নেত্রকোনা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলে মানুষের ওজন মেপে জীবিকা নির্বাহ করছে ফজল মুন্সি

টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা না করে মানুষের ওজন মেপে জীবিকা নির্বাহ করছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ ফজল মুন্সি। একটি ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে এ বৃদ্ধকে প্রায়ই বসে থাকতে দেখা যায় শহরের বিভিন্ন অলি গোলীতে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তার দেখা মিলল টাঙ্গাইল শহরস্থ নিরালা মোড়ে। প্রতিদিনের ন্যায় ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে আছেন বৃদ্ধ ফজল মুন্সি।

পথচারীদের ডেকে বলছেন, বাবাজি ওজন মেপে যান। ওই সময়ের মধ্যে ৮০-৯০ টাকা উপার্জন হয়েছে। ফজল মুন্সির চেয়ে অনেক কম বয়সী ব্যক্তিরা বসে আছেন ভিক্ষার থলে নিয়ে। অথচ ৮০ বছরের ওই খেটে খাওয়া বৃদ্ধ বেছে নিয়েছেন ওজন মাপার পেশা।

বৃদ্ধ বয়সে এমন পেশা বেছে নেয়ার কাহিনী বললেন ফজল মুন্সি। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়ার চরে। ৪০ বছর আগে তার একমাত্র ছেলে মনিরুলকে জন্ম দেয়ার সময় মারা যায় তার স্ত্রী। সময় পেরিয়ে মনিরুলের ঘরেও এখন দুই সন্তান। ছেলের দিকে তাকিয়ে ফজল মুন্সি দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা তিনি কখনো ভাবেননি।

ছেলে ওয়ালটন কোম্পানিতে কাজ করলেও বাবার সঙ্গে তেমন সম্পর্ক না থাকায় ছেলে মনিরুল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় আলাদা বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

এদিকে বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় ফজল মুন্সির রাতের আশ্রয় পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়া সংলগ্ন কাগমারা এলাকার একটি মসজিদে। বয়সে বৃদ্ধ হলেও এখনও পায়নি বয়স্ক ভাতা কার্ড। এজন্য এ বয়সে বেছে নিয়েছেন ওজন মাপার পেশা।

এ বিষয়ে বৃদ্ধ ফজল মুন্সি বলেন, আমার এই বয়সে অন্য কোনো কাজ করার শক্তি বা সামর্থ নেই। তাই ১৫’শ টাকা দিয়ে ওজন মাপার যন্ত্রটি কিনেছি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ টাকা উপার্জন করি। তিন বেলা খাবার খাই হোটেলে। এতে ১’শ টাকা লেগে যায়। বাকি এক-দেড়শ টাকা ভবিষ্যতের জন্য প্রতিদিন সঞ্চয় করি। রাত হলে আশ্রই নেই মসজিদে।

যৌবনে স্ত্রী হারা, বৃদ্ধ বয়সে ছেলে থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এমনকি ৮০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা না পাওয়ায় ওজন মেপে উপার্জন করতে হচ্ছে এ বৃদ্ধকে। বয়স্ক ভাতার জন্য সরকারের প্রতি আকুতি জানান বৃদ্ধ ফজল মুন্সী।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমার বর্তমান ঠিকানা স্টেশন রোড, পূর্বধলা, নেত্রকোনা। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমার ধর্ম ইসলাম। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। প্রয়োজনে: ০১৭১৩৫৭৩৫০২

দুর্গাপুরে আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত

টাঙ্গাইলে মানুষের ওজন মেপে জীবিকা নির্বাহ করছে ফজল মুন্সি

আপডেট : ০৩:২০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা না করে মানুষের ওজন মেপে জীবিকা নির্বাহ করছেন ৮০ বছরের বৃদ্ধ ফজল মুন্সি। একটি ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে এ বৃদ্ধকে প্রায়ই বসে থাকতে দেখা যায় শহরের বিভিন্ন অলি গোলীতে। রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তার দেখা মিলল টাঙ্গাইল শহরস্থ নিরালা মোড়ে। প্রতিদিনের ন্যায় ওজন মাপার যন্ত্র নিয়ে বসে আছেন বৃদ্ধ ফজল মুন্সি।

পথচারীদের ডেকে বলছেন, বাবাজি ওজন মেপে যান। ওই সময়ের মধ্যে ৮০-৯০ টাকা উপার্জন হয়েছে। ফজল মুন্সির চেয়ে অনেক কম বয়সী ব্যক্তিরা বসে আছেন ভিক্ষার থলে নিয়ে। অথচ ৮০ বছরের ওই খেটে খাওয়া বৃদ্ধ বেছে নিয়েছেন ওজন মাপার পেশা।

বৃদ্ধ বয়সে এমন পেশা বেছে নেয়ার কাহিনী বললেন ফজল মুন্সি। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল সদর উপজেলার কাকুয়ার চরে। ৪০ বছর আগে তার একমাত্র ছেলে মনিরুলকে জন্ম দেয়ার সময় মারা যায় তার স্ত্রী। সময় পেরিয়ে মনিরুলের ঘরেও এখন দুই সন্তান। ছেলের দিকে তাকিয়ে ফজল মুন্সি দ্বিতীয় বিয়ে করার কথা তিনি কখনো ভাবেননি।

ছেলে ওয়ালটন কোম্পানিতে কাজ করলেও বাবার সঙ্গে তেমন সম্পর্ক না থাকায় ছেলে মনিরুল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরের আকুর টাকুর পাড়ায় আলাদা বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

এদিকে বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় ফজল মুন্সির রাতের আশ্রয় পশ্চিম আকুর টাকুর পাড়া সংলগ্ন কাগমারা এলাকার একটি মসজিদে। বয়সে বৃদ্ধ হলেও এখনও পায়নি বয়স্ক ভাতা কার্ড। এজন্য এ বয়সে বেছে নিয়েছেন ওজন মাপার পেশা।

এ বিষয়ে বৃদ্ধ ফজল মুন্সি বলেন, আমার এই বয়সে অন্য কোনো কাজ করার শক্তি বা সামর্থ নেই। তাই ১৫’শ টাকা দিয়ে ওজন মাপার যন্ত্রটি কিনেছি। প্রতিদিন দুই থেকে আড়াইশ টাকা উপার্জন করি। তিন বেলা খাবার খাই হোটেলে। এতে ১’শ টাকা লেগে যায়। বাকি এক-দেড়শ টাকা ভবিষ্যতের জন্য প্রতিদিন সঞ্চয় করি। রাত হলে আশ্রই নেই মসজিদে।

যৌবনে স্ত্রী হারা, বৃদ্ধ বয়সে ছেলে থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া এমনকি ৮০ বছর বয়সেও বয়স্ক ভাতা না পাওয়ায় ওজন মেপে উপার্জন করতে হচ্ছে এ বৃদ্ধকে। বয়স্ক ভাতার জন্য সরকারের প্রতি আকুতি জানান বৃদ্ধ ফজল মুন্সী।