ্জুমান আরা খাতুন।

জানাগেল কিভাবে কুমড়ো বড়ি তৈরী করতে হয়- উপকরণ: মাষকলাইয়ের ডাল ২ কেজি (খোসা ছাড়া )। চালকুমড়া বড় ২ টি ।
পদ্ধতি: যদি বড়ি রোদে শুকিয়ে নেয়ার জন্য বড় চাটাই বা পাটি এবং পাতলা সুতি কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হবে । ওভেনে শুকাতে চাইলে এগুলোর দরকার নেই। তবে ওভেনের চেয়ে রোদে শুকানো বড়ি সুস্বাদু বেশী হবে বলে রোদে শুকানোই ভাল।
বড়ি তৈরীর আগের দিন বিকালে ডাল ঝেড়ে, ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সন্ধ্যায় চালকুমড়া ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে মিহিকুচি করে রাখতে হবে। এবার কুমড়া খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, যেন এর টক ভাব না থাকে।

ধোয়া হলে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে । এতে কুমড়ার সব পানি বেরিয়ে ঝরঝরে হয়ে যাবে অথবা কাপড়ে বেঁধে ভাড়ি কিছু দিয়ে চাপা দিয়ে রাখলেও পানি বেরিয়ে যাবে। পরের দিন ভোরে ডালের পানি ছেঁকে, শিল-পাটায় বেটে নিতে হবে অথবা বেøন্ডারে বেøন্ড করে নিতে হবে । যেন ডাল খুব মিহি হয়ে যায়। এবার ডালের সঙ্গে কুমড়া মেশাতে হবে । খুব ভালো করে হাত দিয়ে মিশাতে হবে যতক্ষণ না ডাল-কুমড়ার মিশ্রণ হালকা হয়।

তারপর একটি বাটিতে পানি নিয়ে তাতে বড়ির আকারে একটু ফেলে পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি বড়ি ভেসে উঠছে এবং পানিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে না তাহলে বুঝতে হবে আর ফেটতে হবে না। আর ডুবে গেলে কিংবা ছড়িয়ে গেলে আরও করে মাখাতে হবে। চড়া রোদে চাটি বা কাপড় বিছিয়ে বড়ির আকার দিয়ে একটু ফাঁকা ফাঁকা করে বসিয়ে শুকাতে রাখতে হবে। বড়ি তিন থেকে চার দিন এভাবে রোদে শুকানোর পর শেষ দিন বড়ি উঠিয়ে কাপড়ে ঝুলিয়ে শুকানোই ভাল।

ভালোভাবে বড়ি শুকানো হলে পরিষ্কার এয়ারটাইট বয়ামে ভরে রাখলে প্রয়োজনের সারা বছর রান্নায় ব্যবহার করা যাবে। তবে পৌষ-মাঘ মাসে নতুন ডাল ও গাছপাকা চালকুমড়া দিয়ে বড়ি ভালো হয়। গরমের সময় কিংবা চালকুমড়া পুরানো হলে কিংবা গাছপাকা বাত্তি না হলে বড়ি টক হয় এবং ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া সে বড়ি গুলো বেশী দিন রাখা সম্ভব হয় না।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমার বর্তমান ঠিকানা স্টেশন রোড, পূর্বধলা, নেত্রকোনা। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমার ধর্ম ইসলাম। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। প্রয়োজনে: ০১৭১৩৫৭৩৫০২

দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

শীতের সকালে কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত কুষ্টিয়ার নারীরা

আপডেট : ০২:২০:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

পৌষের শুরুতেই হটাৎ করে সারা দেশে শীত জেকে বসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কুষ্টিয়ার গ্রামাঞ্চলের নারীরা। কুমড়োর বড়ি তৈরি ও তা বাজারে বিক্রয় করে কুষ্টিয়াতে এখন অনেক পরিবার স্বাবলম্বীও হচ্ছেন । সাত সকলে কুষ্টিয়ার কবুরহাট, জগতি, আহাম্মদপুর, শিমুলিয়াসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় কুমড়ো বড়ি তৈরি করতে বেশ ব্যস্ত গ্রামীন নারীরা। যারা এই কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন তাদের মধ্যে কেউ বা তৈরী করছেন বাজারে বিক্রির জন্য আবার অনেকেই বাজারের কুমড়ো বড়ি পছন্দ নয় তাই বিভিন্ন খাবারের সাথে বারতি সুস্বাদু আনতে নিজ হাতে কুমড়ো বড়ি তৈরী করছেন এবং তা বছর জুরেই খাবেন।

কুমড়ো বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত কয়েক জন গ্রামীণ মহিলারা জানান, আগের দিনে মেয়েরা ডাউল শিল পাটায় বেটে সারা রাত ভর গুড়া করে তা সারা দিন রোদ্রে শুকানোর পর কুমড়ো বড়ি তৈরি করতো। এখন আর রাতভর শিলপাটায় ডাউল গুরো করতে হয়না। ডাউল গুরো করার মেশিনের সাহায্যে ঘন্টার মধ্যই অনেক ডাউল গুরো করে বড়ি তৈরি করা যায়। তবে একে বারে পরিশ্রম কমও নয়। এই বড়ি সারা বছর তৈরী করা গেলেও এটা শীতকালে বেশী তৈরী হয় এবং শীত মৌসুমের তৈরী বড়ি বেশী সুস্বাদু হয়। যে কারনে এই সময়ে বিক্রয়কারীসহ নিজ বাড়িতে খাওয়ার জন্য এই কুমড়ো তৈরী করেন অনেকেই এমনটি বলেন কবুর হাটের এক গৃহবধু আঞ্জুমান আরা খাতুন।

জানাগেল কিভাবে কুমড়ো বড়ি তৈরী করতে হয়- উপকরণ: মাষকলাইয়ের ডাল ২ কেজি (খোসা ছাড়া )। চালকুমড়া বড় ২ টি ।
পদ্ধতি: যদি বড়ি রোদে শুকিয়ে নেয়ার জন্য বড় চাটাই বা পাটি এবং পাতলা সুতি কাপড় ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হবে । ওভেনে শুকাতে চাইলে এগুলোর দরকার নেই। তবে ওভেনের চেয়ে রোদে শুকানো বড়ি সুস্বাদু বেশী হবে বলে রোদে শুকানোই ভাল।
বড়ি তৈরীর আগের দিন বিকালে ডাল ঝেড়ে, ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। সন্ধ্যায় চালকুমড়া ছিলে ভেতরের নরম অংশ ফেলে মিহিকুচি করে রাখতে হবে। এবার কুমড়া খুব ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে, যেন এর টক ভাব না থাকে।

ধোয়া হলে পরিষ্কার পাতলা কাপড়ে বেঁধে সারারাত ঝুলিয়ে রাখতে হবে । এতে কুমড়ার সব পানি বেরিয়ে ঝরঝরে হয়ে যাবে অথবা কাপড়ে বেঁধে ভাড়ি কিছু দিয়ে চাপা দিয়ে রাখলেও পানি বেরিয়ে যাবে। পরের দিন ভোরে ডালের পানি ছেঁকে, শিল-পাটায় বেটে নিতে হবে অথবা বেøন্ডারে বেøন্ড করে নিতে হবে । যেন ডাল খুব মিহি হয়ে যায়। এবার ডালের সঙ্গে কুমড়া মেশাতে হবে । খুব ভালো করে হাত দিয়ে মিশাতে হবে যতক্ষণ না ডাল-কুমড়ার মিশ্রণ হালকা হয়।

তারপর একটি বাটিতে পানি নিয়ে তাতে বড়ির আকারে একটু ফেলে পরীক্ষা করে নিতে হবে। যদি বড়ি ভেসে উঠছে এবং পানিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে না তাহলে বুঝতে হবে আর ফেটতে হবে না। আর ডুবে গেলে কিংবা ছড়িয়ে গেলে আরও করে মাখাতে হবে। চড়া রোদে চাটি বা কাপড় বিছিয়ে বড়ির আকার দিয়ে একটু ফাঁকা ফাঁকা করে বসিয়ে শুকাতে রাখতে হবে। বড়ি তিন থেকে চার দিন এভাবে রোদে শুকানোর পর শেষ দিন বড়ি উঠিয়ে কাপড়ে ঝুলিয়ে শুকানোই ভাল।

ভালোভাবে বড়ি শুকানো হলে পরিষ্কার এয়ারটাইট বয়ামে ভরে রাখলে প্রয়োজনের সারা বছর রান্নায় ব্যবহার করা যাবে। তবে পৌষ-মাঘ মাসে নতুন ডাল ও গাছপাকা চালকুমড়া দিয়ে বড়ি ভালো হয়। গরমের সময় কিংবা চালকুমড়া পুরানো হলে কিংবা গাছপাকা বাত্তি না হলে বড়ি টক হয় এবং ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া সে বড়ি গুলো বেশী দিন রাখা সম্ভব হয় না।