নেত্রকোনা ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মৃত্যুর ৯ মাস পর দেশে ফিরলো আব্দুর রহিমের লাশ

মৃত্যুর ৯ মাস পর সৌদি আরব থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুর রহিমের লাশ পৌঁছায় নিজ বাড়িতে। সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজন হারানোর কষ্টে আপনজনদের চোখের জল শুকিয়ে গেছে। শোকে তারা কাতর।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বড়বাজু পাথাইলকান্দি গ্রামের মৃত নসকর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম (৫২) প্রায় ১৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবের জেদ্দায় যান। কঠোর পরিশ্রম করে রোজগারের টাকা বাড়িতে নিয়মিত পাঠাতে থাকেন। তিনি কয়েক বছর পরপর দেশে আসতেন। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ৩ মেয়ে নিয়ে স্ত্রী লিলি বেগম স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছিলেন।

কিন্তু ২০১৯ সালের ১৭ মে সিলিন্ডার বিস্ফোরনে কর্মক্ষেত্রে আব্দুর রহিম মারা যান। পরিবারের সদস্যদের জীবনে নেমে আসে চরম অন্ধকার। একমাত্র ভরসার ব্যক্তিকে হারিয়ে স্ত্রী সন্তানদের আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়।

নিহত আব্দুর রহিমের মেয়ের জামাতা নাহিদ সরকার বলেন মারা যাওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস অপেক্ষার পর আমরা ওনার লাশ ফিরে পেয়েছি। তিনি যেখানে কাজ করতেন সেখান থেকে কোন আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা পাই নাই। তদুপরি লাশ ফিরে পেতে দূতাবাসসহ বিভিন্নস্থানে যোগাযোগ করতে আমাদের ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

আব্দুর রহিমের বড় মেয়ে সাবিনা আক্তার পপি গাজীপুরের একটি গামের্ন্টস কারখানায় কাজ করেন, মেঝ মেয়ে পলি খাতুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাশ করেছেন এবং ছোট মেয়ে গৃহিনী। পুরো পরিবারের দেখভাল এবং দায়িত্ব ছিল তার উপরই।

লাশ ফিরে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বিলাপ করতে করতে বলছেন এমন ভাগ্য যেন আর কারো কপালে না জুটে। কান্না আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি সরকারের মাধ্যমে যদি কিছুটা আর্থিক সাহায্য কিংবা ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেত , তাহলে তাদের অনেক উপকার হতো।

এ বিষয়ে কালিহাতীর সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন পরিবারের আর্থিক দূরাবস্থা ঘুচাতে কৃষক পরিবারের সন্তান আব্দুর রহিম সৌদি আরবে যান। মর্মান্তিকভাবে তিনি মারা যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা এখন দিশেহারা। সরকার কিংবা কর্মকালীন সৌদি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য পেলে পরিবারটা বাঁচতে পারবে। তিনি আরো বলেন স্থানীয় দেউপুর পশ্চিমপাড়া কবরস্থানে আব্দুর রহিমের লাশ দাফন করা হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। আমাদের প্রকাশনা “পূর্বকন্ঠ” স্বাধীনতার চেতনায় একটি নিরপেক্ষ জাতীয় অনলাইন । পাঠক আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনা। পূর্বকণ্ঠ কথা বলে বাঙালির আত্মপ্রত্যয়ী আহ্বান ও ত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতার। কথা বলে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে। ছড়িয়ে দিতে এ চেতনা দেশের প্রত্যেক কোণে কোণে। আমরা রাষ্ট্রের আইন কানুন, রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। দেশপ্রেম ও রাষ্ট্রীয় আইন বিরোধী এবং বাঙ্গালীর আবহমান কালের সামাজিক সহনশীলতার বিপক্ষে পূর্বকন্ঠ কখনো সংবাদ প্রকাশ করে না। আমরা সকল ধর্মমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, কোন ধর্মমত বা তাদের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে আমরা কিছু প্রকাশ করি না। আমাদের সকল প্রচেষ্টা পাঠকের সংবাদ চাহিদাকে কেন্দ্র করে। তাই পাঠকের যে কোনো মতামত আমরা সাদরে গ্রহন করব।
জনপ্রিয়

পূর্বধলায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিনের দাফন সম্পন্ন

মৃত্যুর ৯ মাস পর দেশে ফিরলো আব্দুর রহিমের লাশ

আপডেট : ০২:২৮:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০

মৃত্যুর ৯ মাস পর সৌদি আরব থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুর রহিমের লাশ পৌঁছায় নিজ বাড়িতে। সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজন হারানোর কষ্টে আপনজনদের চোখের জল শুকিয়ে গেছে। শোকে তারা কাতর।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বড়বাজু পাথাইলকান্দি গ্রামের মৃত নসকর আলীর ছেলে আব্দুর রহিম (৫২) প্রায় ১৭ বছর আগে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবের জেদ্দায় যান। কঠোর পরিশ্রম করে রোজগারের টাকা বাড়িতে নিয়মিত পাঠাতে থাকেন। তিনি কয়েক বছর পরপর দেশে আসতেন। সব কিছু ঠিকঠাকই চলছিল। ৩ মেয়ে নিয়ে স্ত্রী লিলি বেগম স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছিলেন।

কিন্তু ২০১৯ সালের ১৭ মে সিলিন্ডার বিস্ফোরনে কর্মক্ষেত্রে আব্দুর রহিম মারা যান। পরিবারের সদস্যদের জীবনে নেমে আসে চরম অন্ধকার। একমাত্র ভরসার ব্যক্তিকে হারিয়ে স্ত্রী সন্তানদের আকাশ ভেঙে পড়ে মাথায়।

নিহত আব্দুর রহিমের মেয়ের জামাতা নাহিদ সরকার বলেন মারা যাওয়ার দীর্ঘ ৯ মাস অপেক্ষার পর আমরা ওনার লাশ ফিরে পেয়েছি। তিনি যেখানে কাজ করতেন সেখান থেকে কোন আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা পাই নাই। তদুপরি লাশ ফিরে পেতে দূতাবাসসহ বিভিন্নস্থানে যোগাযোগ করতে আমাদের ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

আব্দুর রহিমের বড় মেয়ে সাবিনা আক্তার পপি গাজীপুরের একটি গামের্ন্টস কারখানায় কাজ করেন, মেঝ মেয়ে পলি খাতুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স পাশ করেছেন এবং ছোট মেয়ে গৃহিনী। পুরো পরিবারের দেখভাল এবং দায়িত্ব ছিল তার উপরই।

লাশ ফিরে পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বিলাপ করতে করতে বলছেন এমন ভাগ্য যেন আর কারো কপালে না জুটে। কান্না আহাজারিতে বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। তাদের দাবি সরকারের মাধ্যমে যদি কিছুটা আর্থিক সাহায্য কিংবা ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেত , তাহলে তাদের অনেক উপকার হতো।

এ বিষয়ে কালিহাতীর সল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলীম বলেন পরিবারের আর্থিক দূরাবস্থা ঘুচাতে কৃষক পরিবারের সন্তান আব্দুর রহিম সৌদি আরবে যান। মর্মান্তিকভাবে তিনি মারা যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা এখন দিশেহারা। সরকার কিংবা কর্মকালীন সৌদি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য পেলে পরিবারটা বাঁচতে পারবে। তিনি আরো বলেন স্থানীয় দেউপুর পশ্চিমপাড়া কবরস্থানে আব্দুর রহিমের লাশ দাফন করা হয়েছে।