মঙ্গলবার ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউপি নির্বাচনে শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের এক কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ

 |  আপডেট ৭:০৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২৮ আগস্ট ২০১৯ | প্রিন্ট  | 390

ইউপি নির্বাচনে শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের এক কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ

মো. আব্দুল বাতেন, শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি:

শেরপুরে শ্রীবরদী উপজেলার শ্রীবরদী সদর ইউনিয়নের নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচনি ফলাফল বাতিল করে পুন:নির্বাচনের আদেশ হয়েছে নির্বাচন আপিল ট্রাইব্যুনালে। নির্বাচনী আপিলেট ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক যুগ্ম ও জেলা দায়রা জজ মো. কামাল হোসেন এবং অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নমিতা দে গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের চুড়ান্ত রায়ে আপীল খারিজ করে নিন্ম আদালতের রায় বহাল রেখে ওই আদেশ জারি করেন। রায়ে নির্বাচন কমিশনকে ওই কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।


বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মাহবুবুল আলম রকীব রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নির্বাচনী মামলার ক্ষেত্রে এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক রায়। আদালত ভোটের ফলাফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে আপিল ‘ডিসমিস’ (খারিজ) করেছে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল। ফলে নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ফলাফল বাতিল করে চেয়ারম্যান পদে নিম্ন আদালতের পুন:ভোট গ্রহনের আদেশই বহাল থাকলো।

মামলা ও রায়ের নথি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ শ্রীবরদী সদর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ আব্দুল হালিম বিজয়ী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরাম হোসেন মন্টু পরাজিত হন। বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে বিবাদী করে ২০১৬ সালের ২৬ মে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আকরাম হোসেন মন্টু। মামলায় নয়আনী শ্রীবরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল হালিমের পক্ষে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, বিভিন্ন অনিয়ম ও তার (মন্টু’র) একজন নির্বাচনী এজেন্টকে অপহরণ করার অভিযোগ করা হয়। ওই কেন্দ্র ছাড়া অন্য ৮টি কেন্দ্রে মন্টু ৭১৬ ভোটে এগিয়ে ছিলেন।

ওই কেন্দ্রে এক হাজার ৪৫৩ ভোটের মধ্যে এক হাজার ৪২২ ভোট প্রদান দেখানো হয়। ভোটার অনুপস্থিত ছিলেন মাত্র ৩১ জন। আর ভোট প্রদানের হার শতকরা ৯৮ ভাগ। যা অস্বাভাবিক উলে­খ করে আদালতে ওই সময়কার ভোটার তালিকা অনুসারে ৫২ জন মৃত ব্যক্তি ছাড়াও নির্বাচনে দায়িত্বের জন্য ভোটের দিন ৭ জন এলাকার বাইরে এবং একজন বিদেশে অবস্থানের কারণে অনুপস্থিত থাকার প্রমাণ আদালতে দাখিল করা হয়। অর্থাৎ কারচুপি ও অনিয়মের মাধ্যমে আব্দুল হালিম বিজয়ী হয়েছিলেন বলে অভিযোগ করে প্রতিকার দাবি করা হয়।

সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ শেষে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেরপুরের সিনিয়র সহকারী জজ মো. শহিদুল ইসলাম ২০১৮ সালের ১২ জুন ওই কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করে পুন:নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়ে আদেশ দেন। রায়ের বিরুদ্ধে বিবাদী আব্দুল হালিম ওই বছরের ২৬ জুন নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। নির্বাচনী আপিল ট্রাইব্যুনালের দুই বিচারক গত ২২ আগস্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রেখে আপীল খারিজ করে আদেশ জারি করেন।

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের মামলার বাদী আকরাম হোসেন মন্টু বলেন, অন্য কেন্দ্রেগুলোতে আমি এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু প্রতিপক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে আমার বিজয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। যা আদালতের রায়ে প্রমাণ হয়েছে। আশাকরি এবার আমি ন্যয়বিচার পাবো। তিনি জানান, নতুন নির্বাচনে আশাকরি আমিই বিজয় হবো ইনশাআল­াহ।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন অফিসার শুকুর মাহমুদ মিঞার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আদালতের কোন নির্দেশ আমাদের কাছে আসেনি কিংবা নির্বাচন কমিশন থেকেও আমরা এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনা পাইনি। আদালতের রায়ের কপি পেলে নির্বাচন কমিশন আমাদের যেভাবে নির্দেশনা দেবে সেভাবেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
মোঃ শফিকুল আলম শাহীন প্রকাশক ও সম্পাদক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

স্টেশন রোড, পূর্বধলা, নেত্রকোনা।

হেল্প লাইনঃ ০১৭১৩৫৭৩৫০২

E-mail: info@purbakantho.com