কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন, নেত্রকোনা :
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে অনুমোদিত ১০০ শয্যার চিকিৎসা চলছে কোন রকমে। তার ওপর রয়েছে ডাক্তারের সংকট। এরই মধ্যে ডেঙ্গুর প্রভাবে বেড়েছে রোগীর অতিরিক্ত চাপ। জ্বর হলেই সন্দেহজনক ভাবে রোগীরা ছুটে আসছেন হাসপাতালে।
শনিবার (২৪ আগষ্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা যায় রোগীর ঢল নামে আউটডোরে। কিন্তু মাত্র কর্মরত বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে ৯ জন চিকিৎসক দিচ্ছেন প্রায় এক হাজার রোগীর সেবা। তার মধ্যে আবাসিক মেডিকেল অফিসার একরামুল হাসান রয়েছেন দেশের বাইরে সরকারি সফরে।
হাসপাাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যার জনবলে ২২টি ডাক্তার পদের বিপরীতে ১৭ জন রয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জন শিফটিংয়ে।
শনিবার সকাল থেকে আউটডোরে তিন শতাধিক, ইমারেজেন্সীতে চার শতাধিক ও ভর্তি রয়েছে ২৫০ জনের উপরে রোগী। যে কারণে প্রতিদিনের রোগীর চাপই বেশি। তার উপরে রয়েছে ডেঙ্গুর প্রভাব। এ পর্যন্ত মোট ৪৪ জন ভর্তিসহ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন মোট ৮৬ জন। এর মধ্যে শনিবারে রয়েছেন দুজন রয়েছেন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি।
এছাড়া শিশুসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষাও হচ্ছে না হাসপাতালটিতে। ভোগান্তিতে রয়েছে রোগীরা। শিশু বিশেষজ্ঞ না থাকায় ময়মনসিংহে প্রেরণ করতে হয় নবজাতকসহ শিশুদের। এর উপরে আলট্রাসনোগ্রাম বন্ধ বছরের পর বছর। এক্সরে টেকনিশিয়ান থাকলেও রেডিওলজিস্ট নেই। ফলে রিপোর্ট দেয়া যায় না রোগীদের। নেই এনেস্থেসিয়া। হাওলাত করে সিজারিয়ান কাজ সম্পন্ন হচ্ছে।
এমতাবস্থায় হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত স্বল্প সংখ্যক চিকিৎসকদের। তারপরও তারা চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার কল্যাণী রানী ঘোষ।
তিনি অরো জানান, এমনিতে প্রতিদিনের রোগীর চাপই অনেক। তার ওপর হাসপাতালে ৫০ শয্যারও জনবল নেই সেখানে ১০০ শয্যার রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এর ওপর ডেঙ্গু আতংঙ্কে রোগীর স্রোত হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সকল সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. তাজুল ইসলাম খান বলেন, আরএমও ট্রেনিং শেষ করেই চলে আসতেছেন। হাসপাতালে চিকিৎসার মান উন্নত হওয়ায় রোগীর চাপ বেড়েছে। আর ডাক্তার সংকটতো নিত্যদিনের সমস্যা।
তারপরও আমরা সবাই চেষ্টা করে যাচ্ছি ও উর্ধ্বতন বরাবারে এ সমস্যার কথা জানিয়েছি। আগামী মাসে একটি নিয়োগ হওয়ার কথা রয়েছে। এটি হলে কিছুটা দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে তিনি জানান।