শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলমাকান্দায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছে

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

কিশোর-কিশোরীদের ওই ক্লাবগুলোতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, যৌতুক প্রতিরোধ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বিয়ে নিবন্ধন, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য দূর করা, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে তাদেরকে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। যেন পরিবার, সমাজ ও সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এর প্রভাব ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের একটি করে বিদ্যালয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। ক্লাবগুলোতে একজন কবিতা আবৃত্তি শিক্ষক ও একজন সংগীত শিক্ষক রয়েছে। আর ওই আটটি বিদ্যালয়ের জন্য দুইজন জেন্ডার প্রমোটারও রয়েছেন। প্রতিটি ক্লাবে ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে আর ওই ক্লাবে সপ্তাহে দুইদিন কিশোর-কিশোরীদেরকে নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়ে থাকে।

উপজেলার খারনৈ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি রুম ২৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বাল্য বিয়ের কুফল সমন্ধে আলোচনা করছেন ওই ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার মিতালী রানি সাহা। ক্লাস শেষে তিনি বলেন, বাল্য বিয়ের কুফল, এলাকায় বাল্য বিয়ের আয়োজন হলে কি করণীয়, নিজ পরিবারে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করাসহ এমন একাধিক বিষয় নিয়ে আজ কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেছি।

খারনৈ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিক্ষা প্রদানের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হবে। আর এ ধরনের বিনোদনের ফলে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে তারা দূরে থাকবে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পপি রানি তালুকদার বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো প্রতিষ্ঠার ফলে তারা প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে আর ভালো কিছু করার প্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি তাদের মধ্যে দেশপ্রেমও জাগ্রত হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাব উপযোগী অনন্য একটি উদ্যোগ। কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সাফল্য নিশ্চিত করতে সব সময় পাশে আছে উপজেলা প্রশাসন। এ ক্লাবের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে, বাল্যবিয়ে মুক্ত কলমাকান্দা গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষণ করুন

প্রকাশক ও সম্পাদক সম্পর্কে-

আমি মো. শফিকুল আলম শাহীন। আমি একজন ওয়েব ডেভেলপার ও সাংবাদিক । আমি পূর্বকণ্ঠ অনলাইন প্রকাশনার সম্পাদক ও প্রকাশক। আমার বর্তমান ঠিকানা স্টেশন রোড, পূর্বধলা, নেত্রকোনা। আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক। আমার ধর্ম ইসলাম। আমি করতে, দেখতে এবং অভিজ্ঞতা করতে পছন্দ করি এমন অনেক কিছু আছে। আমি আইটি সেক্টর নিয়ে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট করতে পছন্দ করি। যেমন ওয়েব পেজ তৈরি করা, বিভিন্ন অ্যাপ তৈরি করা, অনলাইন রেডিও স্টেশন তৈরি করা, অনলাইন সংবাদপত্র তৈরি করা ইত্যাদি। প্রয়োজনে: ০১৭১৩৫৭৩৫০২

কলমাকান্দায় কিশোর-কিশোরী ক্লাব বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ভূমিকা রাখছে

আপডেট : ০৪:০২:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রত্যেকটিতে একটি করে কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা করে তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

কিশোর-কিশোরীদের ওই ক্লাবগুলোতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ, যৌতুক প্রতিরোধ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বিয়ে নিবন্ধন, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য দূর করা, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে তাদেরকে ধারণা দেওয়া হচ্ছে। যেন পরিবার, সমাজ ও সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এর প্রভাব ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটটি ইউনিয়নের একটি করে বিদ্যালয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব রয়েছে। ক্লাবগুলোতে একজন কবিতা আবৃত্তি শিক্ষক ও একজন সংগীত শিক্ষক রয়েছে। আর ওই আটটি বিদ্যালয়ের জন্য দুইজন জেন্ডার প্রমোটারও রয়েছেন। প্রতিটি ক্লাবে ৩০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে আর ওই ক্লাবে সপ্তাহে দুইদিন কিশোর-কিশোরীদেরকে নিয়ে ক্লাস নেওয়া হয়ে থাকে।

উপজেলার খারনৈ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের একটি রুম ২৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে বাল্য বিয়ের কুফল সমন্ধে আলোচনা করছেন ওই ক্লাবের জেন্ডার প্রমোটার মিতালী রানি সাহা। ক্লাস শেষে তিনি বলেন, বাল্য বিয়ের কুফল, এলাকায় বাল্য বিয়ের আয়োজন হলে কি করণীয়, নিজ পরিবারে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করাসহ এমন একাধিক বিষয় নিয়ে আজ কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গে কথা বলেছি।

খারনৈ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদা আক্তার বলেন, কিশোর-কিশোরীদের সঙ্গীত ও আবৃত্তি শিক্ষা প্রদানের মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগ সৃষ্টি হবে। আর এ ধরনের বিনোদনের ফলে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে তারা দূরে থাকবে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পপি রানি তালুকদার বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাবগুলো প্রতিষ্ঠার ফলে তারা প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে আর ভালো কিছু করার প্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি তাদের মধ্যে দেশপ্রেমও জাগ্রত হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, কিশোর-কিশোরী ক্লাব উপযোগী অনন্য একটি উদ্যোগ। কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সাফল্য নিশ্চিত করতে সব সময় পাশে আছে উপজেলা প্রশাসন। এ ক্লাবের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, নিজের অধিকার নিয়ে সচেতন হবে, বাল্যবিয়ে মুক্ত কলমাকান্দা গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।