মোতাহার আলম চৌধুরী,মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ঃ নেত্রকোনার মদনে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের । প্রতিদিন মদন-ঢাকা-চট্রগ্রাম ও সিলেট কর্মস্থলে ফেরা মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকার কারণে স্ট্যান্ড এলাকায় কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের নিকট থেকে এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ বাস মালিক-শ্রমিক যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
ঈদের সময় ঢাকা, চট্রগ্রাম ও সিলেট থেকে দুই-তিন গুণ ভাড়া বেশি দিয়ে স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে এসে এখন কর্মস্থলে যেতে তাদের ভাড়া গুনতে হচ্ছে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। ভাড়া বেশি দিয়েও পরিবহন স্বল্পতার কারণে কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারছেন না অনেকে। স্ট্যাডে এসে তাদের পরিবহন স্বল্পতার কারণে ৩-৪ ঘণ্টা করে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে।
অনেক যাত্রী চট্রগ্রাম,ঢাকা ও সিলেটের টিকিটের জন্য এসে প্রায় সারাদিন পরিবহনের জন্য অপেক্ষায় থেকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের সমস্যা হয়েছে বেশি। তাদের ধারণা ছিল, কর্মস্থলে যেতেও হয়তো স্বাভাবিক ভাড়া লাগবে। কিন্তু মদনের বিভিন্ন স্ট্যান্ডে এসে দেখতে পান দ্বিগুণের চেয়ে ভাড়া বেশি দিয়েও পরিবহন পাচ্ছেন না তারা। অনেকে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে বাসের সিট না পেয়ে দাঁড়িয়ে মোড়ায় বসেও যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
মদন থেকে ঢাকা গামী বাসের ভাড়া ৩০০ টাকা, চট্রগ্রামের ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা,সিলেট ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা,নেত্রকোনা ৫০ টাকা জনপ্রতি নেওয়া হয় স্বাভাবিক সময়ে। কিন্তু বৃহস্পতিবার থেকে পরিবহন স্বল্পতার কারণে বাস মালিক-শ্রমিকরা জনপ্রতি মদন -ঢাকা ৫০০ টাকা,মদন-চট্রগ্রাম ১০০০ টাকা,মদন-সিলেট ৫০০ টাকা,মদন-নেত্রকোনা ৭০ টাকা করে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করছেন। এ নিয়ে বাস শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বাকবিতন্ডা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পরিবহনেও একইভাবে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন ঈদ পূর্ব বাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সাথে পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক ভাড়া নেয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করলেও তারা কোন কর্ণপাত করছেন না। বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওয়ালীউল হাসান বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার পরিদর্শন করে অতিরিক্ত ভাড়া নিতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া বন্ধ হচ্ছে না। একই কায়দায় বিভিন্ন সড়কের অটো- সিএনজি , রিক্সা ও হোন্ডায় অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।
পুরাতন থানা মোড় স্ট্যান্ডের নাইট কোচের যাত্রী গার্মেন্টস কর্মী মামুন মিয়া, হাওলাপুরী বাসের যাত্রী রুক্তন মিয়া,সাবাহ্ বাসের যাত্রী সুমন মিয়া,শাপলা বাস যাত্রী ইয়াছমিন,মাহমুদা,রোকসানা আক্তার,মুহাম্মদ আলী জানান, আমরা সব সময় মদন থেকে চট্রগ্রামে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে যাই। এখন ১০০০ টাকা ছাড়া টিকিট দিচ্ছে না। আমরা সময়ের স্বল্পতার কারনে নিরুপায় হয়ে বেশি টাকা দিয়েই যাচ্ছি।
সিলেট ও চট্রগ্রাম গামী বাস কাউন্টারের টিকিট মাষ্টার ফুরকান মিয়া জানান,মদন-চট্রগ্রামের ভাড়া ১০০০ টাকা,সিলেটের ভাড়া ৫০০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। বাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাজু ভূঁইয়া বাসের অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ওয়ালীউল হাসান জানান,শুক্রবার সকালে সব পরিবহন সংগঠনের নেতাদের অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে আমি নিষেধ করেছি। বেশি ভাড়া আদায় করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।