মোতাহার আলম চৌধুরী , মদন (নেত্রকোনা) ঃ
জনবল সংকট ও জরাজীর্ণ অফিসগৃহ থাকায় বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি । অতি পুরোনো জরাজীর্ণ গৃহে চিকিৎসা দিতে ও নিতে আসা লোকজন সর্বক্ষণ থাকে আতঙ্কে। ডাক্তারসহ বিভিন্ন পদে জনবল সংকট থাকায় এর সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নারী, শিশুসহ সর্ব শ্রেনির লোকজন। বিশেষ করে গর্ভবতী মায়েরা প্রসব সেবা না পেয়ে নানা দূর্ভোগে ভুগছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন পূর্বে নির্মিত এই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সংস্কার না করায় এর অধিকাংশ দরজা-জানালা নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি এলে ঘরে পানি পরে ভিতরে থাকা যায় না। পাশের সিংহের বাজারের ময়লা- আর্বজনা এই কেন্দ্রের আশে পাশে ফেলায় ময়লা আর্বজনার স্তুপ থাকে। ফলে র্দূগন্ধে অফিসে বসে থাকা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এখানে ৪ টি পদ থাকলেও বর্তমানে একজন আয়া ও একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা কর্মরত আছেন। পরিবেশগত কারণ ও জনবল সংকটে প্রায় ৪০ হাজার জনবসতির এই কেন্দ্রের চিকিৎসা ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের গর্ভবতী নারীরা। তাদের উপজেলা সদর ও নেত্রকোনা আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে যা গরীর রোগীদের পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে ২ জন স্টাফ কর্মরত থাকলেও তারা নিয়মিত আসেন না।
বৃহস্পতিবার সরজমিনে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গেলে কর্মরত ও সেবা নিতে কাউকে পাওয়া যায়নি। দরজায় তালা ঝুলানো পাওয়া যায়। আশে পাশের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জরাজীর্ণ ভবনে কেহ চিকিৎসা নিতে আসে না এবং কর্মরতরাও নিয়মিত অফিস করেন না। এ এলাকার গর্ভবতী নারী ও শিশুদের নিয়ে অভিভাবক গণ খুবই দুশ্চিন্তা গ্রস্থ। তারা দ্রæত এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি সংস্কারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী রাজদেওতলা গ্রামের গর্ভবতী নারী লায়লা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোনো সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। এর আগে গর্ভবতী নারীরা এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে পরামর্শ ও চিকিৎসা সেবা নিত। এখন মদন উপজেলা সদর ও নেত্রকোনা জেলা সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে যাতায়াত ব্যয় হচ্ছে অনেক টাকা। যা গরীব রোগীদের পক্ষে সম্ভব না। এখানে দু-জন স্টাফ কর্মরত থাকলেও তারা নিয়মিত আসেন না।
রাজদেওতলা গ্রামের হাইউল পাঠান জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা সেবা না দেয়ায় ও সঠিক ভাবে দেখভাল না করায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ঝোপঝাড়ের জঙ্গল ও ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে।
উক্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মরত পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা রুনা আক্তার জানান,উক্ত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা দেবার পরিবেশ না থাকায় এবং সিংহের বাজারের ময়লা-আর্বজনা নিষেধ করার পরেও নিয়মিত ফেলায় স্থানটি ডাস্টবিনে পরিণত হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই ঘরের ভিতর পানি পড়ে। আমি মাঝে মধ্যে এখানে আসি। এ ব্যাপরে কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডঃ মোঃ আব্দুল করিম সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে । ৪ টি পদের মধ্যে কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল অফিসারের পদ শূন্য রয়েছে।