নেত্রকোনা প্রতিনিধি ঃ
দেড়যুগ আগে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে গুলিতে নিহত নেত্রকোনা জেলা যুবলীগ সভাপতি স্বপন জোয়ারদার হত্যা মামলার বাদি তার বড় ভাই রঞ্জিত জোয়ারদার (৯০) মারা গেছেন।মৃত্যুকালে তিনি দুই মেয়ে, নাতি-নাতনী ও আত্মীয় স্বজনসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরের দিকে জেলার পূর্বধলা উপজেলার কালডোয়ার গ্রামের নিজ বাড়িতে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যান তিনি।
তার মৃত্যুর খবর শুনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য জাকিয়া পারভীন খানম মনি, হাবিবা রহমান খান শেফালী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় ও পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন রঞ্জিত জোয়ারদারকে শেষ বারের মতো দেখতে তার বাড়িতে যান। এসময় তারা শোক প্রকাশ করে রঞ্জিত জোয়ারদারের পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেন।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রশান্ত কুমার রায় জানান, স্বপন জোয়ারদারকে হত্যার ১৮ বছর পেরিয়ে গেল। এখনও মামলার বিচার হয়নি। বাদি বিচার দেখে যেতে পারলেননা। রাজনৈতিক কারণেই স্বপন জোয়ারদারকে তৎকালীন বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের লোকজন তাকে শহরের প্রাণকেন্দ্র তেরীবাজার মোড়ে গুলি করে হত্যা করে। মামলাটির দ্রুত বিচার শেষ করে ঘাতকদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
হত্যার এক দশক পর ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী স্বপন জোয়ারদার হত্যা মামলায় পাঁচজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ইন্সপেক্টর খন্দকার ফজলে রহিম জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করা হয় বলে জানান সি আইডি ইন্সপেক্টর খন্দকার ফজলে রহিম।
সে সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অভিযুক্তরা হলেন জেলার আটপাড়া উপজেলার মোরশেদ হাবিব ভূইয়া জুয়েল, মো. মাজহারুল ইসলাম মামুন, মো. সাইফুল আলম সোহেল, দেলোয়ার জাহান মোহাম্মদ হাসান বিন শফিক ওরফে সোহাগ ও সদর উপজেলার বালি গ্রামের মাসুদ রানা লিটন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০১ সালের ২৮ নভেম্বর শহরের তেরীবাজার মোড়ে সৈয়দ ম্যানসনের কাছে জেলা যুবলীগ সভাপতি স্বপন জোয়ারদারকে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের জুয়েল, সুহেল, মামুন, লিটন ও এটিএম মোস্তফা চুন্নুসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরো সাত জনকে আসামি করে নেত্রকোণা থানায় মামলা করেন স্বপনের বড় ভাই রঞ্জিত জোয়ারদার।
বাদির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে থানা থেকে মামলাটি প্রথমে সিআইডি ও পরে ডিবিতে স্থানান্তরিত হয়। তদন্ত শেষে দুইটি সংস্থাই মামলাটির চূড়ান্ত রিপোর্ট দিলে বাদী তার বিরুদ্ধে নারাজি দেন। পরে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য আবারো সিআইডিতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
মামলাটির অগ্রগতি জানতে চাইলে নেত্রকোনা জেলা আদালদের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)ইফতেখার উদ্দিন মাসুদ জানান, বর্তমানে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি ঢাকা থেকে এখন নেত্রকোণা জেলা অতিরিক্ত জজ আদালতে আর্গুমেন্ট পর্যায়ে বিচারাধীন আছে।